গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল মার্কিন টিভি চ্যানেল

মঙ্গলবার ও বুধবার ইসরাইলি আগ্রাসনে সেখানে অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল মার্কিন টিভি চ্যানেল

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্কইসরাইলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনুসে অবস্থিত স্কুলগুলোতে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোমা, গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন। সম্প্রতি খান ইউনুসের স্কুলগুলোতে বোমা হামলার ভিডিওগুলো বিশ্লেষণ করে সিএনএন এ তথ্য দিয়েছে। গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে খান ইউনুসের স্কুলগুলোকে মূলত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের অস্থায়ী আবাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

মঙ্গলবার ও বুধবার ইসরাইলি আগ্রাসনে সেখানে অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।  এর আগেও সিএনএন গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি স্কুলে বোমাবর্ষণের ভিডিওগুলো পরীক্ষা করে জানিয়েছিল যে, এসব অপরাধযজ্ঞে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া গোলাবারুদ ও বিস্ফোরকই ব্যবহার করা হয়েছে। ইসরাইলি নৃশংসতায় সেখানেও ৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হন।

এদিকে বাইডেন প্রশাসন আরও অত্যধিক পরিমাণে বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। গণমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইসরাইলের কাছে এবার ৫০০ পাউন্ড বা ২২৭ কেজি ওজনের বোমা পাঠাচ্ছে। ইতোমধ্যেই এসব বোমা ইসরাইলে পাঠানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহর মধ্যে সেসব অধিকৃত ফিলিস্তিনে পৌঁছে যাবে।  কিছুদিন আগে ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল মায়াদিন টেলিভিশন জানিয়েছিল যে, বিপুল সমরাস্ত্র নিয়ে দশটি যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন বিমান অধিকৃত ফিলিস্তিনে অবতরণ করেছে।  

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তেলআবিবে সামরিক সাহায্য ও রসদ পাঠাতে মোটেও বিলম্ব করেনি। আর তাই বিশ্ব-সমাজ ওয়াশিংটনকে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি গণহত্যা বা জাতিগত নিধন-অভিযানের শরিক বলে দায়ী করছে। 

ইসরাইল গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ও পশ্চিম তীরে মজলুম ও প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি বর্বরতায় এ পর্যন্ত গাজায় ৩৮ হাজার ৩৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৮ হাজারেরও বেশি আহত বা পঙ্গু হয়েছেন। 

১৯১৭ সালে উপনিবেশবাদী ব্রিটেনের ব্যালফোর নামক ঘোষণার আলোকে ইসরাইলের অস্তিত্ব গড়ে ওঠে এবং বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে ইহুদিদের ফিলিস্তিনে এসে অভিবাসন করতে উৎসাহ যোগায়। পরে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল তার অস্তিত্ব ঘোষণা করে। সেই থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা এবং গোটা ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডগুলোকে দখলে নেওয়ার নানা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের মাত্র কয়েকটি দেশের সরকার ইরানের দাবির সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইসরাইলি উপনিবেশবাদী শাসন বিলুপ্ত করার ও ইহুদিদের তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জোরালো দাবি জানিয়ে আসছে।