‘বাড়িতে ধান নাই, দাম বাড়লেও আমাদের লাভ হচ্ছে না’
শনিবার (২১ অক্টোবর) মহাদেবপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায় ধানের সরবরাহ অনেক কম। কারণ দরিদ্র কৃষকরা প্রয়োজনের তাগিদে আগেই সব ধান বিক্রি করে দিয়েছেন।
প্রথম নিউজ, নওগাঁ: নওগাঁয় সরবরাহ কম থাকায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিমণ চিকন ধানের দাম বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, মাঝারি ও মোটা প্রতিমণ ধানের দাম বেড়েছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা।
শনিবার (২১ অক্টোবর) মহাদেবপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায় ধানের সরবরাহ অনেক কম। কারণ দরিদ্র কৃষকরা প্রয়োজনের তাগিদে আগেই সব ধান বিক্রি করে দিয়েছেন।
জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে জিরাশাইল এক হাজার ২৭০ থেকে এক হাজার ২৯০ টাকা, কাটারিভোগ এক হাজার ২৪০ থেকে এক হাজার ২৬০ টাকা এবং পারিজা, ৫৬, ২১ জাতের ধান এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে জিরাশাইল এক হাজার ৩৪০ থেকে এক হাজার ৩৭০ টাকা, কাটারিভোগ এক হাজার ৩৩০ থেকে এক হাজার ৩৬০ টাকা এবং পারিজা, ৫৬, ২১ জাতের ধান এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের কৃষক সজিব আলী বলেন, আমি সাত বিঘা জমিতে ৫৬ জাতের ধান চাষ করেছি। সেসময় ধান কাটা-মারাই শেষে প্রতি মন এক হাজার ৫০ টাকাতে বিক্রি করেছি। সেই তুলনায় ২০ দিনে ধানের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। কিন্তু এখন আর বাড়িতে তেমন ধান নেই যে কারণে দাম বাড়লেও আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না।
উপজেলার বকচর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, ৯ বিঘা জমি করি আর খাই। যা ধান পাই বিক্রি করে আগে দেনা শোধ করি এরপর যা থাকে তা প্রতি মাসে বিক্রি করে সংসার চালাই। বেশি থাকলে দাম পাই না আর গোলা ফাঁকা হলে দাম পাই না।
উপজেলার ধান ব্যবসায়ী করিম তরফদার বলেন, আগে সরবরাহ ভালো ছিল এবং দামও কম ছিল। আমি প্রতি হাটে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার মন ধান কিনে থাকি। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় আজ এক হাজার মণ ধানও কিনতে পারিনি। মণ প্রতি ৯০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দিয়ে ধান কিনতে হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, গত সপ্তাহে প্রতি মণ ধানের দাম বেড়েছিল ৫০ টাকা এবং এই সপ্তাহেও ৫০ টাকা বেড়েছে। এখন বোরো মৌসুম প্রায় শেষ, যে কারণে কৃষকদের গোলায় তেমন ধান না থাকায় হাটে এর প্রভাব পড়েছে। আশা করি মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবেন।