ছাত্রলীগের সানজিদাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফুলপরী

কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ জন্য ফুলপরী আজ মঙ্গলবার সারা দিন কুষ্টিয়া আদালতে ছিলেন। সন্ধ্যায় ফুলপরীসহ তাঁর বাবা ও আইনজীবী মামলার প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ছাত্রলীগের সানজিদাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফুলপরী

প্রথম নিউজ, অনলাইন: কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ জন্য ফুলপরী আজ মঙ্গলবার সারা দিন কুষ্টিয়া আদালতে ছিলেন। সন্ধ্যায় ফুলপরীসহ তাঁর বাবা ও আইনজীবী মামলার প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।কুষ্টিয়া আদালতের আইনজীবী সিরাজ প্রমাণিক বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ফুলপরী তাঁর বাবা আতাউর রহমান, ভাই হজরত আলীকে সঙ্গে নিয়ে চেম্বারে আসেন। তাঁকে (ফুলপরী) নির্যাতনকারী ছাত্রীদের বিরুদ্ধে মামলার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন। মামলার কাগজপত্র প্রস্তুতের কাজ চলছে। বুধবার কুষ্টিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হবে। তবে মামলার আগে এদিন হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টিও দেখা হবে। সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, নির্যাতনকারীদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহ, পেপার কাটিংসহ সাক্ষীদের নাম ঠিক করতে সময় লাগছে। এদিকে বিকেলের দিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা বাড়িতে ফুলপরীর খোঁজ নিতে এসেছেন। ফুলপরী খাতুন বলেন, ‘আমি মামলার জন্য কুষ্টিয়ায় গিয়েছিলাম। আবার কাল (বুধবার) যেতে পারি।’

১২ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালিগালাজ ও ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে এ বিষয়ে ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে  লিখিত অভিযোগ দেন। ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ পাঁচজনের আসন বাতিল করে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১ মার্চের মধ্যে তাঁদের হল ছাড়তে হবে।  শেখ হাসিনা হলে জরুরি বৈঠকে গতকাল সোমবার এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত হলের তদন্ত কমিটির সদস্যরাও ছিলেন।

আসন বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম ও একই বিভাগের একই সেশনের মুয়াবিয়া জাহান। তাঁদের শেখ হাসিনা হলের হল সংযুক্তি বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সুপারিশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হল প্রশাসন।

ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলের প্রভোস্ট শামসুল আলম, হাউস টিউটর মৌমিতা আক্তার, ইশরাত জাহানসহ কয়েকজনের দায়িত্বে চরম অবহেলা পেয়েছে আদালতের নির্দেশে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। আর প্রক্টর শাহাদাত হোসেনের কর্মকাণ্ড উদাসীন ও দায়সারাগোছের বলে প্রতিবেদনে এসেছে। এ ছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ওই ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পৃথক তদন্ত কমিটি।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার পৃথক দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর হাইকোর্ট বুধবার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন। পাশাপাশি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও আইনের অধীনে প্রণীত বিধি-প্রবিধানমালা সংগ্রহ করে তা দেখাতে এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আইনজীবী থাকলে তাঁকে জানাতেও বলেছেন আদালত।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: