শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
জুলাই হত্যা ও গুম
প্রথম নিউজ, অনলাইন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড এবং গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এর মধ্যে গুমের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ২২ জনের এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাসপোর্টও রয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ ও সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
পাসপোর্ট ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাসপোর্টের ডিজি আমাদের একটা সুখবর দিয়েছেন, ই-পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হলে বাংলাদেশের নাগরিকরা একটা এসএমএস পান। বাংলাদেশে এই সার্ভিস চালু আছে। বুধবার থেকে ই-পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদেশেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এই সার্ভিসটা চালু হবে। এর ফলে উনাদের হয়রানি কমে আসবে বলে আমরা আশা করি। দাপ্তরিক জটিলতার কারণে প্রায় ১ লাখ ৮৭ হাজার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রবাসী ভাইবোনেরা যারা আবেদন করেছিলেন, সেগুলো প্রিন্টিং-এর জন্য পেন্ডিং ছিল। তার মধ্যে ৮২ হাজার ৫৪৫টা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বিভিন্ন দূতাবাসে পৌঁছানো হয়েছে এবং এগুলো অচিরেই বিতরণ শুরু হবে। আমরা আশা করছি এই সেবা দু’টো যখন চালু হবে, এতে প্রায় ১ লাখ প্রবাসী উপকৃত হবেন। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসে যারা আবেদন করেন তাদের পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশকিছু উদ্যোগ চলমান আছে। এ নিয়ে সরকার কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে আমাদের জানানো হয়েছে- পাসপোর্ট অফিসের পাশে যে দোকনগুলো থাকে যেখানে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়, এই দোকানগুলো ঘিরে কিছু দালাল চক্র গড়ে ওঠে। যার ফলে সেবাপ্রার্থীর থেকে টাকা-পয়সা দাবি করা হয়। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য কিছু প্রোপার এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে। যারা পাসপোর্ট আবেদনকারীদের সাহায্য করবেন। এতে এই দালালের দৌরাত্ম্য অনেকটা কমে আসবে।
টেক্সটবুকের বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রায় ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার টেক্সটবুক বিতরণ করার কথা। ৬ই জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ কোটি ১ লাখ ৪৪ হাজার ৭১৬টি টেক্সটবুক ছাপা হয়েছে। এগুলোর অধিকাংশই বিতরণ হয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়া চলমান আছে। এখনো অনেক টেক্সটবুক বিতরণ করা যায়নি। এরফলে ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছে। তিনি বলেন, এটি ছাপার ক্ষেত্রে আগে কিছু জটিলতা ছিল। বেশির ভাগ টেক্সটবুক অন্যান্য বছর ভারত থেকে ছাপা হতো। এবার সবগুলো টেক্সটবুক বাংলাদেশ থেকে ছাপা হচ্ছে। এর জন্য সাময়িক কিছু অসুবিধা তৈরি হচ্ছে। এর জন্য সরকার আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিন্তু সরকার মনে করে, এর কিছু পজিটিভ দিক আছে। আমাদের বই ছাপার সঙ্গে ১০ থেকে ১২ লাখ শ্রমিক জড়িত। এতে অর্থনৈতিকভাবে তারা বেনেফিট হয়েছেন। এরমধ্যে একটা অসাধু চক্র গড়ে উঠেছিল। তারা এবারো অসহযোগিতা করেছে। এতে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে। সরকার আশা করছে, চলতি মাসের মধ্যে সবগুলো টেক্সটবুক ছাপা ও বিতরণ করা সম্ভব হবে।