অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় জনগণ দিশেহারা
বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার ভবনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতায় বাড়ছে আমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের দাম। এতে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অপতৎপরতা রোধে অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার বিকল্প নেই। এ ছাড়া বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি। বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার ভবনে আয়োজিত এক সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার সমন্বয় সুসংহতকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী এবং এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম। স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, স্থানীয় উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর অর্থনীতির সাফল্য অনেকাংশে নির্ভরশীল। বাজারের অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্যোক্তারা যেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তেমনই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মান হ্রাসের ফলে ভোক্তারা মানসম্মত পণ্য প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হন।
তিনি আরও বলেন, বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে বেসরকারি খাত এবং সরকারি সংস্থার মধ্যকার সমন্বয় একান্ত আবশ্যক। বিশেষত কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কার্যক্রমের সমন্বয় বিশেষভাবে প্রয়োজন।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, তেল-চিনি বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্থানীয় চাহিদা আমদানির মাধ্যমে মেটাতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য মূল্যের অস্থিতিশীলতার কারণে দেশীয় বাজারে পণ্যের মূল্যে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে স্থানীয় বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেও পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ভোক্তারা মূল্যস্ফীতির শিকার হচ্ছেন।
এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা, অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা, কর হার সমস্যা, দক্ষ মানবসম্পদের অভাব এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশের অনুপস্থিতির কারণে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এছাড়াও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, জ্বালানি, শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশের মূল্য বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কৃত্রিমভাবে পণ্যের প্রাপ্তির সংকট ও মূল্য বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, যারা ব্যবসা পরিচালনায় অসাধু পন্থা অবলম্বন করছেন, তাদেরকে শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সিটি করপোরেশনে সব সেবা দ্রুত সময়ে ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপস চালু করা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর সিটি করপোরেশন অঞ্চলে স্টার্ট আপ উদ্যোক্তাদের জন্য ‘পিও’ বক্স প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, বিএসটিআইর মহাপরিচালক আব্দুস সাত্তার, ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কোষাধ্যক্ষ ড. মঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার প্রমুখ।