ভালো নেই ব্যাংক
মুনাফা, সম্পদ এবং ক্যাশ-ফ্লো, তিন সূচকেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই চার ব্যাংকের চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় অর্ধেক ব্যাংকের।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: মুনাফা, সম্পদ এবং ক্যাশ-ফ্লো, তিন সূচকেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই চার ব্যাংকের
চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক অবস্থার অবনতি হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় অর্ধেক ব্যাংকের। গত বছরের তুলনায় মুনাফা কমেছে ১৫টির। এর মধ্যে মুনাফা, সম্পদ এবং ক্যাশ-ফ্লো, তিন সূচকেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চার ব্যাংকের। তিন সূচকের মধ্যে দুই সূচকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ৭টির। এ চিত্র পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর।
এদিকে নানা ছাড়ের পরও ব্যাংক খাতে বেড়েই চলছে খেলাপি ঋণ। সেপ্টেম্বর শেষে মোট ঋণের মধ্যে খেলাপির হার দাঁড়িয়েছি ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। তিন মাস আগে অর্থাৎ জুন শেষে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। তিন মাস আগে এ পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। সার্বিকভাবে দেশের ব্যাংক খাত খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। সার্বিকভাবে ব্যাংক খাত ভালো অবস্থানে আছে, এটা বলা যাবে না। আমি বলবো ক্রাইসিস নেই এই অর্থে, একেবারে কোনো ব্যাংক ফেল করবে এটা আমি আশা করি না। তবে ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য খুব একটা কাঙ্ক্ষিত অবস্থায় নেই।
তারা বলছেন, সুদের হার ৬-৯ বেঁধে দেওয়ার কারণে একদিকে ব্যাংকের মুনাফার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে ক্যাশ-ফ্লোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আবার খেলাপি ঋণের বিষয়ে নানান ধরনের ছাড় দেওয়ার কারণে ঝুঁকি বাড়ছে। সার্বিকভাবে খেলাপি ঋণ, মুনাফা, ক্যাশ-ফ্লো, সম্পদ মূল্যের যে চিত্র, তাতে বোঝাই যাচ্ছে দেশের ব্যাংক খাত ভালো অবস্থানে নেই। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দ্রুত আন্তর্জাতিক বেস্ট প্র্যাকটিস অনুসরণ করতে হবে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সামনে ব্যাংক খাতের অবস্থা আরও খারাপ হবে।
এদিকে আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দেওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মাথায় গত ১৮ জুলাই ঋলখেলাপিদের জন্য ছাড় বাড়ানো হয়। সেদিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড় দিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই চলবে। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ। এসব ঋণ পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সময় দেওয়া হতো সর্বোচ্চ দুই বছর। ৪ আগস্ট ভিন্ন এক নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ছাড় কমানো হয় খেলাপি ঋণে। ওই দিন জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুনঃতফসিলের পর আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় ছাড়া ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। মন্দ মানে শ্রেণিকৃত ঋণ তৃতীয় ও চতুর্থবার পুনঃতফসিল করার ক্ষেত্রে প্রকৃত আদায় ছাড়া সংরক্ষিত প্রভিশন ব্যাংকের আয় খাতে নেওয়া যাবে না।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা আসার পর চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে ব্যাংকগুলো। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি তিন মাস পর পর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে। এরই আলোকে তালিকাভুক্ত ৩৩টি ব্যাংক চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের পাশাপাশি প্রকাশ করেছে জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ের প্রতিবেদন। ব্যাংকগুলোর প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) ১৫টি ব্যাংকের মুনাফা গত বছরের তুলনায় কমেছে। এর মধ্যে দুটি ব্যাংক লোকসানে রয়েছে। ১৯টি ব্যাংকের ক্যাশ-ফ্লো ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। সম্পদমূল্য কমে গেছে ৭টি ব্যাংকের।
দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় নিমজ্জিত আইসিবি ইসলামী ব্যাংক চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের ব্যবসায় মুনাফার দেখা পেলেও, নয় মাসের হিসাবে আবার লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে। ব্যাংকটি চলতি বছরের প্রথম নয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৪৭ পয়সা। লোকসানের পাশাপাশি ব্যাংকটির সম্পদমূল্য এখনো ঋণাত্মক অবস্থায়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ১৮ টাকা ২৫ পয়সা, যা গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ১৮ টাকা ১ পয়সা। অন্যদিকে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৬০ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ১৫ পয়সা।
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের পাশাপাশি লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। চলতি বছরের নয় মাসে এই ব্যাংকটি শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১ টাকা ১১ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ৪২ পয়সা মুনাফা হয়। লোকসানের পাশাপাশি কমেছে সম্পদের পরিমাণও। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৯১ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১৭ টাকা ৩৮ পয়সা। চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ১০ টাকা ৮৩ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৫ টাকা ৬২ পয়সা। এ দুই ব্যাংকের পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে মুনাফা, সম্পদমূল্য এবং ক্যাশ-ফ্লো, তিন সূচকেই ঋণাত্মক প্রভাব পড়েছে রূপালী ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের। এর মধ্যে রূপালী ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৩৭ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২০ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৩৭ টাকা ৮৮ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৭ টাকা ৫৭ পয়সা। শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৭০ টাকা ৯৭ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো ছিল ১৭ টাকা ৮০ পয়সা।
অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি মুনাফা ২৭ পয়সা থেকে কমে ২৬ পয়সা হয়েছে। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ১৬ টাকা ২৪ পয়সা থেকে কমে ১৬ টাকা ২১ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৪ টাকা ১৪ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো ছিল ঋণাত্মক ৪ টাকা ১৫ পয়সা।
এদিকে গত বছরের তুলনায় মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হলেও ৯টি ব্যাংকের ক্যাশ-ফ্লো রয়েছে ঋণাত্মক অবস্থায়। এর মধ্যে রয়েছে এবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং উত্তরা ব্যাংক। ক্যাশ-ফ্লো ঋণাত্মক হওয়ার অর্থ নগদ অর্থের সংকট দেখা দেওয়া। যে প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ-ফ্লো যত বেশি ঋণাত্মক, প্রতিষ্ঠানে নগদ অর্থের সংকট তত বেশি। ক্যাশ-ফ্লো ও মুনাফায় উন্নতি হওয়ার পরও সম্পদমূল্যে ঋণাত্মক প্রভাব পড়েছে যমুনা ব্যাংকের। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছিল ৩২ টাকা ৭৫ পয়সা, যা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ৯৩ পয়সায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য কমে গেছে প্রায় ৪ টাকা।
সম্পদমূল্যে বড় ধরনের ঋণাত্মক প্রভাব পড়লেও মুনাফায় চমক দেখিয়েছে যমুনা ব্যাংক। চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৪ টাকা ৬ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৩ টাকা ৮৭ পয়সা। আর গত বছর ক্যাশ-ফ্লো ঋণাত্মক ৪ টাকা ৮৯ পয়সা থাকলেও চলতি বছর রয়েছে ভালো অবস্থানে। চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ-ফ্লো দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৫৬ পয়সা।
মুনাফা, সম্পদ এবং ক্যাশ-ফ্লো, তিন সূচকের কোনোটিতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি এমন ব্যাংক রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাংক এশিয়া, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৫ টাকা ৭৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫ টাকা ৬৮ পয়সা। সে হিসাবে শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ৭ পয়সা। মুনাফার পাশাপাশি ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষ শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৭ টাকা ২৬ পয়সা, যা গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ছিল ৫০ টাকা ৭৬ পয়সা।
ব্যাংক কোম্পানিগুলোর আর্থিক চিত্র দেখে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক খাতের মুনাফা, ক্যাশ-ফ্লো এবং খেলাপি ঋণ, কোনোটাই সন্তোষজনক নয়। সুদের হার ৬-৯ শতাংশ বেঁধে দেওয়া এখানে প্রভাব ফেলছে। ব্যাংকগুলোর যে পরিচালন ব্যয় তাতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে মুনাফা হচ্ছে না। আবার যেখানে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে, সেখানে ৬ শতাংশ মুনাফা দিলে আমানতকারীরা তাদের পুঁজি হারাচ্ছেন। এতে ব্যাংক আমানত কম পাচ্ছে। কাজেই ক্যাশ-ফ্লো ঋণাত্মক হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, আমরা একদিকে বলি বাজারভিত্তিক অর্থনীতি, অন্যদিকে নানান ধরনের নিয়ন্ত্রণ আনি। এ নিয়ন্ত্রণগুলো খুব সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণ তা বলাও কঠিন। এ পরিস্থিতিতে আমি মনে করি, সুদের হার মোটামুটি বাজারমুখী করা উচিত। যাতে ব্যাংকগুলো বেশি লাভ করতে পারে। তাতে আশা করা যায় ব্যাংকগুলোর ক্যাশ-ফ্লো ইম্প্রুভ করবে।
‘আর একটি বিষয়। বার্ষিক অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন আছে। একদিকে আমদানি বেড়ে যাচ্ছে, আবার মুদ্রার বিনিময় হার কমে যাচ্ছে। এতে উৎপাদকারী অনেক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা ডিপোজিট কমাচ্ছে। সবকিছু মিলে একটা জগাখিচুড়ি অবস্থা। বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, সার্বিকভাবে ব্যাংক খাত ভালো অবস্থানে আছে, এটা বলা যাবে না। আমি বলবো ক্রাইসিস নেই এই অর্থে, একেবারে কোনো ব্যাংক ফেল করবে এটা আমি আশা করি না। তবে ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য খুব একটা কাঙ্ক্ষিত অবস্থায় নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতের ম্যানেজমেন্ট খুব একটা যে ভালো না, সেটা বোঝাই যাচ্ছে। আবার যে কয়টা ব্যাংক ভালো, সেগুলোর নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সার্বিকভাবে ব্যাংকের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, আমি বলবো সেটা খুব একটা ভালো লক্ষণ নয়। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ছাড় দেওয়া হচ্ছে, এটা আরও একটি ভুল পলিসি এবং ভুল বার্তা। এতে বার্তা যাচ্ছে ঋণ পরিশোধ করা লাগে না। বিভিন্ন ব্যাংকের সম্পদ কমে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ব্যাংকের সম্পদ কমার কথা নয়। আর সম্পদ কমলে সেটা ভালো লক্ষণ নয়। তবে এটা ক্লায়েন্টের ওপর নির্ভর করে। ক্লায়েন্টের অবস্থা খারাপ হলে, তারা যদি ডিফল্ট হয়, তাহলে ব্যাংকের ওপর প্রভাব পড়ে।
ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার অবনতির জন্য ৬-৯ সুদের হার একটা প্রভাব ফেলছেই। ব্যাংকের যে কোর অপারেশন, সেখানে মার্জিন কমে যাচ্ছে এবং মুনাফার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। একই সঙ্গে অনাদায়ী ঋণ বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের ব্যাংক খুব একটা ভালো অবস্থানে তো নেই। বরং খুব খারাপ অবস্থানে আছে। এ অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল বেস্ট প্র্যাকটিস অনুযায়ী আমাদের ব্যাংক খাত অপারেট করা উচিত। কিন্তু আমরা তা না করে বিভিন্ন ছাড় দিয়ে মোটামুটি বলা যায়, একটা খাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছি। বহু ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন অচল অবস্থার মধ্যে আছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সামনে অবস্থা আরও খারাপ হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews