নতুন পথে প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ ইউক্রেনে
স্থানীয় সময় শনিবার এটি নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের বন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রথম নিউজ,অনলাইন ডেস্ক: কৃষ্ণসাগরের নতুন একটি পথ ব্যবহার করে দুটি পণ্যবাহী জাহাজ ইউক্রেনের চোরনোমোরস্ক বন্দরে পৌঁছেছে। স্থানীয় সময় শনিবার এটি নিশ্চিত করেছে ইউক্রেনের বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিশ্ব বাজারের রপ্তানির জন্য জাহাজগুলোতে ২০ হাজার টন গম লোড করা হবে।
জাহাজ দুটি মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ পালাউয়ের পতাকা উড়িয়ে যাত্রা শুরু করে। নাবিকদের মধ্যে ইউক্রেন, তুরস্ক, আজারবাইজান ও মিসরের নাগরিকরা আছেন। জাহাজগুলো মিসর ও ইসরাইলে গম পৌঁছে দেবে বলে জানায় ইউক্রেনের কৃষি মন্ত্রণালয়।
জাতিসংঘ সমর্থিত রাশিয়া-ইউক্রেন শস্যচুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর কিয়েভ একতরফাভাবে নতুন এ পথের ঘোষণা দেয়। পথটি কৃষ্ণসাগরের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করেছে। ইউক্রেন সূর্যমুখী তেল, বার্লি, ভুট্টা এবং গমের মতো ফসলের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম সরবরাহকারী হিসাবে পরিচিত। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। হামলার পর মস্কোর নৌবাহিনী দেশটির কৃষ্ণসাগরবর্তী বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় রপ্তানির জন্য ২০০ কোটি টন শস্য আটকে যায়। ফলে বেড়ে যায় খাদ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে শুরু হয় খাদ্য সংকট।
মস্কো অভিযোগ করে, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো তার নিজস্ব কৃষি রপ্তানি সীমাবদ্ধ করছে। এজন্য শস্যচুক্তি ভেঙে দেয়। অভিযোগের পর ইউক্রেনে আসা বেসামরিক জাহাজগুলোকে সম্ভাব্য সামরিক লক্ষ্য হিসাবে বিবেচনা করার হুমকি দেয় রাশিয়া। ইউক্রেনের শস্য অঞ্চল ওডেসাতে একের পর এক হামলা চালায় দেশটি।
রোববার ভোরে ওডেসা অঞ্চল ঘিরে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। টেলিগ্রাম পোস্ট বিবৃতিতে দেশটির বিমানবাহিনী জানায়, শুরুতে তারা এ অঞ্চলের দক্ষিণ অংশগুলোকে লক্ষ্য করে। তারপর সেখানকার একটি কৃষি ব্যবস্থাকে আঘাত করে। হামলায় ৬টি ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোন এবং ১০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে মস্কো।
এদিকে রোববার ভোরে রাশিয়ার ওরিওল অঞ্চলের একটি তেল ডিপোতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। আঞ্চলিক গভর্নর আন্দ্রেই ক্লিচকভ বলেন, জ্বালানি ট্যাঙ্কে আগুন ধরে গেলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইউক্রেন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ড্রোন হামলা বাড়িয়েছে। তবে এসব ড্রোনের বেশিরভাগ আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে রাশিয়া। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের নিক্ষেপ করা অন্তত ছয়টি ড্রোন ধ্বংস করেছে।
ইউক্রেনে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিন: ন্যাটো প্রধান
ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ সতর্ক করেছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো দ্রুত সমাপ্তি হবে না। রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিয়েভের অব্যাহত পালটা আক্রমণের মধ্যে রোববার এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
জার্মানির ফাঙ্কে মিডিয় গ্রুপের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘বেশিরভাগ যুদ্ধ প্রথম শুরু হওয়ার সময় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় ধরে চলে। সুতরাং আমাদের অবশ্যই ইউক্রেনে দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। তবে একই সময়ে আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, যদি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউক্রেনীয়রা যুদ্ধ বন্ধ করে দেয়, তবে তাদের দেশ আর থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং রাশিয়া তাদের যুদ্ধ বন্ধ করে তাহলে আমরা শান্তি ফিরে পাব।’