বেদুইনের সেরা বন্ধু ‘সালুকি’ রক্ষায় সৌদি উদ্যোগ

বেদুইনের সেরা বন্ধু ‘সালুকি’ রক্ষায় সৌদি উদ্যোগ

প্রথম নিউজ, অনলাইন:  সৌদি আরবের মরুভূমিতে বেদুইনদের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে পরিচিত সালুকি কুকুর। সালুকি হলো সেই বিস্ময়কর প্রজাতি, যারা প্রধানত তীব্র ঘ্রাণশক্তির পরিবর্তে দৃষ্টিশক্তির মাধ্যমে শিকার করে। আরবের যাযাবররা পাঁচ হাজার বছর ধরে পোষা প্রাণী দেখভাল ও শিকারের কাজে সালুকি ব্যবহার করছে। এটি কুকুরের প্রাচীন ও বিশুদ্ধতম প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃত।

এরাই ‘মরুভূমির সালুকি’ বা ‘সিনাই সালুকি’ বা ‘হিজাজি সালুকি’ নামে পরিচিত। এটি সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে বিদ্যমান, কিন্তু উৎপত্তিস্থল আরব উপদ্বীপের পশ্চিমে। ইসরায়েলে এই প্রাণীটি ‘নেগেভ সালুকি’ নামে পরিচিত। মরু সালুকিতে পশ্চিমা জিনের প্রভাব নেই এবং এটি অধিকতর আদিম চেহারার।

প্রশস্ত মাথার খুলি, খাটো মুখ, কম্প্যাক্ট শরীর, প্রশস্ত বুক এদের বৈশিষ্ট্য। তবে পশ্চিমা কুকুরের তুলনায় এদের ছোট লেজ।

ক্রসব্রিডিংয়ের কারণে সালুকির অস্তিত্ব এখন হুমকিতে। তাই সৌদি আরবের ইন্টারন্যাশনাল আছিল এরাবিয়ান সালুকি সেন্টার (আইএএএসসি) এটির টিকে থাকা নিশ্চিত করতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

আইএএএসসির সভাপতি ফাহাদ আল-ফারহান বলেন, ‘আরব সংস্কৃতির সঙ্গে সালুকি গভীরভাবে যুক্ত। আরবের বাজপাখি, আরবি ঘোড়া আর উটের মতো সালুকিও আমাদের জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক।’

সৌদি আরবের লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আসার পর থেকে বেদুইনের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি সালুকির সংখ্যাও কমেছে। অথচ সালুকি এককালে বেদুইন পরিবারগুলোর টিকে থাকার প্রধান উপকরণ ছিল। এই কুকুরকে ইংরেজিতে সাইটহাউন্ড বলা হয়।

কারণ এটি চোখ দিয়ে দেখার পর শিকারের দিকে দ্রুত বেগে ছুটে যায়। আরবিতে একটি প্রবাদবাক্যে বলা হয়েছে, ‘শুধু মালিকই সালুকির প্রকৃত চেহারা দেখার সুযোগ পায়।’
 

সালুকি খুবই প্রভুভক্ত। মরুর পরিবেশে বেদুইন পরিবারের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে এরা খুব পছন্দ করে। ফাহাদ আল-ফারহান বলেন, ‘এখনই পদক্ষেপ না নিলে সালুকি হারিয়ে যেতে পারে। আমার সংগঠন জনসচেতনতা বাড়াতেও নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি সালুকির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে টিকাসহ বিভিন্ন ওষুধও সরবরাহ করে।’ মাইক্রো-চিপিং ও ডিএনএ টেস্টও নিশ্চিত করেছে তার সংগঠন।

তিনি জানান, সৌদি আরবে এরই মধ্যে সালুকির নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইউনেসকো ঘোষিত নীতিমালার আলোকে তাঁরা এসব কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। সূত্র : এরাব নিউজ