এলাকার আধিপত্য নিতে সন্ত্রাসী ভাড়া, দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৪

এ ঘটনায় জড়িত থা

এলাকার আধিপত্য নিতে সন্ত্রাসী ভাড়া, দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৪

প্রথম নিউজ, নরসিংদী: এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর দূর্গম চরাঞ্চল আলোকবালীতে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ভোরে সদর উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শটগানসহ নাজমুল ইসলাম (২০) ও আল আমিন (৩০) নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে ৫ লাখ টাকার চুক্তিতে পার্শ্ববর্তী নীলক্ষা এলাকা থেকে অস্ত্রসহ ৩ সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে আনা হয়। গ্রামবাসীর হাতে আটক হওয়ার পর অস্ত্রধারী নাজমুল এ কথা স্বীকার করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- আল আমিন (৩০), নাহিদ সরকার (২২), সাকিব সরকার (২৪) ও শফিউল্লাহ (৩৫)। টেঁটাবিদ্ধসহ আহতরা হলেন- হালিম মিয়া (৫০), হারুন মিয়া (২০), মাসুদ রানা (২৪), নাজমুল ইসলামসহ (২০) অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ২ জন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আল আমিনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিরা সবাই আলোকবালীর খোদাদিলা গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বজলুর রহমান ফাহিম ও যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিনের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ জের ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে মামলা পাল্টা মামলা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন এলাকাছাড়া হয়ে পড়েন।

বৃহস্পতিবার ভোরে জাকির হোসেন ও ফাহিমের সমর্থকরা বাশঁগাড়ী ও নীলক্ষা থেকে লোকজন নিয়ে এলাকায় ঢোকেন। এ খবর জয়নাল আবেদিন গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা তাদের প্রতিহত করেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শটগানসহ গ্রামবাসীর হাতে আটক পার্শ্ববর্তী নীলক্ষা গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, ৫ লাখ টাকা চুক্তির ভিত্তিতে আমরা অস্ত্রসহ ৩ জন নীলক্ষা গ্রাম থেকে এখানে এসেছি। কথা ছিল জাকিরের দলকে জিতিয়ে দেবো এবং যাকে পাবো তাকেই মারবো। জয়নাল আবেদিন বলেন, মামলায় আসামি হয়ে জাকির এলাকাছাড়া। হঠাৎ ফজরের নামজের পর পর জাকির ও ফাহিমের নেতৃত্বে বাশঁগাড়ী ও নীলক্ষার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এলাকায় ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। পরে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ঘেরাও দিয়ে অস্ত্রসহ নাজমুল নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

তবে জাকির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গতকাল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল। সেখানে আমাদের লোকজন যাওয়ায় জয়নাল ও তার ভাইয়েরা আমাদের লোকজনকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে জয়নাল লোকজন নিয়ে আমার ও আমার সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। ৫ লাখ টাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভাড়া করে আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ। এসব সঠিক নয়। নরসিংদী সদর থানার উপ-পরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। শটগানসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এখন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।