ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার ছিলেন বিএনপির অন্যতম সংগঠক

ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার ছিলেন বিএনপির অন্যতম সংগঠক

প্রথম নিউজ,  প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তোজাম্মেল হোসেন: স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ সরকারের চরম অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি,স্বজন প্রীতি, ব্যাংক ডাকাতি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, স্মরণকালের দুর্ভিক্ষ, সবিশেষ দেশের জনগণ চরম হতাশায় নিমজ্জিত হয় । এসময় দেশের আপামর জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে আবির্ভূত হন মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বীর উত্তম আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। দেশের শাসনভার গ্রহণ করার পরই তিনি বিধ্বস্ত দেশ ও জাতিকে পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সর্বোপরি দেশকে স্বনির্ভর করে তোলার জন্য সার্বিক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি উন্নয়নকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ (বি.এন.পি)।

জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি’র অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগঠক ছিলেন জামালপুরের কৃতি সন্তান ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার। ফুটবল খেলার মাঠে তাকে যে চাইনিজ ওয়াল বলা হতো তেমনি বিএনপির মহাসচিবের দায়িত্ব নেয়ার পর স্বৈরাচারী এরশাদের চতুর্মুখী আক্রমণ থেকে বিএনপিকে বাঁচিয়ে সংগঠিত করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে দলকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন করেন। এল.জি.আর.ডি মন্ত্রী হিসেবে তিনি দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি জন্মস্থান সরিষাবাড়ী তথা জামালপুরের ব্যাপক উন্নয়ন করেন। বন্যাকবলিত, হতদরিদ্র, শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা এলাকাকে দেশের উন্নত এলাকায় পরিণত করার লক্ষ্যে সার্বিক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন থেকেও তিনি এলাকার জনসাধারণকে সময় দিতেন এবং তাঁদের সমস্যা সমাধানে প্রাণান্তকর চেষ্টা করতেন। ব্যক্তিগতভাবে সৎ থেকেও যে রাজনীতি করা যায়, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি নিজেই।

ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের মৃত্যুতে এলাকার জনগণ হারিয়েছেন একজন দায়িত্বশীল অভিভাবক, আর বিএনপি হারিয়েছে জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নে দৃঢ়চেতা, বিচক্ষণ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও নির্ভীক এক জননেতাকে। ৪ নভেম্বর ১৯৩৬ খ্রি.ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার জামালপুর জেলার অন্তর্গত সরিষাবাড়ি থানার মূলবাড়ি গ্রামে সম্ভ্রান্ত তালুকদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আলহাজ্ব রিয়াজুদ্দিন তালুকদার ছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্য। ১৯৪২ খ্রি. সরিষাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি আনুষ্ঠানিক পড়ালেখা শুরু করেন। এ স্কুল থেকেই তিনি কৃতিত্বের সাথে এস.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ঢাকা কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ১৯৫৯ খ্রি. তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তিনি ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৮ খ্রি. তিনি লন্ডন থেকে বার-এট-ল ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৭১ খ্রি. তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে ছাত্র জীবন থেকেই তিনি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। ৫২’র ভাষা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করার কারণে তিনি কারাবরণও করেন। ১৯৭৬ খ্রি. ডেমোক্রিটিক লীগে যোগদানের মাধ্যমে তিনি জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে শহীদ জিয়া প্রবর্তিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে বিএনপিতে যোগ দেন এবং ১৯৭৮ খ্রি বিএনপি’র প্রথম জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোনিত হন। অসাধারণ মেধা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য অল্প দিনেই তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আস্থাভাজন ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ১৯৭৯ খ্রি. জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপ’র মনোনয়ন লাভ করে জন্মস্থান সরিষাবাড়ি থেকে এম.পি নির্বাচিত হন এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।

শহীদ প্রসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যোগ্য পরিচালনায় দেশ যখন তলাবিহীন ঝুড়ির দুর্নাম ঘুচিয়ে স্বনির্ভরতার দিকে এগুচ্ছিল, একদলীয় বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে রপ্তানির শুরু করে, সর্বোপরি বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ যখন সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিল তখন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে শাহাদৎ
বরণ করতে হল তাঁকে। জিয়াউর রহমানের শাহাদাতরে পর দলের নেতাকর্মীদের অনুরোধে বেগম খালেদা জিয়া পার্টির হাল ধরেন। এ সময়ে দলের অনেক নেতাকর্মী তৎকালীন স্বৈরশাসকের ভয়ে নিষ্ক্রীয় হয়ে পড়েন,আবার অনেকে এরশাদের দলে যোগদান করে মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করেন। দলের এহেন দুর্দিনে ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার, নেত্রীর পাশে এসে দাঁড়ান এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। আদর্শবান, সৎ, নির্ভীক, চৌকষ ও বিচক্ষণতার জন্য সালাম তালুকদারকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৩ জুলাই ১৯৮৮ সালে দলের মহাসচিব মনোনীত করেন। সালাম তালুকদার দলের মহাসচিবের দায়িত্ব প্রাপ্তির পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শে বিএনপিসহ সকল অঙ্গ সংগঠনগুলোকে তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠিত করেন। স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী দীর্ঘ ৯ বছরের আন্দোলনে তিনি অসাধারণ মেধা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে দলকে জনপ্রিয় করে তুলেন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ও বিদেশে আপোষহীন নেত্রী ইমেজ গড়ে তুলতে নেপথ্য নায়কের ভূমিকা পালন করেন।

খালেদা জিয়ার আপোষহীন ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব আর সালাম তালুকদারের অক্লান্ত পরিশ্রমে স্বৈরাচারের পতন ঘটে। দেশের মানুষের বিপুল সমর্থনের মাধ্যমে ১৯৯১ খ্রি. বিএনপি আবারও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। দল ক্ষমতায় আসার পর কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি এল.জি.আর.ডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এ সময় তিনি তাঁর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেন। জন্মস্থান সরিষাবাড়ী তথা জামালপুরকে উন্নত জেলাসমূহের সমপর্যায়ে উন্নীত করনে। নুতন পৌরসভা, দেশের বৃহত্তম ‘যমুনা সার কারখানা’ স্থাপন,রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, মাদ্‌রাসাসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধন করেন । ১৯৯৬ খ্রি. জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ২টি আসনে (সরিষাবাড়ী ও ধনবাড়ী) নির্বাচন করেন। এ নির্বাচনে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কূট-কৌশলে তাঁর নিশ্চিত বিজয়কে পরাজয়ে পর্যবসিত করা হয়। সে সময় তাঁর একটি ঘটনাই প্রমাণ করে তিনি কেমন ব্যাক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। নির্বাচনের সময় যখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন কিছু কিছু কেন্দ্রে ব্যালটে সীল মারছিল, তখন তাঁর পক্ষে কিছু কেন্দ্রে পালটা ব্যবস্থার অনুমতি চাওয়া হলে তিনি প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন, “এলাকার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যদি আমাকে ভোটদিয়ে নির্বাচিত না করে, তাহলে আমার পাশের দরকার নেই। ” নির্বাচনের পরদিন ঢাকায় ফেরার পথে বার বার তিনি রুমালদিয়ে
চোখের পানি মুছছিলেন আর উন্নয়ন কার্যক্রম দেখছিলেন।

নির্বাচনে দলের পরাজয়ের জন্য কেউ কেউ তাঁর উপর দোষারোপ করার প্রয়াস চালিয়েছিল; কিন্তু তা সফল হয় নি। বেগম খালেদা জিয়া সালাম তালুকদারকে দলের মহাসচিবের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। এসময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় দলের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করলে আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াকে দলের মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। দলের মহাসচিবের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর তিনি নিষ্ক্রিয় হয়ে ঘরে বসে থাকেন নি। সকল নীতি নির্ধারণী কাজে দলের চেয়ার পারর্সন বেগম খালেদা জিয়া তালুকদারকে স্মরণ করতেন ও পরামর্শ নিতেন। ১৯৯৯ খ্রি. তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দীর্ঘ ৩ মাস আমেরিকাতে চিকিৎসা নেন। দেশে ফিরে আসার পর শারীরিক অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি। তাঁর শরীর অনেকটা ভেঙ্গে পড়ে। মৃত্যুর ২০-২৫
দিন পূর্বে আমি তাঁর বনানীর ৮০ নং ডিওএইচএস এর বসায় সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম। আমার খবর পেয়ে তিনি ২য় তলা থেকে নিচ তলার ড্রয়িং রুমে আসেন। প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টার
আলাপ চারিতায় অবলীলাক্রমে আমেরিকায় ৩ মাসের চিকিৎসার বর্ণনা দিয়েছেন। তাঁর এ চিকিৎসা যে রকম ব্যয়বহুল ছিল সে রকম কষ্টকরও ছিল। আমার সাথে আলাপের সময় চাচী
(তাঁর স্ত্রী) ৩ বার নিচে নেমে এসে খবর নিয়ে গেছেন।

এসময় তাঁর শরীর ছিল খুবই দুর্বল, দম নিয়ে নিয়ে কথা বলছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান মিঞা ও প্রফেসর ড. এমাজ উদ্দিন আহমদ তাঁকে দেখতে এসেছিলেন, তাও বললেন। ৩ মাস পর আমেরিকার ডাক্তার আবার যেতে বলেছেন। আমি মনোযোগ সহকারে তাঁর কথাগুলো শুনছিলাম। আমি বুঝতে পেরেছিলাম চাচা হয়তো আর বেশীদিন বাঁচবেন না। অবশেষে ১৫ আগস্ট ১৯৯৯ খ্রি. তাঁর স্বাস্থ্যের গুরুতর অবনতি ঘটলে সোহরাওয়ার্দী হৃদরোগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে দিনই ডাক্তার তাঁকে ক্লিনিক্যাল ডেড ঘোষণা করেন। পরে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাঁর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সচল রাখা হয় । অতঃপর ২০ আগস্ট সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংকক নেয়ার উদ্দেশ্যে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এয়ার এ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বিমানে উঠানোর সময় প্রিয় মাতৃভূমিতেই তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণসহ সর্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে আসে। পর দিন ২১ আগস্ট সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাযায় দলীয় নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। পরে ২য় জানাযা অনুষ্ঠিত হয় জামালপুর শহরের কাচাড়ীপাড়া জামে মসজিদে। এ জানাযায় এতো মানুষের সমাগম হয়, যা ইতোপূর্বে কোনো দিন হয়নি। মরহুমের ৩য় জানাযা অনুষ্ঠিত হয় তাঁর জন্মস্থান সরিষাবাড়ি থানার অন্তর্গত রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। মাঠে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় দু'বার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। লাখো মানুষ অশ্রু সজল চোখে প্রিয় নেতাকে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পিতা আলহাজ্ব রিয়াজ উদ্দিন তালুকদারের কররের পাশে সন্ধ্যা ৭টায় তাঁকে সমাহিত করেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী মাহমুদা সালাম ও একমাত্র সন্তান সালিমা বেগম (আরুনী) সহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও দেশব্যাপী রাজনৈতিক ভক্তবৃন্দ রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। পারিবারিকভাবে তিনি ছিলেন সহজ সরল ও রুচিশীল । পরিবারে সদস্যদের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল খুবই মধুময়। তাঁর সহধর্মিনী বাংলাদেশের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তির মেয়ে হয়েও
তাঁর মার্জিত, নিরহংকার ও অতিথি পরায়ণতার জন্য সর্ব মহলে প্রসংশিত। সালাম তালুকদার ব্যক্তি জীবন ও রাজনীতিতে তাঁর নিজ পরিবার ও শ্বশুর পরিবার থেকে আর্থিক ও মানসিক
সহায়তা পেয়েছেন অনেক বেশি, যা তাঁর সাফল্যের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সালাম তালুকদার ছিলেন একজন বহুল পরিচিত ও আলোচিত
ব্যক্তি। তিনি ছিলেন স্বল্পভাষী, দৃঢ়চেতা, নির্ভীক, সৎ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সৃজনশীল, নির্লোভ ও দায়িত্বের প্রতি নিষ্ঠাবান। দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে স্বৈরাচার বিরোধী আনন্দোলন, নব্বই এর গণঅভ্যুত্থান, জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা, সরকার পরিচালনা এবং পরবর্তীতে বিরোধী দলে ভূমিকা পালন,প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর উপরোক্ত গুণাবলী দল তথা দেশবাসীর নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।

বর্তমান জাতীয় প্রেক্ষাপটে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নে ও দেশ গঠনে সালাম তালুকদারের মতো নেতার খুবই প্রয়োজন। এই ক্ষণজন্মা পুরুষের মৃত্যুতে বিএনপি হারিয়েছে একজন সৎ, নির্ভীক, জাতীয় নেতা ও সংগঠকে এবং তাঁর জন্মস্থান সরিষাবাড়ী তথা বৃহত্তর মনসিংহের বিএনপি’র রাজনীতিতে নেতৃত্বের স্থায়ী সংকট তৈরি হয়েছে, যা পূরণ হবার নয়। তাঁর কর্মগুণেই তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চির স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন ও থাকবেন। আমরা সবসময় তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

লেখক: সভাপতি, ইউট্যাব, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ও সাবেক সভাপতি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কুষ্টিয়া।