রংপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ

 রংপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ

প্রথম নিউজ, রংপুর : রংপুর সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিরুদ্ধে এবার বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন এক ইউপি সদস্য।

রোববার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের সদস্য সহিদুল ইসলাম সুমন।

অভিযোগে সহিদুল ইসলাম সুমন বলেন, গত ১৪ মে সদ্যপুস্করণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানার কার্যালয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টাঙানো ছবি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে প্রশাসনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা দায়ের করেন চেয়ারম্যান সোহেল রানা। আমি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। চেয়ারম্যান সোহেল রানার অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় সুপরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চালিয়ে আসছেন।

তিনি আরও বলেন, আমার ওয়ার্ডের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের সভাপতি আমি, অথচ আমাকে অবগত না করে আমার নাম বাদ দেন চেয়ারম্যান সোহেল রানা। এ নিয়ে আমি গত ১৪ মে দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যাই। সেখানে আমি চেয়ারম্যানের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা তুলে ধরলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তার সঙ্গে আমার বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় সেখানে বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। আমি সেখান থেকে রাগ করে বাইরে বের হয়ে আসার পর বিকেলে খবর পাই যে, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে চেয়ারম্যান সোহেল রানা নিজেই তার কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননা করাসহ ভাঙচুর করেন। ভাঙচুরের সেই ঘটনায় আমাকে আসামি দেখিয়ে ওইদিন রাতেই সদর কোতোয়ালি থানায় মিথ্যা অভিযোগও দায়ের করেন চেয়ারম্যান।

এর আগে চেয়ারম্যান সোহেল রানার বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির খবর একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি আমি ভাঙচুর করিনি, এটা আমি শুরু থেকে দাবি করে আসছি। পুলিশ প্রশাসনের দীর্ঘ তদন্তের মাধ্যমেও সেটি প্রমাণিত হয়েছে।

ইউপি সদস্য সুমন বলেন, আমার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান সোহেল রানা যেসব মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তার ষড়যন্ত্রের কারণে  সামাজিকভাবে আমার মানসম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। পুলিশ প্রশাসন যেহেতু তদন্তের মাধ্যমে ওই ঘটনায় আমার সম্পৃক্ততা পায়নি, তাহলে কে বা কারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করেছে তা খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে দুস্থদের চাল চুরি ও আত্মসাৎ, ভিজিডি কার্ড, ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্প, ভাতার কার্ড, এলজিএসপি বরাদ্দ ও রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ ও স্বেচ্ছাচারিতার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে ওই ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য আফরোজা বেগম ও মাহাবুবা বেগম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ বর্মন স্বাধীন, বামদলের নেতা আমজাদ হোসেন, জাসদ নেতা আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সদ্যপুস্করণী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সোহেল রানার মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।