ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করলেই হবে না, আইনের আওতায় আনতে হবে : সেলিমা রহমান

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করলেই হবে না, আইনের আওতায় আনতে হবে : সেলিমা রহমান

প্রথম নিউজ, অনলাইন : বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে শুধু নিষিদ্ধ নয়, এদের আইনের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

সেলিমা রহমান বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল- একটি নির্বাহী আদেশে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিরোধী দলের সব নেতাকর্মীর মামলা উঠিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার সেটা করছে না। আমরা একই দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর আমরা একটা মুক্তি পেয়েছি, কিন্তু আমরা কি স্বস্তিতে আছি? আমরা একটা সংকট পেরিয়ে উঠেছি সত্যি, কিন্তু একটা ক্রান্তিলগ্নে দাঁড়িয়ে আছি। সাধারণ মানুষ আজ স্বস্তি পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দাবি-দাওয়া নিয়ে অফিস ঘেরাও কর্মসূচি, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা পরিকল্পনা মাফিক দেশকে অস্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে- যাতে সরকার দেশকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে না পারে, একটা সুন্দর নির্বাচন না দিতে পারে।

সেলিমা রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্বপ্ন ছিল মানুষকে তার অধিকার ফিরে দেওয়া। মানুষ বিগত ৩টি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের স্বপ্ন- মানুষকে ভোটের অধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যারা খুবই ভালো সজ্জন মানুষ, তারা কাজ করছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। কিন্তু তাদেরকে বুঝতে হবে, যেগুলো আগে দরকার সেগুলো আগে করতে হবে। সকল সংস্কার একবারে সম্ভব হয় না। জনগণের ভোটে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচিত হয়ে আসলে তারাই পারে সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করতে।

চলমান সংকট তৈরি করে গেছে পতিত স্বৈরাচার সরকার- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ সংকট বর্তমান সরকার করেনি, তারা তো কাজ করে যাচ্ছে। পতিত সরকারের দোসরদের দেখছি অনেক জায়গায় বহাল তবিয়তে আছে, তারা বিরাজ করছে, আবার তারা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে। তাদের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

শুধু কি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করলেই হবে- এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির নেত্রী বলেন, তাদের হাতে দা, পিস্তল, অস্ত্র আছে। তারা কি যেখানে-সেখানে হামলা করবে না? তাই বলছি, এদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- শেখ হাসিনাকে আগে আইনের আওতায় আনতে হবে, তার বিচার করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের প্রতি স্যালুট জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে, কোনো রকম রাজনৈতিক সংকট এনে দেশকে অস্থিতিশীল করা যাবে না। তোমাদের যদি লক্ষ্য হয়ে থাকে, সকলে মিলে তাদের অধিকার ফিরে পাক। সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা ও পেশাজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে দেশটা যাতে সুন্দর করা যায়, সেদিকে চেষ্টা করতে হবে।

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাতের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারিক প্রমুখ নেতারা।