নিবন্ধন পেলো বিএনএম, বিএসপি নানা আলোচনা
গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে কমিশন সভা শেষে এই তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)কে নিবন্ধন দিতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে কমিশন সভা শেষে এই তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, দুটি দল প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে। এখন গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। আপত্তি নিষ্পত্তি করে ২৬শে জুলাইয়ের পর চূড়ান্ত করা হবে। দল দুটি হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি। কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, মাঠ পর্যায়ে অফিস-কমিটির কার্যকারিতা, প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিল যাচাই, তদন্ত শেষে এই দুটি দল নির্বাচিত হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব।
এদিকে সরকারের পরামর্শে নির্বাচন কমিশন দল দুটিকে নিবন্ধন দেয়ার জন্য চূড়ান্ত করেছে বলে জানিয়েছেন নিবন্ধন না পাওয়া দলগুলো। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা বলছেন, সাংবিধানিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য গঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। ওদিকে যে দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তা নিয়ে সমালোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন।
নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে পড়েছে ডাকসু’র সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর প্রতিষ্ঠিত গণঅধিকার পরিষদ। এ বিষয়ে দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, নির্বাচন কমিশন দুটি দলকে নিবন্ধনের জন্য চূড়ান্ত করেছে। তাদেরকে আপনারা মাঠে কতোদিন দেখেছেন? এদের হেড অফিস কোথায় আপনারা কেউ দেখেছেন? আমি তাদের (ইসি) বলেছি, গুগলে সার্চ দিয়ে দেখেন, তাদের দলের কার্যক্রম সম্পর্কে মূল ধারার কোনো গণমাধ্যমে সংবাদ পান কিনা। তাহলে এরা কোথা থেকে নিবন্ধন পেলো, কারা এদের বানালো। শেখ হাসিনা সরকার বানিয়েছে, এই ১৪ দল থেকে যেন আগামীতে ২০ দল হতে পারে এবং বিএনপিকে টেক্কা দিতে পারে। তিনি বলেন, এজেন্সির পরামর্শে নির্বাচন কমিশন এই দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে। এর মধ্যদিয়ে নির্বাচন কমিশন যে সরকারের আজ্ঞাবহ এবং তারা যে দলদাস ভূমিকায় অবতীর্ণ সেটি তারা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, আমরা এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পতন ঘটিয়েই আগামী নির্বাচনের আগে নিবন্ধন নেবো।
এদিকে নিবন্ধন পায়নি ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ও। এ প্রসঙ্গে দলটির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে পরিচিত ও স্বীকৃত ক্রিয়াশীল দলগুলোকে বাদ দিয়ে অখ্যাত, অপরিচিত ও ভুঁইফোড় দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়ার নামে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রহসনমূলক নাটক করে নির্বাচন কমিশন সবশেষে সরকারের দেয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী অশ্বডিম্ব প্রসব করেছে। সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও এবি পার্টিকে নিবন্ধন না দিয়ে নির্বাচন কমিশন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, নিয়মনীতি, আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। এই অন্যায় ও প্রহসনকে রাজনৈতিক এবং আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে।
ইসি’র নিবন্ধ পেতে যাওয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুর রহমান। তিনি ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ আসনের বিএনপি’র নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। বর্তমানে ড. আব্দুর রহমান প্রাইম ইউনির্ভাসিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও ডিন। নতুন রাজনৈতিক দল বিএনএম গঠনের আগে তিনি বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষা জীবনে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। দলটির ৩৩ সদস্যাবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটিতে রয়েছেন ৮ জন সামরিক কর্মকর্তা। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিবন্ধন পাওয়া আরেক দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান মাইজভাণ্ডারী দরবার শরীফের ইমাম হযরত সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভাণ্ডারী।