স্পেনে আকস্মিক অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ল বালিকাদের নগ্ন ছবি

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব ছবি বানানো হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে। এ জন্য পূর্ণ পোশাক পরা বালিকাদের টার্গেট করা হয়েছে।

স্পেনে আকস্মিক অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ল বালিকাদের নগ্ন ছবি

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহর আলমেনদ্রালেজোর মানুষ ঘুম থেকে জেগে দেখলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয় বালিকাদের নগ্ন ছবিতে সয়লাব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব ছবি বানানো হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে। এ জন্য পূর্ণ পোশাক পরা বালিকাদের টার্গেট করা হয়েছে। তাদের ছবি ব্যবহার করে বানানো হয়েছে এসব নগ্ন ছবি। অনেক ছবি তারা নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে। তারপর এসব ছবি তৈরি করা হয়েছে পোশাকহীন মানুষের কল্পিত ছবির ওপর ভিত্তি করে। ওই শহরের ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী কমপক্ষে ২০টি বালিকা এই অভিযোগ নিয়ে সামনে এসেছে। সঙ্গে আছেন তাদের অভিভাবকরাও। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। 

১৪ বছর বয়সী একটি বালিকার মা মারিয়া ব্লাঙ্কো রায়ো বলেছেন, একদিন স্কুল থেকে ফিরে আমার মেয়ে বলল- মা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার টপলেস ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তার কাছে জানতে চাইলাম সে নিজে কোনো নগ্ন ছবি তুলেছে কিনা। তাতে আমার মেয়ে বলল- না। যেসব ছবি ছড়িয়ে পড়েছে তা অনেক মেয়ের। এসব ভুয়া ছবি। এসব ছবি বানানো হয়েছে। আমার ক্লাসের আরও মেয়ে আছে। সবার ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটেছে। 

মারিয়া ব্লাঙ্কো রায়ো বলেন, ওই শহরে এমন ক্ষতিগ্রস্ত ২৮টি মেয়ের অভিভাবক এর বিরুদ্ধে একটি গ্রুপ গঠন করেছেন। এসব রিপোর্ট নিয়ে এখন তদন্ত করছে পুলিশ। এসব ছবি বানানো এবং তা হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রামে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য স্থানীয় কমপক্ষে ১১টি বালককে শনাক্ত করা হয়েছে। একটি বালিকার ছবি ব্যবহার করে তার কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। পুলিশ তা নিয়েও কাজ করছে। এমন ছবি ছড়িয়ে দেয়ার কারণে বিব্রতকর অবস্থায় আছে অনেক মেয়ে। এমনকি তারা বাসা থেকে বের হতে পারছে না বলে জানিয়েছেন মারিয়া ব্লাঙ্কো রায়ো। 

আলেমেনদ্রালেজো হলো ছবির মতো একটি শহর। এর জনসংখ্যা ৩০ হাজারের কিছু বেশি। 

এ শহরটি ওলিভ এবং রেড ওয়াইন উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত। এখানকার এসব বালিকার নগ্ন ছবি এবার গ্রীষ্মে বানানো হয়েছে বলে মনে করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বালিকা ও তাদের অভিভাবকদের নিশ্চয়তা দিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন ডা. আদিব। এরপর বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, আমরা জানি না কত মেয়ের এমন ছবি আছে। আমাদের ভয় হচ্ছে, এসব ছবি যদি তারা পর্নোগ্রাফিক সাইটগুলোতে পোস্ট করে দেয়। যদি কেউ অপরাধের শিকার হয়, ডাকাতির শিকার হয়, তখন সে অভিযোগ করতে পারে। এটা লুকিয়ে রাখার বিষয় নয়। কারণ, এর মাধ্যমে অন্যরা আপনার ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু যৌন বিষয়ক ভিকটিমে পরিণত হলে অনেকেই লজ্জিত হন এবং বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেন। আমি মেয়েদের বলতে চাই- এটা তোমাদের কোনো অন্যায় নয়। 

এ মামলায় সন্দেহজনকদের বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। স্পেনের আইনে এসব অন্যায় শিশু পর্নোগ্রাফি হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগও আনা হতে পারে। স্পেনে কারো বয়স ১৪ বছর বা তার ওপরে হলেই তাকে ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত করা যেতে পারে। এই ঘটনায় যেসব মানুষ আক্রান্ত হননি তাদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।