আগামী কর্মসূচিতে সরকারের ক্ষমতা তছনছ হয়ে যাবে : মির্জা আব্বাস
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ১৫বছরে ঢাকাসহ সারাদেশে লাখ লাখ নেতাকর্মীদের জেলে নিয়েছেন, অবিচার অনাচার করেছেন। অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। এই জুলুম আর সইতে পারবো না। আমরা আজ জুলুমবাজদের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়িয়েছি, এই অত্যাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়িয়েছি।
তিনি বলেন, এই সরকারের পতনের লক্ষ্যে আজ সারাদেশ ফুসে ওঠেছে, সভাসমাবেশ চলছে। আজকেও যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় জনতার ঝড় ওঠেছে। এই ঝড় যদি শহরের দিকে, সচিবালয়ের দিকে রওনা দেয় তাহলে এ সরকার কি টিকে থাকতে পারবে? কেউ পারবে না। উপস্থিত কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা প্রস্তুতি নেন। এমন আন্দোলন কর্মসূচি আসবে যাতে এই অবৈধ সরকারের ক্ষমতা তছনছ হয়ে যাবে। এই অত্যাচারী লুটেরা সরকারকে আমরা দেখতে চাই না।
আজ শুক্রবার বিকেলে যাত্রাবাড়ী শহীদ ফারুক রোডে সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম।
আব্বাস বলেন, সরকার নানান সময় নানান কথা বলেন। এরা পোড়ামাটির নীতি অবলম্বন করছে। দেশের মানুষ পুড়ে ছারখার হয়ে গেলেও তাদের কিছু আছে যায় না। এরা মাটি চায়। গুম করে খুন করে জেলে ঢুকিয়ে, অত্যাচার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। অথচ, এখনো ক্ষমতার লোভ যায় না। কি আছে ক্ষমতায়! কোনো ভদ্রলোকের বিরুদ্ধে মিছিল হলে সে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। অথচ আজ সারাদেশ এ সরকারকে না বলে দিয়েছে, তারপরও ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। পৃথিবীর কোনো একনায়কতন্ত্র ও কর্তৃত্ববাদী শাসক টিকে থাকতে পারেনি, আওয়ামী লীগও পারবে না। পরবর্তীতে প্রত্যেককেই জনতার রেষানলে পড়তে হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ডিসি এসপিদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের কারো চাকরি থাকবে না। দলীয় কর্মীদের বলেন, বিএনপি এলে তোমরা কেউ বাঁচতে পারবে না। এগুলো বলে কর্মীদের ভয় দেখায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা হত্যা করে না। তারা কেনো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করবে। সবাই দেশের নাগরিক। তবে, ডিসি এসপি রাষ্ট্রের কর্মচারী। তারা কোনো অন্যায় করলে প্রচলিত আাইনে বিচার হবে, যেমনটা হয়েছে এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে। বিএনপি কাউকে হত্যা করার জন্য, চাকরি খাওয়ার জন্য, কাউকে প্রধানমন্ত্রী বানানো জন্য আন্দোলন করে না। আমরা দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছি।
তিনি বলেন, চাল-ডাল-চিনিসহ এমন কিছু নেই যার দাম বাড়েনি। দাম শুধু কমেছে মানুষের। ডেঙ্গুতে লোক মারা যাচ্ছে সরকারের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। করোনায় মানুষ মারা গেলো, সেখানে তারা ব্যবসা করলো। জনগণের প্রতি এদের কোনো মায়া-মমতা নেই।
আব্বাস বলেন, আজকে শতশত সাংবাদিক থাকলেও সত্য লেখার ক্ষমতা নেই। ৭৪ সালে যেভাবে চারটি বাদে সব গণমাধ্যম নিষিদ্ধ করেছিলো, আজ একই কায়দায় গণমাধ্যমের কন্ঠ রোধ করা হয়েছে। এরা আবার ক্ষমতায় আসলে সকল গণমাধ্যম বন্ধ করে দিবে। আজকে কারো স্বাধীনতা নেই। এ অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই আসুন সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করি।