অবশেষে ইউক্রেনের হাতে পৌঁছালো জার্মানির লিওপার্ড-২ ট্যাংক

ইউক্রেনে গেলো বহুল আলোচিত জার্মান ট্যাংক লিওপার্ড-২। সোমবার জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে

অবশেষে ইউক্রেনের হাতে পৌঁছালো জার্মানির লিওপার্ড-২ ট্যাংক
অবশেষে ইউক্রেনের হাতে পৌঁছালো জার্মানির লিওপার্ড-২ ট্যাংক

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ইউক্রেনে গেলো বহুল আলোচিত জার্মান ট্যাংক লিওপার্ড-২। সোমবার জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, লিওপার্ড ট্যাংকের প্রথম চালান ইতিমধ্যে ইউক্রেনে পৌঁছেছে। এতে রয়েছে ১৮টি অত্যাধুনিক ট্যাংক। ইউক্রেনীয় সেনারা যাতে এই ট্যাংক পরিচালনা করতে পারে সে জন্য তাদেরকে গত কয়েক মাসে প্রশিক্ষণ দিয়েছে জার্মানি। এরপরই এই অস্ত্র ইউক্রেনকে দেয়া হলো। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে জানানো হয়েছে, জার্মানির দেয়া এই ট্যাংক এখন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রধান সমরাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে। ইউক্রেন আগে থেকেই বলে আসছিল পশ্চিমাদের থেকে অত্যাধুনিক ট্যাংক পেলে তারা রাশিয়ার অগ্রসর থামিয়ে দিতে পারবে। জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াসও এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন যে, তিনি নিশ্চিত যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে ট্যাংকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। 

এদিকে শুধু জার্মানি নয়, বৃটেনও ইউক্রেনে ট্যাংক পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃটেন দুই ডজন চ্যালেঞ্জার-২ ট্যাংক দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তার প্রথম চালান এখন কিয়েভে পৌঁছেছে বলে একাধিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম প্রদানের আহ্বান জানিয়ে আসছিল ইউক্রেন। তবে প্রথমে ট্যাংক চাইলেও এখন যুদ্ধবিমানও চাইছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেন এখন বলছে, শুধু ট্যাংক দিয়ে যুদ্ধ জয় সম্ভব নয়। যুদ্ধ শুরুর পূর্বে ইউক্রেনের প্রায় ২৭০০ ট্যাংক ছিল। 
জার্মানির তৈরি লিওপার্ড ট্যাংক ভূমিতে যুদ্ধে ন্যাটো দেশগুলোর প্রধান ভরসা। আর অত্যাধুনিক লিওপার্ড-২ ট্যাংক আছে বিশ্বে দুই হাজারের মতো। শুরুতে অনিচ্ছুক থাকলেও, জানুয়ারি মাসে জার্মানি ইউক্রেনকে ট্যাংক পাঠাতে রাজি হয় জার্মানি। অন্য কোনো দেশ যদি ইউক্রেনকে ট্যাংক দেয় তাহলেও তারা বাধা দেবে না বলে জানায় বার্লিন। আধুনিক স্থলযুদ্ধে ট্যাংক এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ এটা শত্রুপক্ষের অবস্থান বা রক্ষণব্যুহ ভেদ করে সামনে এগোতে এবং জায়গা পুনর্দখল করতে বড় ভূমিকা রাখে। ট্যাংক চলার জন্য রাস্তা দরকার নেই, অসমান, উঁচু-নিচু, খানাখন্দে ভরা মাটির ওপর দিয়েও তা চলতে পারে। একই সাথে ট্যাংক হচ্ছে এক চলন্ত কামান, যা যুদ্ধরত বাহিনীকে শত্রুর প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেঙে সামনে এগুনোর এবং গোলাবর্ষণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

এখন লিওপার্ডের মত ট্যাংক যুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র একদিকে যেমন রাশিয়ার বিরুদ্ধে রণক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে, সেই সাথে পশ্চিমা বিশ্ব বা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোকেও এ যুদ্ধে আরো গভীরভাবে জড়িয়ে ফেলবে। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন যে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং যথা সময়ে ট্যাংকগুলো আমাদের ইউক্রেনীয় বন্ধুদের হাতে পৌঁছেছে।

এদিকে রাশিয়ার রয়েছে অত্যাধুনিক টি-৯০ ট্যাংক। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, টি-৯০ যে কোনো দিক থেকেই পশ্চিমাদের লিওপার্ড-২, আব্রামস এবং চ্যালেঞ্জার থেকে ভাল ট্যাংক। এ বছর রাশিয়া নতুন করে ১৫০০ ট্যাংক তৈরি করবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি। উল্লেখ্য, রাশিয়ার রয়েছে বিশ্বের সব থেকে বড় ট্যাংক বহর। যুদ্ধ শুরুর আগে দেশটির কাছে ১২ হাজারের বেশি ট্যাংক ছিল।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: