সুদানে দিনে দুপুরে চলছে লুটপাট, অসহায় সাধারণ মানুষ
সোমবার সংঘর্ষের দুদিন পর আরএসএফ ইউনিফর্মে সেনারা বাহরি মার্কেটেও হামলা চালিয়েছিল। এ সময় তারা লুটপাটসহ সব ব্যবসায়ীর দোকান পুড়িয়ে দিয়েছিল।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: সুদানে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ'র মধ্যে মারাত্মক সংঘর্ষের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। সহিংসতা এমন আকার ধারণ করেছে যে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। দিনে দুপুরে চলছে লুটপাট। অসহায় সাধারণ মানুষগুলোর যেন হাত-পা বাঁধা। নিজেদের সর্বশেষ সম্বলটুকুও ধরে রাখতে পারছে না। দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে লুটপাট। এছাড়াও সংঘর্ষের পর অনেক পুলিশ সদস্যও পালিয়ে গেছেন। এতে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় এই চিত্র আরও প্রকট হয়েছে। এএফপি।
খার্তুমের বাসিন্দা আহমেদ সালিহ বলেছেন, শনিবার খার্তুমের সুপারমার্কেটটি কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা ছিল। আমি মার্কেট থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসছিলাম। তখন আরএসএফ’র চেকপয়েন্টে আমাকে থামানো হয়েছিল। সেনারা আমার পিকআপ ট্রাক ছিনতাই করার চেষ্টা করেছিল ভাগ্যক্রমে আমি পালাতে সক্ষম হয়েছিলাম। আল-আমারাত এলাকার দোকানের মালিক মাগদি ওসমান বলেন, বুধবার আমার দোকানের সামনেই আমার এক হত্যা করা হয়েছে। আমাকেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে ফিরেছি আমি। তিনি আরও বলেন, আমার বন্ধু খার্তুম ছেড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। সেজন্য বাজারে তার দোকান থেকে টাকা ও প্রয়োজনীয় দামি মালামাল সংগ্রহ করে ফেরার পথে কিছু বন্দুকধারী তাকে থামায়। যা আছে সব দিতে বলে। সে পালানোর চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে মেরে ফেলে।
এদিকে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানের পুলিশ বাহিনী যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে। এই সুযোগে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ পরিত্যক্ত পুলিশ স্টেশনগুলোকে সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছে। এমনকি আরএসএফ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত দখল করেছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আরএসএফ রাজধানীর বেশিরভাগ থানা দখল করেছে। কারণ পুলিশ শহর ছেড়ে পালিয়েছে। সুযোগে কারাগারে থাকা কয়েদিরা পালিয়েছে।
পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মোস্তফা আব্দুল আজিম বলেছেন, আরএসএফ আফ্রিকা স্ট্রিটের মাইগ্রেশন অফিসটি দখল করেছে। তারা এটিকে স্টোরেজ, লজিস্টিক্যাল ও সরবরাহ অফিস হিসাবে ব্যবহার করছে।
তিনি আরও বলেন, দুই বাহিনীর সংঘর্ষ সুদানে নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি করেছে। অনেক পুলিশ সদস্য শহর ছেড়ে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি যদি চলতেই থাকে তবে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। আমি বিশ্বাস করি খাবারের চেয়েও নিরাপত্তা বেশি প্রয়োজন। তাই আমি আশা করি দুপক্ষই পুলিশকে তাদের কাজ করতে সহায়তা করবে।