আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নয়: জিএম কাদের
রোববার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনের জুবলী সড়কে মুন্সীগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, মুন্সিগঞ্জ: জাতীয় পার্র্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি হতে পারে; কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নয়। কারণ, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ করছে, তারা জনগণকে মুক্তি দেয়নি, জনগণের জন্য কিছুই করেনি। আমরা সুসময়ের জাতি। সেখানে একতাবদ্ধ জাতিকে বিভিন্নভাবে বিভাজন করে রেখেছে। আওয়ামী লীগ করলে সব ঠিক। আর না করলে বেঠিক। তারা একটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আরেকটি বিপক্ষের শক্তি বলে তরুণ প্রজন্মের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে রাখছে। রোববার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনের জুবলী সড়কে মুন্সীগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। কেউ মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, স্বাধীনতার বিপক্ষে কিছু লোক ছিল। বর্তমান মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় এমন মানুষের নাম রয়েছে, যাদের অনেকেইে মুক্তিযুদ্ধ করেননি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভয়াবহ দুরবস্থার মধ্যে আছে। বিশাল খাদের কিনারায় এসে পৌঁছেছে। যে কোনো সময় পড়ে যাবে। সরকার দেউলিয়া হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন লোকের হাতে দিয়ে খালি করে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগতন্ত্র বানিয়েছে তারা। রাজতন্ত্র মানে রাজার তন্ত্র। গণতন্ত্র মানে জনগণের সরকার, জনগণ সরকার গঠন করবে। এখন আওয়ামী লীগ রাজতন্ত্র কায়েম করেছে। উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে। পদ্মা সেতুর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেটা ৩২ হাজার কোটি টাকায় করেছে। নিজের টাকায় করেছেন, এটা বলে বেড়ায়। কিন্তু লোনের টাকায় পদ্মা ব্রিজ করেছে। তারা বিশ্বব্যাংকের টাকা নেয়নি। কারণ বিশ্বব্যাংকের টাকা চুরি করা যায় না।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন পার্টি মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু এমপি। তিনি বলেন, সংসদে এক নারী যিনি গান করে বেড়ান, তিনি বলেছিলেন, ‘লাগবিনি লাগবিনি বিদ্যুৎ। অহন বিদ্যুৎ বলে মাঝে মাঝে আসব, উকি দেব।’ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করে ফেলেছে তারা বলে। এখন সেই বিদ্যুৎ কই? নিজস্ব কিছু লোককে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ দিল। তাদের বসানোর শর্তই ছিল বিদ্যুৎ না দিতে পারলেও সমস্যা নেই। বসে বসে চুরি করবা। আজ জনগণ বিদ্যুৎ পায় না। ঘুস ছাড়া কোনো কাজ হয় না, চাকরি মেলে না। পুলিশ কনস্টেবলের চাকরিতে ১২ লাখ, আর পিওনের চাকরিতে ১৫ লাখ করে টাকা নেয়।
সভাপতির বক্তৃতায় শেখ মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ ৩২ বছরের দুর্নীতি, দুঃশাসন, অপশাসন, বিচারহীনতা, অর্থ পাচার, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির জন্য দায়ী যারা, তারা আন্দোলনের নামে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সাবেক সংসদ-সদস্য জামাল হোসেন, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মোহাম্মদ নোমান মিয়া, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মো. জানে আলম হাওলাদার, জাতীয় পার্টি নেতা আসাদুজ্জামান বাবুল, হান্নান খান, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, হাকিম হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন বাদল, ইসমাইল হোসেন রাহাত, আরিফুজ্জামান দিদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জাতীয় পার্টি নেতা জয়নাল আবেদীন, রফিক উল্লাহ সেলিম, হাবিবুর রহমান সেলিম, মোনায়েম হোসেন ভুঁইয়া, মো. আওলাদ হোসেন প্রমুখ।