আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট খারিজ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহবুবুল উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ তিন বছর ও পাচার হওয়া ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরানোর দাবিতে চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
গত ১৯ আগস্ট মানবাধিকার সংগঠন সারডা সোসাইটির পক্ষে নির্বাহী পরিচালক আরিফুর রহমান মুরাদ ভূঁইয়া এ রিট করেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যার দায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও দলটির নিবন্ধন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ শাসনামলে পাচার করা ১১ লাখ কোটি টাকা ফেরত আনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আর্জি জানানো হয় রিটে।
রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জন বিভাগের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, আইন সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের বিবাদী করা হয়।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার ইচ্ছা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক অধিকারে, মিছিল মিটিংয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করার ইচ্ছা সরকারের নেই।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের ইচ্ছা অন্তবর্তী সরকারের নেই। সংবিধানে সংগঠন ও রাজনৈতিক দল পরিচালনার যে স্বাধীনতা রয়েছে, এই সরকার সেটিতে বিশ্বাস করে। গত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে জড়িতদের অন্যায়-অবিচারের বিচার আদালতের মাধ্যমে হবে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে যে নতুন স্বাধীনতা এসেছে, সেখানে সবার বাক্স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হতে হবে। রাজনৈতিক দল পরিচালনার স্বাধীনতা এ সময় বন্ধ হতে পারে না।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা নিয়ে মাঠের রাজনীতি আদালতে টেনে আনা ঠিক হবে না। এছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল এই রিট নিয়ে আসেনি। রিটে আওয়ামী লীগকে পক্ষভুক্ত করা হয়নি, কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি। এই রিট মেইনটেনেবল (গ্রহণযোগ্য) না। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়েছে, যা আমাদের কারোরই কাম্য ছিল না। গত কর্তৃত্ববাদী শাসনের সঙ্গে বিচার বিভাগের সমর্থন ও অবিচারের প্রেক্ষাপটেই এমন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে বিচার বিভাগে আক্রমণ হলে সেটি আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণের বিষয়।