কুকি-চিন আতঙ্কে পর্যটকশূন্য বান্দরবান
সবকিছু যেন থেমে আছে এখানে
প্রথম নিউজ, বান্দরবান: বগালেক, দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার স্বাদু পানির হ্রদ। বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থিত এ চমৎকার পর্যটন কেন্দ্র। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৮০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার বগালেক দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান। শীত ও বর্ষা মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন এখানে। প্রতিদিন যেখানে দুইশর বেশি পর্যটকের যাতায়াত ছিল সেই বগালেক আজ পর্যটকশূন্য। পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আতঙ্কে দৃষ্টিনন্দন ও জনপ্রিয় এ পর্যটন কেন্দ্র এখন খাঁ খাঁ করছে।
গত ১২ জুলাই পর্যটক যাতায়াতের ওপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও আতঙ্ক কাটেনি এখনও। ফলে একদিকে যেমন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি হুমকির মুখে পড়েছে গোটা বান্দরবানের পর্যটন শিল্প। গত ২ আগস্ট সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পর্যটক না থাকায় একেবারে সুনসান নীরবতা বগালেক পাড়ে। সারাদিনে একজন পর্যটকেরও দেখা মেলেনি স্পটটিতে। লেকের পাশে বগালেক পাড়ার (বম পাড়া) পর্যটন-কেন্দ্রিক বিভিন্ন দোকানও ক্রেতাশূন্য। সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে সবকিছু যেন থেমে রয়েছে এখানে।
দুর্গম পাহাড়ের কোলে অবস্থিত বগালেকের পাশে স্থানীয় বম পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম পর্যটন খাত। পর্যটকরা লেকপাড়ে বেড়াতে এলে তাদের দোকানে যে বেচা-কেনা হয় তা দিয়ে সংসার চলে অধিকাংশ বাসিন্দার। এ পাড়ার অনেক বাসিন্দা নিজের ঘরের একটি বা দুটি কক্ষ পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেন। কটেজ ভাড়া থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চালান কেউ কেউ। কিন্তু কেএনএফ সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে পর্যটক না আসায় বম পাড়ার বাসিন্দারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
অর্থ সংকটে কষ্টের মধ্যে থাকা স্থানীয়দের একজন পৈ পৈ বম। তার বাড়ি বগালেক পাড়ায়। তিনি বলেন, আমি জুম চাষ করি, পাশাপাশি এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে দুটি কক্ষ ভাড়া দিই। জুম চাষের আনারস ও কলাসহ বিভিন্ন ফল পর্যটকদের কাছে বিক্রি করি। যা আয় হয় তা দিয়েই আমার সংসার চলে। এখন কেএনএফ সন্ত্রাসীদের আতঙ্কে গত এক বছর ধরে পর্যটক আসছে না। এতে আমাদের জীবন ধারণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন, কোনো কোনো দিন অনাহারেও কাটছে আমাদের।
কেএনএফ সন্ত্রাসীদের কারণে একদিকে যেমন বান্দরবানজুড়ে থমকে আছে পর্যটন, তেমনি পৈ পৈ বমের মতো বহু পাহাড়ি খুব কষ্টে আছেন। বগালেক ছাড়াও বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাম্প্রতিক অতীতে তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে সুখী জীবনযাপন করতেন বান্দরবানের বাসিন্দারা। তাদের সম্প্রীতি ও শান্তিতে বসবাস বাকি দুই পার্বত্য জেলার মানুষের জন্য অনুকরণীয় ছিল। এ জেলার বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কৃষি ও পর্যটক-নির্ভর। এছাড়া প্রাকৃতিক নিসর্গের দিক থেকে এগিয়ে থাকায় বান্দরবানে পর্যটক আসার প্রবণতা অন্য দুই জেলার চেয়ে বরাবরই বেশি ছিল। শীত কিংবা বর্ষা– সবসময় পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকত জেলার নীলগিরি, থানচি ও বগালেকসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে। সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের কারণে বান্দরবানের সেই পর্যটন খাতে কালো ছায়া পড়েছে। ভয়ে ও আতঙ্কে পর্যটকরা এখন আসতে চাইছেন না। এতে জেলার হোটেল ও রিসোর্ট মালিক থেকে শুরু করে প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর কেএনএফের সন্ত্রাসী হামলার পর বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় স্থানীয় প্রশাসন। প্রায় ১০ মাস পর গত ১২ জুলাই সে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু কেএনএফের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। স্থানীয়দের কাছে জানা গেল, কেএনএফ এখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বলছে, তাদের দাবি মেনে নেওয়া পর্যন্ত কেউ যেন পর্যটকদের নিয়ে কোনো স্পটে না যায়। তাদের দাবি মানার আগে কেউ পর্যটনকেন্দ্রে গেলে কোনো ধরনের ক্ষতি হলে এর দায় তারা নেবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বম সম্প্রদায়ের এক বাসিন্দা বলেন, এসব হুমকি-ধামকি দিলে তো কোনো পর্যটক আসবে না। তাদের কারণে পর্যটকরা না আসায় আমাদের অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। এছাড়া তারা বাঙালি ও পাহাড়ি সবার সঙ্গে জুলুম করছে। মাসিক চাঁদা না দিলে অপহরণ থেকে শুরু করে হত্যা পর্যন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয়দের কাছে জানা গেল, কেএনএফ এখনও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বলছে, তাদের দাবি মেনে নেওয়া পর্যন্ত কেউ যেন পর্যটকদের নিয়ে কোনো স্পটে না যায়। তাদের দাবি মানার আগে কেউ পর্যটনকেন্দ্রে গেলে কোনো ধরনের ক্ষতি হলে এর দায় তারা নেবে না।
বান্দরবান সদর উপজেলায় অবস্থিত ‘মিলন ছড়ি’ স্পটটি পর্যটকদের অনেক প্রিয়। এ স্পটে দাঁড়িয়ে পর্যটকরা আকাশচুম্বী পাহাড় ও পাহাড়ি আঁকাবাঁকা নদীর দৃশ্য উপভোগ করেন। দিনে হাজারও পর্যটক এখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন এবং প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করেন। এ পর্যটন কেন্দ্রের পাশে চা, বিস্কুট, চিপস ও পাহাড়ি কলাসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে অস্থায়ী দোকান বসান রিমন ত্রিপুরা। পর্যটকরা তার দোকানের ক্রেতা। আগে পর্যটকদের কাছে বিক্রি করে যা আয় হতো তা দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলত। এক বছর ধরে পর্যটক না থাকায় দারুণ সংকটে পড়েছেন রিমন।
তিনি বলেন, মিলন ছড়ি চেকপোস্ট পার হয়ে থানচি, নীলগিরি ও বগালেকের মতো পর্যটনকেন্দ্রে যেতে হয়। পাহাড় দেখার জন্য এ স্পটে নেমে পর্যটকরা ছবি তোলেন। গাড়িতে ওঠার আগে তারা আমার কাছ থেকে পাহাড়ি কলাসহ বিভিন্ন পণ্য কিনে নিয়ে যান। এতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু কেএনএফ আমার সব কেড়ে নিয়েছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে থানচি, নীলগিরি কিংবা বগালেকে যেতে সাহস পাচ্ছে না কেউ। পর্যটক না থাকায় আমার দোকানে বেচা-কেনা নেই। গত এক বছর ধরে সংসার চালাতে হচ্ছে একবেলা না খেয়ে।
ধস নেমেছে হোটেল ব্যবসায়
বান্দরবান ঘুরতে আসা পর্যটকদের অধিকাংশ থাকেন শহরের বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে। সেখান থেকে গাড়িতে করে তারা বিভিন্ন স্পটে বেড়াতে যান। সন্ধ্যার দিকে আবার ফিরে আসেন হোটেলে। কুকি-চিনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে বান্দরবান এখন পর্যটকশূন্য। অধিকাংশ হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ এখন খালি। বর্ষা মৌসুমে বান্দরবানের প্রতিটি হোটেল পর্যটকে মুখর থাকত, সেখানে এখন অধিকাংশ আবাসিক হোটেল খাঁ খাঁ করছে। এসব হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজের কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার মতো টাকা নেই মালিকদের কাছে।
বান্দরবান শহরে অবস্থিত রিভার ভিউ আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. ইমরান বলেন, আমাদের হোটেলের রুম সংখ্যা ১৫টি। এর মধ্যে ১৩টিই খালি থাকছে। অথচ বর্ষা মৌসুমে একটি রুমও খালি থাকার কথা নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে। কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের কারণে শুধু যে হোটেল ব্যবসায় ধস নেমেছে তা নয়, ধস নেমেছে বান্দরবানের জনপ্রিয় চান্দের গাড়ির ব্যবসায়ও। অনেকে লোকসানের মুখে চান্দের গাড়ি বিক্রি করে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চান্দের গাড়ির এক মালিক বলেন, শহরের আশপাশে যেসব স্পট আছে সেগুলোতে মাইক্রোবাস কিংবা সিএনজিতে করে পর্যটকরা যান। আমাদের মূল ব্যবসা হচ্ছে নীলগিরি, থানচি ও বগালেক এলাকায়। এসব দুর্গম এলাকায় চান্দের গাড়ি ছাড়া যাওয়া যায় না। কিন্তু কুকি-চিনের কারণে এসব এলাকায় এখন আর পর্যটকরা যেতে পারছেন না। তারপরও যদি কোনো পর্যটক আসেন তাদের ওই সব এলাকায় নিয়ে যেতে নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে। কুকি-চিন সন্ত্রাসীরা কখন হামলা করে বসে তা বলা যায় না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। কুকি-চিনকে দমানো না গেলে আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতেই হবে, উপায় নেই।
সরগরম বার্মিজ মার্কেট এখন নীরব
পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে শুধু দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ নন, বান্দরবান শহরের বাসিন্দারাও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে শহরের ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বান্দরবান শহরে বেশ কয়েকটি বার্মিজ মার্কেট রয়েছে। যেগুলোতে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের নানা পণ্য থেকে শুরু করে পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের তৈরি পণ্য বিক্রি হতো। বান্দরবানে ঘুরতে আসা পর্যটকরা এসব পণ্য কিনতেন যথেষ্ট আগ্রহ নিয়ে। বর্তমানে বার্মিজ মার্কেটের সব দোকান প্রায় ক্রেতাশূন্য।
লালা বার্মিজ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১২টি দোকান রয়েছে সেখানে। কিন্তু মার্কেটটি সম্পূর্ণ ক্রেতাশূন্য। দোকানিরা ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন। সারা দিনে ১/২ জনের বেশি পর্যটকের দেখা মেলে না। বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, কুকি-চিন বান্দরবানকে অশান্ত করে তোলার পর থেকে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে গোটা জেলা। বার্মিজ মার্কেটে পণ্য কেনার মতো কোনো ক্রেতা নেই। ফলে লাভ তো দূরের কথা, দোকান ভাড়াও দিতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতেও বাধ্য হচ্ছেন।
লালা বার্মিজ মার্কেটের রাজপরী শপিং মলের মালিক মো. সাগর বলেন, অন্য বছরে এ সময় দিনে ৬-৭ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হতো। এখন সারা দিনে এক হাজার টাকাও বিক্রি হয় না। আমরা খুবই সমস্যায় আছি। সেনাবাহিনী চেষ্টা করছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। আশা করি তাদের চেষ্টায় বান্দরবানে শান্তি ফিরে আসবে।
তৎপরতা চলছেই কুকি-চিনের
বান্দরবানের স্থানীয় বাসিন্দা ও নাগরিক পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের অপ-তৎপরতা এখনও থেমে নেই। তারা নানা কৌশলে বান্দরবানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সন্ত্রাসী এ গোষ্ঠী পাহাড়ের নিরাপত্তা ও মানবিক কার্যক্রমে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সদস্যদের ওপরও অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে। এ অবস্থায় এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে বান্দরবানে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল বলেন, বান্দরবানে কৃষি ও পর্যটন ছাড়া আর কোনো আয়ের উৎস নেই। কৃষি খাতে আম, কলা ও আনারসসহ যেসব ফল উৎপাদন হয় তা বিক্রি হয় পর্যটকদের কাছে। কিন্তু সন্ত্রাসীদের ভয়ে পর্যটকরা আসছেন না। মানুষ না এলে এসব পণ্য বিক্রি হবে কার কাছে? পর্যটক না আসার কারণে বান্দরবানের মানুষ সত্যিকার অর্থে অনেক কষ্টে আছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, গত বছরের অক্টোবর থেকে কেএনএফ ও জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিরুদ্ধে পাহাড়ে অভিযান শুরু হয়। অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলা ও গুপ্ত বোমা (আইইডি) বিস্ফোরণে অন্তত পাঁচ সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া কুকি সন্ত্রাসীদের অতর্কিত সশস্ত্র হামলায় তিনজন কর্মকর্তাসহ মোট ১১ সেনা সদস্য আহত হয়েছেন।
এদিকে, পাহাড়ের আধিপত্য ও আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে অন্যান্য আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলায় কেএনএফের ১৭ জন নিহত এবং দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। র্যাব সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত তারা কেএনএফের ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। সংগঠনটির বিরুদ্ধে কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছে র্যাব।
কেএনএফ নেতারা থাকেন সীমান্তের বাইরে
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, কেএনএফ প্রধান নাথান বম এবং সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা মিজোরাম ও মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থান করেন। তবে, দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সুবিধা নিয়ে দ্রুত নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেন তারা। এছাড়া নাথান বম বেশির ভাগ সময় মিজোরামে থাকেন বলেও জানা গেছে।
কেএনএফের লোগোতে প্রতিষ্ঠাকাল ২০০৮ লেখা থাকলেও ২০১৮ সালে সংগঠনটির সন্ত্রাসী কার্যক্রম সবার নজরে আসে। সর্বশেষ গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে সংগঠনটির সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ভয়াবহতা বাড়তে থাকে। এরপর থেকে সংগঠনটির বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। সংগঠনটি পার্বত্য অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক আয়তনের অঞ্চলকে নিয়ে বেআইনি ও মনগড়া মানচিত্র তৈরি করেছে। তাদের এ কল্পিত মানচিত্রের তিন পাশে রয়েছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্ত। বান্দরবান পাহাড়ের বম, পাঙ্খুয়া, খুমি, ম্রো ও খিয়াং নামক ক্ষুদ্র ছয়টি জাতি-গোষ্ঠীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ।