মধ্যরাতের ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

মধ্যরাতের ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ

প্রথম নিউজ, ঢাকা : রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২৩ মিনিটে অনুভূত এ ভূকম্পনটির উৎপত্তি ছিল মিয়ানমারে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.১। 

এটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এতে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

গভীর রাতে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পটি আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। কম্পন অনুভূত হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর তীব্রতার কথা তুলে ধরেন।

ফেসবুকে অনেকেই জানিয়েছেন, তার বিছানায় থাকা অবস্থায় শক্তিশালী কম্পন ও দুলুনি অনুভুব করেছেন; যা বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হওয়া ভূমিকম্পের তাৎক্ষণিক খবর দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস। রাত দুইটা পর্যন্ত ইউএসজিএসের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী ও সিলেট থেকে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন যে তাঁরা ভূকম্পন অনুভব করেছেন।  

এ ছাড়া রাঙ্গামাটি, কক্সবাজার, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, ঝিনাইদহ, দিনাজপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, ভোলা, বরিশাল ও মানিকগঞ্জ  থেকে অনেকেই ফেসবুকে ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র বলছে, ৫.১ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চলে।
ঢাকা থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ৪৮৯ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে।  ইউএসজিএসও তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ৫.১ মাত্রার।

তবে ভারতের আবহাওয়া বিষয়ক সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, ভারতীয় রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৮। এর গভীরতা ১০৬ কিলোমিটার। অন্যদিকে ইউএসজিএস বলছে, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১২৬.১ কিলোমিটার।
 

এর আগে গত ৩ জানুয়ারি সকাল ১০টা ৩২ মিনিটে মিয়ানমারের হোমালিন শহরে ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়; যার গভীরতা ছিল ১২৭ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে ৪৮২ কিলোমিটার দূরে হওয়া সেই ভূমিকম্পটিও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনুভূত হয়েছিল।  

ভূমিকম্প বিষয়ক গবেষকরা বলছেন, গভীরতা বেশি হলে ভূমিকম্পনও বড় এলাকাজুড়ে অনুভূত হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্পবিষয়ক গবেষক মেহেদী আহমেদ আনসারী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভূমিকম্পের গভীরতা যত বেশি হবে ভূকম্পনের বিস্তৃতি বেশি হবে। অর্থাৎ, ভূমিকম্পের উৎপত্তি মাটির অনেক গভীরে হলে এর কম্পনও অনেক বেশি এলাকা জুড়ে অনুভূত হয়।’