ঢলের পানি নেমে গেলেও তীব্র ভাঙন তিস্তায়
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত
প্রথম নিউজ, কুড়িগ্রাম: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি নেমে গেছে। তবে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা নদীর ভাঙন অব্যাহত আছে।
এই ভাঙন পরিস্থিতি কোথাও কোথাও তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বসতভিটা, আবাদি জমি। অসময়ে বন্যার পর নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ভূমিহীন ও নিঃস্ব হয়ে পড়ছে তিস্তাপাড়ের শত শত পরিবার।
দুই জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দহগ্রাম, গড্ডিমারী, সানিয়াজান, সিন্দুর্না, ডাউয়াবাড়ী, ভোটমারী, মহিষখোঁচা, গোকুন্ড, খুনিয়াগাছ, রাজপুর, ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও থেতরাইসহ তিস্তার পাড় ঘেঁষা আরও কয়েকটি ইউনিয়নে ভাঙন তীব্র হয়েছে। ভিটা হারানো মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন বলেন, 'গত মঙ্গলবার রাত থেকে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তিস্তাপাড়ে। শুক্রবার থেকে দুর্গত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করে। কিন্তু পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন।'
ভাঙনের শিকার কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নামাভরত গ্রামের কফিল উদ্দিন (৬০) জানান, অসময়ের বন্যায় নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ধান, ভুট্টা, বাদাম, আলু, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি। সীমাহীন ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের কয়েক হাজার কৃষি পরিবার। এ ক্ষতির রেশ কাটিয়ে ওঠার আগেই ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন অনেকে।
একই গ্রামের আইয়ুব আলী (৬৫) জানান, ভাঙন থেকে বাঁচার জন্য নিরুপায় লোকজন সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন। কেঁদে কেঁদে আকুল হয়ে উঠছেন তারা।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের (৬০) কাছ থকে জানা যায়, তিস্তার ভাঙনে সব হারানো অনেকে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। কারও কারও খোলা আকাশের নিচে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, 'পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা ভাঙন কবলিত জায়গাগুলো পরিদর্শন করছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: