প্রথম নিউজ, অনলাইন: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে গতকাল মঙ্গলবার নিহত ছয়জনের স্মরণে বিএনপি আয়োজিত গায়েবানা জানাজা কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। অপরদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা একটার পর দেখা যায়, জায়গাটি মূলত পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে তল্লাশির পর। সেখানে বিএনপির বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন জি-৯-এর সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেনসহ কয়েকজনকে আটকের খবরও পাওয়া যায়।
বায়তুল মোকাররমে জোহরের নামাজের পর বিএনপি গায়েবানা জানাজা কর্মসূচি পালন করে। এরপর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিছু সময় বক্তব্য দেন। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকিসহ নেতা-কর্মীরা বায়তুল মোকাররমে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।
কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, হাবিবউন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ফজলুল হক মিলন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মাওলানা সেলিম রেজাসহ বেশ কিছু কেন্দ্রীয় নেতা অংশ নেন।
নামাজ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, গায়েবানা জানাজায় অংশ নিতে মুসল্লিদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি এর নিন্দা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ইচ্ছা করলে আলোচনার মাধ্যমে কোটা সমস্যার সমাধান করতে পারত। তা না করে বর্বরভাবে হামলা করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল কথা বলেন, মসজিদের উত্তর গেট থেকে বের হওয়ার পর সেখানে আগে থেকে উপস্থিত গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী স্লোগান দেওয়া মাত্রই পুলিশ তাঁদের ধাওয়া করে। এরপর তাঁরা ইট পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। পুলিশ পাল্টা রাবার বুলেট ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এর আগে, বিএনপির নেতা-কর্মীরা বায়তুল মোকাররমের আশপাশ এবং পল্টনের বিভিন্ন গলিতে অবস্থান নিয়েছিলেন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়। গলিগুলোয় পুলিশের অবস্থান দেখা যায়।
সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম- মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, গায়েবানা জানাজা কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য বায়তুল মোকাররমে নেওয়া মাইক পুলিশ কেড়ে নিয়েছে।
এদিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে অভিযান চালানোর পর কার্যালয়ের সামনে হলুদ ফিতা টানিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন থেকে দৃষ্টি ফেরাতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ অস্ত্রসহ বিস্ফোরক রেখে তা উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটক তালাবদ্ধ করে ক্রাইম সিন করে রেখেছে বলে মনে করে দলটি। এ বিষয়ে দেশবাসীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।