শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ না হলে দেশের মানুষ বাঁচবে না: মির্জা আব্বাস
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে বহু দেশ মাথা ঘামাচ্ছে। তাদের কার কি স্বার্থ আমি জানি না। তবে একটি বিশেষ দেশ তারা পরিষ্কার বলছে- এখান থেকে শেখ হাসিনার সরকারকে সরানো যাবে না। এই কথাটা উদ্দেশ্যমূলক।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সড়কে অস্থায়ী মঞ্চে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শেষে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও সংসদ বিলুপ্তিসহ এক দফা দাবিতে নয়াপল্টন থেকে দয়াগঞ্জ পর্যন্ত কালো পতাকা মিছিল করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বেলা ৪ টা ২০ মিনিটে কালা পতাকা মিছিল শুরু। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় মিছিলটির অগ্রভাগ দয়াগঞ্জ পৌছায় ।
মির্জা আব্বাস বলেন, এটা আমাদের দেশ, মানুষকে বোঝতে হবে, একটা সরকারকে কেন থাকতে (ক্ষমতায়) হবে। আর যে দেশ বলেন এই কথা তাদেরকে আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, সরকারের সঙ্গে নয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে নয়, বিএনপির সঙ্গে নয়, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করুন। এই দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা বলতে পারি, এই দেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক করুন। যদি এই দেশের মানুষ আপনাদেরকে না ভালোবাসে তাহলে কখনও কিছু নিতে পারবে না।
শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ না হলে দেশের মানুষ বাঁচবে না বলে দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের স্বাধীনতা থাকবে না।
সরকারের লোকেরা হাজার-হাজার কোটি টাকা প্রচার করে দিয়েছে বলে দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, খবরে দেখলাম সব নিয়ম-কানুন ভেঙে জনতা ব্যাংক থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। যিনি নিয়েছেন তিনিও শিক্ষিত, যিনি দিয়েছেন তিনিও শিক্ষিত। এরা কুশিক্ষায় শিক্ষিত। কুমন্ত্রে লালিত এরা। এদের মধ্যে দেশপ্রেম-ভালোবাসা নেই।
মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা বহুদিন যাবত মিটিং-মিছিল করে গ্যাস, পানি, বিদ্যু, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসি পত্রের দাম কমাতে বলেই আসছি, কিন্তু সরকার শুনে না। এখন একটি ডিমের দাম ১৫ টাকা। কেন? মুরগি কি ডিম পাড়া বন্ধ করে দিয়েছে? না। তাহলে কেন দাম বৃদ্ধি পেলো। কারণ টাকার মূল্য কমে গেছে, এখন একশত টাকায় ১৪ টাকা কমে গেছে। যারা ব্যাংকে টাকা রেখেছেন দেখবেন সেখানে ১৪ শতাংশ নেই। বিদ্যু মিটার ও কার্ডে কারচুপি করা হচ্ছে। এইভাবে করে দেশের মানুষকে পঙ্গু বানিয়ে ফেলছে।
পাকিস্তান আমলের পুলিশের নির্াতনের কথা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, তারা ছিলো পাকিস্তানী পুলিশ। আজকে আমরা যখন মানুষের উন্নয়ন, ভোটাধিকার, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর কথা বলি, তখন এই দেশের এক শ্রেনীর আইনপ্রতিষ্ঠা বাহিনী আমাদের পেঠান, গুলি করেন। আমরা তো বাংলাদেশের কথা বলছি। আপনারা কি ঔপনিবেশিক, বিদেশী পুলিশ। সুতরাং অনেক দেনা বাড়িয়েছেন, আর বাড়াবেন না। একদিন এই ঋণ শোষ করতে হবে।
তত্ত্ববধায়ক অথবা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ বিহীন নির্বাচন চায় বলেও মন্তব্য করেন আব্বাস।
সমাবেশে আরও বক্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপির চেয়াপারসনের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভূইয়া, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবত সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী,পেশাজীবী নেতা কাদের গণি চেীধুরি, রাশেদুল হক, স্বেচ্চাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল প্রমুখ।