আড়াইহাজারে হাত বাড়াইলেই মাদক সন্ধার পর রামচন্দ্রদী ঋষিপাড়া ও বালিয়াপাড়ায় বসে মাদকের হাট

সবচেয়ে বেশী হয় গোপালদী পৌরসভা ও ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নে। প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আড়াইহাজারে হাত বাড়াইলেই মাদক সন্ধার পর রামচন্দ্রদী ঋষিপাড়া ও বালিয়াপাড়ায় বসে মাদকের হাট

প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে দিনকে দিন বাড়ছে মাদক বিক্রি। যার ফলে ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ। উপজেলায় শতাধিকের চেয়ে বেশী মাদকের আস্তানা রয়েছে। কম বেশী পুরা এলাকাতেই মাদক বিক্রি হয়। সবচেয়ে বেশী হয় গোপালদী পৌরসভা ও ব্রাক্ষন্দী ইউনিয়নে। প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
আইন শৃংখলা বাহিনী পাচার হওয়া মাদক উদ্ধারে  চেক পোস্ট স্থাপন করলেও বাড়ীতে হানা দিচ্ছে না। যার কারণে আস্তানায় বসে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হচ্ছে। পুরা উপজেলায় ইয়াবার ডিলার রয়েছে অন্তত ২০ জনের মতো। এরা সহকারী দিয়ে মাদক বিক্রি করে থাকে। কে মাদক সেবন করে  আর কে বিক্রি করে তা বলা মুসকিল। সন্ধার পর রামচন্দ্রদী ধষিপাড়া ও বালিয়াপাড়ায় বসে মাদকের হাট । মাদক বিক্রিতাদের সহযোগিতা করেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল।
এলাকাবাসি জানিয়েছে, গোপালদী পৌর সভার সব চেয়ে বেশী মাদকের অস্তানা। শুধু মাত্র রামচন্দ্রদী,  ঋষিপাড়া  ও গোপালদী মেথর পট্রিতে  ইয়াবা ও চোলাই মদ এর ৩০টি স্পট রয়েছে। রামচন্দ্রদীতে  রুবেল, খুদি বেগম, হাবি , শফি, মোজাফফর, হাসিনা, জামাল, সাত্তার,  মুসা মিয়া, আবুল মিয়া,  রাহমাতুল্লাহ,  ইসমাইল মিয়া, আকাশ, মোসাম্মৎ ফালানি,  মোহাম্মদ কাশেম, মোঃ জাহাঙ্গীর, জাকারিয়া মোল্লাসহ আরো অনেকে । সাত্তারের বাড়ীতে চোলাই মদসহ চলে দেহব্যবসা।  উলুকান্দিতে হালিমা, রাসেল, মনির ও আক্তার বিশেষ অফারে মাদকের আস্তানা চালাচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রামগুলোতে মাদকের হাট বসছে। সাধারণ মানুষ কিছুই করতে পারছে না।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, আড়াইহাজার উপজেলায় শতাধিক স্পটে মাদকের পাইকারী কারবার চলছে। এ সকল স্পট থেকে মাদক নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার ৩১৬ টি গ্রামে। গ্রামের তরুণ ও যুবসমাজ মাদকে আসক্ত হয়ে নানান অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন যেটুকু তৎপরতা চালায় তা মাদক দমনে উপযুক্ত নয়। শুধু চিহ্নিত কিছু স্পটে অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করলেই মাদকের
আগ্রাসন থামানো মুশকিল। কেননা বিক্রেতারা ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে আজকাল লোকেশন বলে দিলে মাদক হোম ডেলিভারী দেয়।
মেঘনা নদীর তীর ঘেষে বিশনন্দী ইউনিয়নের অবস্থান। সেই বিশনন্দী গ্রামে হযরত আলী, আল আমিন মাদকের আসর জমায়। তাছাড়া মর্দাসাদি গ্রামের জাকারিয়া, জাঙ্গালিয়া গ্রামের  আক্তার, বিল্লাল, দাইরাদির ডেঞ্জারাস কবির, ডালিম, দয়াকান্দার শওকত, গিরদা গ্রামের ডালিম, দুপ্তারার আপন, বাজবী গ্রামের মোস্তফা, পুরিন্দা’র হারুণ, লস্করদীর বসির, মারুয়াদির জহির, বগাদি’র বাবুল, গাজীপুরার সুফিয়া. কাহিন্দি গ্রামের সেলিম, ছোট ফাউসা গ্রামের মাহাবুব, শরীফপুরের মোস্তফাসহ আরো কয়েকজন মাদক বিক্রি করছে।
তাছাড়া  আড়াইহাজার থানার পাশেই শিবপুর, দিঘীরপাড়, মুকুন্দী, গাজীপুরা, বাঘানগর, শ্রীনিবাসদী, মাহমুদপুর, উচিৎপুরা, প্রভাকরদী, ফাউসা, মারয়াদী, ব্রাহ্মন্দী, ঝাউগড়া, পাল্লা, কাঠালিয়াপাড়া, গিরদায় মাদকের জমজমাট আসর বসছে।  স্থানীয়রা জানান, মাদক বন্ধ করতে হলে মাদক বিক্রিতাদের বাড়ীতে গিয়ে অভিযান চালাতে হবে।
আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ জানান, আমরা মাদক বন্ধে নিজেরাই মাঠে নামব। তাছাড়াও সামাজিক ভাবে মাদক বন্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আড়াইহাজার থানার ওসি মুহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব জানান, গত ৩ মাসে আমরা ৪০টি মাদক মামলা দিয়েছি। আমাদের  নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।