প্রথম নিউজ,ঢাকা :বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক মিডিয়া এসে প্রিন্ট মিডিয়াকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিজিটাল ও সোশ্যাল মিডিয়া জোরালো হলে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক দুই মিডিয়াই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ইউরোপ-আমেরিকায় সব মিডিয়াই প্রবল দাপটে পাশাপাশি টিকে আছে পারস্পরিক প্রতিযোগিতা করে। এখনো সেখানে ছাপা সংবাদপত্র ও বই-পুস্তকের কোটি কোটি পাঠক এবং বিপুল বাণিজ্য-বেসাত। আমাদের ঠুনকো মিডিয়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার আসল কারণ প্রযুক্তির পরিবর্তন নয় বরং বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব এবং পাঠকের চাহিদা মিটাতে না পারার ব্যর্থতা। এখন মিডিয়া নিয়ে একটা গল্প। ছোট্ট গল্পটির আগে পটভূমিটা বলে নিই। একসময় আমাদের দেশে দৈনিক ইত্তেফাক খুব জনপ্রিয় ছিল। তাতে পাতাজুড়ে থাকতো প্রচুর পাত্র-পাত্রী চাই, বাড়িভাড়া সহ নানান ক্লাসিফায়েড বিজ্ঞাপন। জনপ্রিয়তার কারণে ইত্তেফাকে এতো বিজ্ঞাপন থাকতো নাকি এতো বেশি প্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন সেদিন ইত্তেফাকের জনপ্রিয়তায় সহায়ক হয়েছিল তা নিয়ে তর্ক আছে।
পাশের পশ্চিমবঙ্গে তেমনই জনপ্রিয় ছিল আনন্দবাজার। তেমন না, বরং আরো বেশি। কারণ, বাংলাভাষী মুসলমানের তুলনায় হিন্দুর পাঠাভ্যাস বেশি। যা হোক, যে-কোনো কিছু নিয়েই গালগল্প ফাঁদতে ওস্তাদ আনন্দবাজারের অতো বেশি ক্রেডিবিলিটি না থাকলেও তার পাঠকপ্রিয়তার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল পাত্র-পাত্রী ও বাড়িভাড়ার বিজ্ঞাপন। এসব কারণে আনন্দবাজার পারিবারিক পত্রিকা হয়ে উঠেছিল। তবে সেকালে ক্রেডিবিলিটি ও শুদ্ধ ইংরেজির অনুশীলনের জন্য শিক্ষিত পরিবারগুলো বাসায় ও অফিসে 'স্টেটসম্যান' রাখতো।
কাদের বাসায় কোন্ পত্রিকা রাখা হয় সেটা দিয়ে স্ট্যান্ডার্ড মাপার একটা ব্যাপারও ছিল। কোলকাতায় চায়ের দোকানে কয়েক বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছে। হাবলু কথাচ্ছলে বাবলুকে জিজ্ঞেস করলো: হ্যাঁরে বাবলু তোদের বাসায় কোন্ কাগজ রাখা হয় রে? বাবলু বললো: আগে রাখা হতো আনন্দবাজার। ছোড়দিরও বিয়ে হয়ে যাবার পর থেকে স্টেটসম্যান।
মারুফ কামাল খান, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিষ্ট ; সাবেক প্রেস সচিব, বিএনপি চেয়ারপারসন
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: