এক বছরে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ ভাগ

সোমবার প্রকাশ হয়েছে এসআইপিআরআই ইয়ারবুক ২০২৩। এই থিংকট্যাংক এতে বলেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনের হাতে ছিল ৩৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র। তা ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪১০। 

এক বছরে চীনের পারমাণবিক অস্ত্র বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ ভাগ

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বে ৯টি দেশের হাতে আছে পারমাণবিক অস্ত্র। এসব দেশ তা অব্যাহতভাবে আধুনিকায়ন করছে। কিন্তু ২০২২ সালে চীন তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি করেছে শতকরা ১৭ ভাগ। সুইডেনের স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্স ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এ তথ্য দিয়েছে। সোমবার প্রকাশ হয়েছে এসআইপিআরআই ইয়ারবুক ২০২৩। এই থিংকট্যাংক এতে বলেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চীনের হাতে ছিল ৩৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র। তা ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪১০। 

কিন্তু এখানেই থেমে যাচ্ছে না চীন। তারা তা বৃদ্ধি করেই যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার হাতে যতগুলো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে, চীনের হাতেও তত সংখ্যক থাকতে পারে। হ্যানস এম ক্রিস্টেনসেন বলেন, নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রের সম্প্রসারণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির কাজ শুরু করেছে চীন। 

ক্রিস্টেনসেন হলেন এসআইপিআরআইয়ের ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচির সহযোগী সিনিয়র ফেলো এবং ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস (এফএএস)-এর পারমাণবিক তথ্য বিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক। তিনি বলেন, চীন ঘোষণা দিয়েছে তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন পর্যায়ের পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হবে। কিন্তু তাদের বর্তমানের প্রবণতা জটিল। বিশ্বের সবচেয়ে বড় যোদ্ধা বাহিনী হলো চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। তারা সামরিক সরঞ্জাম এবং অস্ত্র আধুনিকায়ন করছে। 

এসআইপিআরআইয়ের হিসাব অনুযায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৫১২টি। যা ২০২২ সালের জানুয়ারির সংখ্যার চেয়ে ৮৬ বেশি। সেনাবাহিনীর কাছে মজুদ আছে এর মধ্যে প্রায় ৯ হাজার ৫৭৬টি। এসব অস্ত্রের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র এবং যুুদ্ধবিমানের মাধ্যমে মোতায়েন করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৪টি। প্রায় ২০০০ অস্ত্র- যার বেশির ভাগই রাশিয়া অথবা যুক্তরাষ্ট্রের, এসব অস্ত্র রাখা হয়েছে উচ্চ অপারেশনাল এলার্টে। 

এসআইপিআরআই বলেছে, চীন পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ বৃদ্ধি করলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া মিলে বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের শতকরা ৯০ ভাগের অধিকারী। ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ফলে উত্তেজনা সত্ত্বেও ২০২২ সালে এসব অস্ত্র স্থির পর্যায়ে ছিল বলে মনে হয়। কিন্তু এসআইপিআরআই বলেছে, চলমান যুদ্ধের ফলে দুই দেশেরই পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ক স্বচ্ছতা হ্রাস পেয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া বলেছে তারা ‘নিউ স্টার্ট ট্রিটি’তে অংশগ্রহণ স্থগিত করছে। 

এটি হলো পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি। মস্কো এই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিশোধ নিতে ওয়াশিংটন তাদের ক্ষেপণাস্ত্র এবং লঞ্চারের অবস্থান সম্পর্কে মস্কোকে আপডেট দেয়া বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি আগ্রাসন চালানোর পরপরই রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় কৌশলগত স্থিতিশীলতা বিষয়ক ডায়ালগও স্থগিত করেছে তারা। এর মধ্যে জুলাইয়ের শুরু নাগাদ বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা নিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তাদের ওপর এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে প্রতিশোধ নেয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। 

ওই থিংকট্যাকের হিসাবে ২০১৭ সালে সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করেছিল পিয়ংইয়ং। তাদের হাতে প্রায় ৩০টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে মনে করা হয়। এর বাইরেও আছে ওয়ারহেড। জানুয়ারিতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার দেশের অস্ত্রভাণ্ডার সূচকীয় গতিতে বাড়ানোর আহ্বান জানান।