বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ১১ দফা দাবি
কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি চালানো কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করে অপরাধীকে খুঁজে বেড়ানো এবং ধরিয়ে দেয়ার আহ্বানকে উপহাস হিসেবে দেখছেন বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি চালানো কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করে অপরাধীকে খুঁজে বেড়ানো এবং ধরিয়ে দেয়ার আহ্বানকে উপহাস হিসেবে দেখছেন বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ। তারা ১১ দফা দাবি জানিয়ে বলেছেন, প্রতিটি হতাহতের ঘটনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্র ব্যবহার ও বলপ্রয়োগের ঘটনা জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হতে হবে। মঙ্গলবার সকালে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ব্যানারে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘হত্যা, অবৈধ নাটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, গত কয়েকদিনে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘটনাবলিতে শতশত ছাত্র-জনতাকে হত্যা, জুলুম ও নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে আমরা কিছু বিক্ষুব্ধ নাগরিক আজ এখানে সমবেত হয়েছি। গভীরতম বেদনা ও ক্ষোভের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ, নিরস্ত্র, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর গত ১৬ই জুলাই থেকে পুলিশসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী এবং তাদের পাশাপাশি সাংবিধানিক শপথ এবং আইন উপেক্ষা করে সরকারের কিছু মন্ত্রীর দায়িত্বহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্যের প্ররোচনায় তাদের আশীর্বাদপুষ্ট ছাত্রসংগঠনের কর্মীরা নজিরবিহীন সহিংস দমন পীড়নের তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে দুই শতাধিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন, ছয় হাজারের উপর নাগরিক গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন, যার সংখ্যাগরিষ্ঠই সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন কলেজ ও স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী এবং খেটে খাওয়া সাধারণ নাগরিক। আহতদের মধ্যে ৬১৫ জন দৃষ্টি হারানোর আশঙ্কায় আছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে নয় শিশু যাদের বয়স ৪-১৬ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে ৪ জন নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে কত নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেছে জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিহতদের ৭৫ ভাগ শিশু, কিশোর ও তরুণ যাদের বেশিরভাগের শরীরেই প্রাণঘাতী গুলির ক্ষতচিহ্ন ছিল।
এছাড়া বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় হতাহতের মধ্যে কয়েকজন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সংবাদকর্মীরাও রয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ২১০ জনের নিহত হবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও সরকার ১৪৭ জনের মৃত্যু তথ্য পেয়েছে বলে দাবি করেছে, যা অগ্রহণযোগ্য। আমাদের বিশ্বাস করার কারণ রয়েছে যে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি যা ইন্টারনেট বন্ধ থাকায়, গণমাধ্যমের উপর সরকারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য প্রবাহে সরকারি বাধার কারণে জানা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, এত অল্প সময়ে কোনো একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এমন বিপুল সংখ্যক হতাহতের নজির গত একশ' বছরের ইতিহাসে আমাদের দেশে বা উপমহাদেশের অন্য কোথাও নেই। পুলিশের নির্বিচার গুলিতে নিরস্ত্র আন্দোলনকারী, পানি বিতরণকারী কিশোর, পলায়নরত ছাত্র ও ছাদে খেলতে যাওয়া শিশুর মৃত্যুর যে হৃদয়বিদারক বর্ণনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে তাতে স্পষ্ট যে বলপ্রয়োগ ও সহিংসতার মাত্রা সকল সীমা অতিক্রম করেছে এবং সাংবিধানিক ও আইনি সকল সুরক্ষা লঙ্ঘিত হয়েছে। গুলি করার ক্ষেত্রে পুলিশের আইন ভঙ্গ করা হয়েছে। দেশের বেসামরিক নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দমনের জন্য জাতিসংঘের লোগো সম্বলিত সাঁজোয়া যান রাস্তায় নামানো হয়েছিল, সেনাবাহিনী ও সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়োজিত করা হয়েছিল, কার্ফু জারি করে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং হেলিকপ্টার থেকে টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও অভিযোগমতে গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, শিক্ষার্থী আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কর্মীদের অনেককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে বা অবৈধভাবে আটক রেখে তাদের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে এবং হচ্ছে। ইতোমধ্যে আটককৃত অনেককে রিমান্ডে বা রহস্যময় আটকাবস্থায় অমানুষিক অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে এবং আলামতও দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক ডিবি পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে সমন্বয়কারীদের এবং আত্মীয়স্বজন ও শিক্ষকদের দেখা করার অনুরোধ উপেক্ষা করে নিরাপত্তার অজুহাতে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তথাকথিত ডিবি হেফাজতে কয়েকদিন আটকাধীন অবস্থায় রেখে আন্দোলন প্রত্যাহারের টাইপকৃত এক বিবৃতি ডিবি কার্যালয় থেকেই তাদের দিয়ে পাঠ করানো হয়েছে, যা আইনের শাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল। আটক রেখে এমন বিবৃতি পড়ানোর ঘটনা সংবিধান ও আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। আটকাবস্থায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও কোটা সংরক্ষণ নেতা নাহিদ ইসলামসহ আন্দোলনের নেতা কর্মীদের উপর নির্যাতনের যে চিত্র দেশবাসীর সামনে উপস্থাপিত হয়েছে তা গুরুতর ফৌজদারি অপরাধ।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে যে সান্ধ্যকালীন কারফিউ চলাকালীন সময়ে এলাকা ভাগ করে পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য বাহিনী ‘ব্লক রেইড’ পরিচালনা করছে ও নির্বিচারে ছাত্র গ্রেপ্তার করে অভিভাবক, তরুণ সমাজ এবং জনমনে ভীতি ও ত্রাসের সঞ্চার করছে। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠার বদলে আরো জটিল ও অশান্ত করে তোলার ইন্ধন যোগাবে বলে আমাদের আশঙ্কা। বাসা থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহীনির নামে উঠিয়ে নেয়া হলেও অভিযানকারী কর্মকর্তার পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না, সময়মতো আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে না এবং কারো কারো ক্ষেত্রে আত্মীয় পরিজন তুলে নেয়ার পরে আর কোন খোঁজ পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করছেন। গ্রেপ্তারে মরিয়া বাহিনী এমনকি অপ্রাপ্তবয়স্ক এক শিক্ষার্থীর রিমান্ড আবেদনও করেছিল, যা পরবর্তীতে উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত হয়েছে। এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞের ও বলপ্রয়োগের নিন্দা, ধিক্কার বা প্রতিবাদের উপযুক্ত ভাষা আমাদের জানা নেই। এই বিপুল প্রাণহানির দায় প্রধানত সরকারের। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপর যে মাত্রায় বলপ্রয়োগ ও সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ করা হয়েছে, তা দেশের জনগণ ও বিশ্ব বিবেককে স্তম্ভিত, ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে।
আন্দোলন চলাকালে নাশকতামূলক তৎপরতার কারণে বেশ কিছু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা কোন ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই সব নাশকতার জন্য যারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তবে এই অজুহাতে ভিন্নমতের কাউকে দমন-পীড়ন বা সাধারণ মানুষকে হয়রানি কোনোভাবেই সমর্থনীয় না। আমরা ক্ষুব্ধ যে, প্রাণহানি, ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণের কোনো তদন্ত না করে পুলিশ শুধুমাত্র নাশকতার মামলা দায়ের করে হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা লোককে আসামি করেছে, কয়েক হাজার লোককে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে অসংখ্য নিরীহ নাগরিক, শিক্ষার্থী কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাশকতার ঘটনার সময় তা প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা সরকার নেয়নি এবং সরকারি বাহিনীগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে গণমাধ্যমের রিপোর্ট থেকে জানা যায়। সুষ্ঠু তদন্ত করে তাদের এই ভূমিকার রহস্য উদঘাটন এবং জনসমক্ষে তা প্রকাশ করা জরুরি। আমরা ক্ষুব্ধ যে সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও প্রাণহানি, ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণের কোন তদন্ত না করে পুলিশ শুধুমাত্র নাশকতার মামলা দায়ের করে হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা লোককে আসামি করেছে, কয়েক হাজার লোককে গ্রেপ্তার করেছে যা হয়রানিমূলক এবং গ্রেপ্তার বাণিজ্যের সুযোগ করে দেবে। সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরেও গুলি চালানো কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করে অপরাধী খুঁজে বেড়ানো এবং অপরাধীকে ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান উপহাস বটে। এভাবে নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা, গণগ্রেপ্তার, অবৈধ আটক, নিপীড়ন ও নির্যাতন সংবিধানের ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৫, ৩৭, ৩৯ অনুচ্ছেদ, সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা এবং বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য বিভিন্ন মানবাধিকার দলিলের (যেমন: ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত চুক্তি, নির্যাতন বিরোধী চুক্তি) স্পষ্ট লঙ্ঘন। আন্দোলন দমনে নির্বিচার হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারযোগ্য অপরাধ ।
এমন গুমোট ও সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং সামগ্রিকভাবে শিক্ষাঙ্গনকে নিরাপদ ও শিক্ষামুখী রাখতে নিম্নোক্ত দাবিগুলি সরকারের কাছে তুলে ধরছি -
১। কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারি মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীদের গুলি এবং নির্মম আঘাতে নিহত সকল মৃত্যুর সঠিক, স্বচ্ছ তদন্ত হতে হবে এবং প্রকৃত দোষীর, তা সে যতই উচ্চ পদাধিকারী বা কোন দলমতের হোক, সর্বোচ্চ আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২। স্বাধীন, গ্রহণযোগ্য এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে প্রতিটি হতাহতের এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রের ব্যবহার ও বল প্রয়োগের বিষয়ে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হতে হবে। এই প্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করতে হবে।
৩। ইতোমধ্যে সংগৃহীত ছবি, ভিডিও ফুটেজ এর মাধ্যমে চিহ্নিত সকল হন্তারক ও আক্রমণকারীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এই ব্যাপারে কালবিলম্বের কোন সুযোগ নেই ।
৪। জাতির ইতিহাসে সংঘটিত এমন নজিরবিহীন হতাহতের শিকার সকল নিহত, আহত নাগরিকের পূর্ণাঙ্গ তালিকা সরকারকে অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে ।
৫। ১৪৭ জন নয়, সকল নিহত ও আহত নাগরিকের সম্মানে জাতির সহানুভূতি, সম্মান আর শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদায় শোক ঘোষণা করতে হবে। এই শোক প্রকাশকে আক্রমণকারীদের গ্রেপ্তারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া শুরু করে আন্তরিক ও অর্থবহ করতে হবে।
৬। দায় মেনে নিয়ে প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। অঙ্গহারানো সকল নাগরিকের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, ক্ষতিপূরণ আর পুনর্বাসনের পুরো পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের চিত্র জাতির সামনে অনতিবিলম্বে তুলে ধরতে হবে।
৭। অবিলম্বে আটককৃত সকল শিক্ষার্থীর মুক্তি দিতে হবে এবং শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং সেখানে অস্ত্রধারী ও প্রভাব বিস্তারের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
৮। তথাকথিত ডিবি হেফাজত থেকে সকল সমন্বয়কারী মুক্তি দিতে হবে। এমন জোরপূর্বক উঠিয়ে নেয়া আর বেআইনি হেফাজতের ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং এর সাথে জড়িত সকলকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।
৯। সরকারকে ভয় দেখানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। গুলি করে আন্দোলন দমনের অসুস্থ মানসিকতার অবসান এখনি করতে হবে। স্বাভাবিক ও স্বস্তির পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কারফিউ ও সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, সাঁজোয়া যান সরিয়ে নিতে হবে, হেলিকপ্টারের পাহারা থামাতে হবে, ব্লক রেইড, গণগ্রেপ্তার, ছাত্র-অভিভাবক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমরা স্বাধীন দেশে মুক্ত পরিবেশে বসবাস করবো, কোনো বদ্ধ, নিয়ন্ত্রিত, আতঙ্কের পরিবেশে নয়।
১০। অবাধ তথ্যপ্রবাহে আরোপিত সকল বাধা দূর করতে হবে। ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পূর্ণ মাত্রায় খুলে দিতে হবে।
১১। সহিংসতা দমনের নামে বিরোধীমত দমন করা যাবে না। স্পষ্ট প্রমাণের মাধ্যমে সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা দেশবাসীকে কঠিন আত্মপ্রত্যয়ে, সাহসিকতার সাতে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।