আগ বাড়িয়ে ব্যবস্থা না নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ

শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এমন নির্দেশনা দেয়া হয়। সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। 

আগ বাড়িয়ে ব্যবস্থা না নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: চলমান পরিস্থিতিতে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে যাতে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে কর্মকর্তাদের। আগ বাড়িয়ে ব্যবস্থা না নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি অবহিত করে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়েছে কর্মকর্তাদের। শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এমন নির্দেশনা দেয়া হয়। সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। 

সাধারণত ডিএমপি কমিশনারই মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথি হন। এবার গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় আইজিপি নিজেই উপস্থিত থেকে নির্দেশনা দেন। তিনি পুলিশের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, নির্বাচনের প্রস্তুতি, রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য কর্মসূচির বিষয়ে করণীয়, ঢাকার পুলিশের ক্রাইম জোনের ডিসি-এডিসি ও এসিদের মধ্যে লিয়াজোঁ বাড়ানো, বিট পুলিশিংয়ে কার্যক্রম জোরদার করা, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জনসংযোগ বাড়ানোসহ নানা পরামর্শ দেন। 

সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, মাসিক অপরাধ সভায় প্রত্যেক মাসেই ঢাকার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং জননিরাপত্তার স্বার্থে বাড়তি কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সভায় ডিএমপি’র ৮টি ক্রাইম জোন ও ডিবি’র ৮টি বিভাগের ডিসি, এডিসি, এসি ও ৫০টি থানার ওসিসহ ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গতমাসে ঢাকার ৫০টি থানায় কতোটি মামলা হয়েছে এবং কতোটি মামলার চার্জশির্ট দেয়ার প্রক্রিয়ায় তা আলোচনা হয়। এ সময় ডিএমপি’র বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসা করে আইজিপি তার বক্তব্যে বলেন,  জনসেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। সকল পুলিশ সদস্যের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ আমরা আস্থার জায়গা সৃষ্টি করেছি। 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে, তাই  দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন হয়েছে। এ অবস্থা ধরে রাখতে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। সভায় বলা হয়, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যাতে কোনো পক্ষ পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে না পারে সেদিক সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি পালন করা হলেও সংশ্লিষ্টরা যাতে  কোনো বিশৃঙ্খলায় না জড়ায় সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি  নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। 

সূত্র জানায়, আলোচনায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি সামনে আসে। এ সময় উপস্থিত কর্মকর্তারা তাদের মতামত দেন। আইজিপি’র পক্ষ থেকে কর্মকর্তাদের পরামর্শ দেয়া হয় যে, মাঠের পরিস্থিতি সুচিন্তিতভাবে, বিচক্ষণতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা এবং প্রতি মুহূর্তের তথ্য আদান-প্রদান করতে হবে যাতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সঠিক করণীয় নির্ধারণ করতে পারেন। যদি ক্রাইম জোনের ডিসি কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারেন তাহলে ডিএমপি’র অপারেশন বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করতে বলা হয়। মাঠে দায়িত্ব পালন করা জোনের এসিদের সঙ্গে ডিসিদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়।   

বৈঠকের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) কেএন রায় নিয়তি মানবজমিনকে জানান, ‘মাসিক অপরাধ সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক উপস্থিত পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দিয়েছেন।’  মাসিক অপরাধ সভায় অতিরিক্ত আইজিপি কামরুল আহসান, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ  কে এম হাফিজ আক্তার রাসেল ও অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।