বিসিবির পরিচালক পদে আসছে ছয় নতুন মুখ!
1.
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: বিসিবির পরিচালক পদে আসছে ছয় নতুন মুখ!
ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের দল অগ্রণী ব্যাংক, দেশের শীর্ষ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের কোন কাউন্সিলরের নাম বোর্ডে জমা দেয়া হয়নি। এছাড়া বাকি ১৭১ কাউন্সিলরের নাম জমা পড়েছে সোমবার।
মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা হয়ে গেছে। আগামী ৬ অক্টোবর বিসিবি পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন। তাই ১৭৪ জন কাউন্সিলরের মধ্যে কার্যক্ষেত্রে নাম জমা পড়েছে ১৭১ জনের- এটি সমস্যা নয়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার আগে নিশ্চয়ই তা পূর্ণ হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার রাতেই জেনেছেন, ক্যাটাগরি-১ (বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনীত কাউন্সিলর), ক্যাটাগরি-২ (ঢাকার প্রিমিয়ার, প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের দলের মনোনীত) এবং ক্যাটাগরি-৩’র (জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, সাবেক ১০ ক্রিকেটার ও সব সার্ভিসেস, সব বিশ্ববিদ্যালয়, সকল শিক্ষাবোর্ড, বিকেএসপি ও কোয়াব মনোনীত) ভোটার বা কাউন্সিলর কারা?
এখন দেখার বিষয়, ঐ ১৭৪ জন কাউন্সিলরের মধ্য থেকে বোর্ড পরিচালক হন কে কে? বলে রাখা ভাল, এই ১৭৪ জনের ভোটে (যদি নির্বাচন হয়) চার বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন বোর্ডের ২৩ জন পরিচালক। এর মধ্যে ক্যাটাগরি-১ থেকে ১২ জন, ক্যাটাগরি-২ থেকে ১০ জন এবং ক্যাটাগরি-৩ থেকে নির্বাচিত হবেন ১ জন পরিচালক।
এখন দেখার বিষয় হলো, নতুন পরিচালক পর্ষদের এ ২৩ সদস্য হবেন কারা? এখন যে পরিচালক পর্ষদ আছে, সেখান থেকে কি কেউ বাদ যাবেন? কোন সংযোজন-বিয়োজন কি ঘটবে? বর্তমান কমিটির কে কে থাকবেন? আর নতুন কারা অন্তর্ভুক্ত হবেন?
নির্বাচনের এখনও প্রায় দুই সপ্তাহ সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে অনেক কিছুই ঘটতে পারে। সময়ের প্রবাহতায় নতুন নতুন সমীকরণ তৈরি হবে, প্রেক্ষাপট ও পরিবেশ বদলাবে। কাজেই এখন নিশ্চিত করে কিছু বলা কঠিন।
তারপরও ভেতরের খবর হলো, বিসিবির নতুন পরিচালক পর্ষদে অতি অবশ্যই রদবদল ঘটছে। বর্তমান কমিটির অন্তত ৫-৬ জনকে সম্ভবত দেখা যাবে না নতুন কমিটিতে। তাদের বদলে জন এক ঝাঁক নতুন পরিচালকের দেখা মিলবে এবার। এর মধ্যে আফজালু রহমান সিনহা পরলোকে। এ ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ নিবেদিতপ্রাণ বড় মনের সংগঠক চির বিদায় নিয়েছেন।
এছাড়া বর্তমান কমিটির আরেক সদস্য লোকমান হোসেন ভূঁইয়ারও নতুন কোনো কমিটিতে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ তিনি কাউন্সিলরই হতে পারেননি। এর বাইরে না থাকার তালিকায় রয়েছেন হানিফ ভূঁইয়া, তানজিল চৌধুরী, শওকত আজিজ রাসেল এবং সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু।
তবে এর মধ্যে লোকমান হোসেন ছাড়া বাকি ৪ জনই কাউন্সিলর হয়েছেন। হানিফ ভূঁইয়া তার নিজ ক্লাব র্যাপিড ফাউন্ডেশন (প্রথম বিভাগের দল), তানজিল চৌধুরী প্রাইম ব্যাংক (প্রিমিয়ার ক্লাব) আর শওকত আজিজ রাসেল আম্বার স্পোর্টিং (দ্বিতীয় বিভাগ) এবং সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু কিশোরগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন।
কাজেই তারা একদমই হিসেবের বাইরে চলে গেছেন, তাদের নতুন বোর্ডে থাকার কোনো সম্ভাবনাই নেই- সে কথা জোর দিয়ে বলা কঠিন। তবে ক্রিকেট অঙ্গন ও ক্লাব পাড়ায় ফিসফাস, তাদের আগামীতে পরিচালক হিসেবে বোর্ডে থাকার সম্ভাবনা বেশ কম।
এ ছয়জনের বদলে ৬টি নতুন নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন ইফতেখার রহমান মিঠু (ক্যাটাগরি-২, ফেয়ার ফাইটার্স ক্লাব), মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব), ফাহিম সিনহা (প্রয়াত আফজালুর রহমান সিনহার ছেলে, সূর্যতরুণ ক্লাব), তানভির আহমেদ টিটু (ক্যাটাগরি-১, নারায়নগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা) ওবেদ রশীদ নিজাম (ক্যাটাগরি-২, শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব) ও সালাউদ্দিন চৌধুরী (ক্যাটাগরি-২, কাকরাইল বয়েজ ক্লাব)।
এছাড়া ক্যাটাগরি-২ মানে ঢাকার ক্লাব কোটায় বর্তমান বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন (আবাহনী), মাহবুব আনাম (মোহামেডান), নজিব আহমেদ (শেখ জামাল), মঞ্জুর কাদের (ঢাকা এসেটস), ইসমাইল হায়দার মল্লিক (প্রথম বিভাগ দল শেখ জামাল ক্রিকেটার্স) ও গাজী গোলাম মূতর্জার (গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স) পরিচালক পদে থাকা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত। ।
এর বাইরে বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলরদের নিয়ে গঠিত ক্যাটাগরি-১ থেকে আকরাম খান ও আজম নাসির (চট্টগ্রাম বিভাগ ও চট্টগ্রাম জেলা), শেখ সোহেল (খুলনা), নাইমুর রহমান দুর্জয় (মানিকগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা), কাজী এনাম (যশোর), নাদেল চৌধুরী (সিলেট), অ্যাডভোকেট আনোয়ার (রংপুর বিভাগ) ও খালেদ মাহমুদ সুজনের (ক্যাটাগরি-৩ সাবেক অধিনায়ক) পরিচালক পদে থাকা একপ্রকার নিশ্চিত।
দীর্ঘ দিন বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে জড়িত দুই সিনিয়র পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি এবং জালাল ইউনুস আবারও আগামী ৪ বছরের জন্য বোর্ড পরিচালক হতে যাচ্ছেন। তারা দুজন আছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাউন্সিলর হিসেবে।
এর বাইরে বর্তমান পরিচালক পর্ষদের দুজন সদস্য বরিশালের আলমগীর খান আলো আর পাবনার সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরীর থাকা নিয়ে আছে খানিক সংশয়। এর মধ্যে পাবনার সাইফুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে সম্ভবত নির্বাচন করবেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
তারা ক্যাটাগরি-১ মানে বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার মনোনীত কাউন্সিলর কোটায় আছেন। রাজশাহী বিভাগে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক পাইলট (রাজশাহী বিভাগের কাউন্সিলর) আর পাবনা জেলার কাউন্সিলর সাইফুল আলম চৌধুরী স্বপনের ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।