সরকার মানুষকে দেশের সঠিক ইতিহাস ভুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
প্রথম নিউজ,ঢাকা: দেশের মানুষকে সঠিক ইতিহাস ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার বিকালে জিয়া শিশু একাডেমীর শাপলাকুঁড়ির অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আমরা অনেকে ভুলে যাচ্ছি অথবা ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছি এই যে একটা আবহ সৃষ্টি হয়েছে যে, অতীতের যা কিছু মহান, যা কিছুকে ভালো সব কিছু ভুলিয়ে দাও। আর যারা ভালো কাজ করছে, করেছে। আমাদের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে তাদের মনে করার কোনো দরকার নেই-এই ধরনের একটা আবহাওয়া সৃষ্টি হয়েছে।”
‘‘ এটা খুব কষ্টের, বেদনার। এটা কখনো কোনো জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় না। আমরা নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে চাই, আনন্দময় স্বপ্ন দেখতে চাই, আমরা আলোকিত পৃথিবী চাই, আমরা অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। যদিও আমাদের চারদিকে অন্ধকার ছেয়ে ফেলে তাতেও আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।”
মির্জা ফখরুলের প্রত্যাশা শিশুরা একটা পৃথিবী নির্মাণের সুন্দর স্বপ্ন দেখবে।
তিনি বলেন, ‘‘ জিয়াউর রহমান ছিলেন নতুন পৃথিবী করার চিন্তায়।স্বপ্ন দেখতেন একটা আনন্দময়, কল্যাণময় সমৃদ্ধ একটা বাংলাদেশ গড়বার। তিনি শুরু করেছিলেন সেইভাবে একেকজন শিশুকে তৈরি করছিলেন শ্রেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবার জন্য।”
‘‘ শিশুদেরাও একটা নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখবে এবং একটা সন্দুর পৃথিবী গড়ে উঠবে।”
তিনি বলেন, ‘‘ সংকটটা বড় জটিল। জটিল হচ্ছে যে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরন হচ্ছে এই বছর, এটাকে বিজয়ের মাস বলা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের এই বিজয়ের মাসে যারা স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়ে একাত্তর সালে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, আমাদেরকে পথ দেখিয়েছিলেন, আমাদের জন্য ত্যাগ স্বাকীর করেছিলেন, আমাদের জন্য বন্দি ছিলেন তাদেরকে আমরা কেনো জানি না সেইভাবে সামনে নিয়ে আসতে পারছিনা, মনে করতে পারছি না।”
‘‘ আমরা অবশ্যই স্মরণ করব আমাদের সেই মহান প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা বেগম খালেদা জিয়াকে যিনি সমস্ত প্রতিকুলতাকে কাটিয়ে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন তিনি আজ অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষনে। আজকের এই বড় দিনে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন তাকে সুস্থ করে আবার আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন।”
বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ একটা দূঃখের কথা আমি জানাতে চাই। আমাদের দেশের বরেণ্য সাংবাদিক রিয়াজ ভাই(রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ) তিনি দুপুরে আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি একজন প্রতিথযশা মেধাবী সম্পাদক ছিলেন।”
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউশনের হলে বাংলাদেশ জিয়া শিশু একাডেমীর উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘শাপলাকুঁড়ি’র শিল্পীদের পুরস্কার বিতরন ও যিশু খ্রিষ্টের বড় দিনে এই অনুষ্ঠান হয়। শাপলা কুঁড়ির যাত্রা শুরু ১৯৯৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তাদেরকে এই অনুষ্ঠান শাপলাকুঁড়ি মেডেল দেয়া হয়।
জিয়া শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক এম হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও যুব দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যালবার্ট পি কস্টা।