৭ কোটি টাকার সেতুতে উঠতে লাগে মই

বর্তমানে বাঁশের মই বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছে প্রায় ১০-১২ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

৭ কোটি টাকার সেতুতে উঠতে লাগে মই

প্রথম নিউজ, সিরাজগঞ্জ: প্রায় ৪ বছর আগে নির্মাণ শেষ হয়। দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিল সুর্য নদীর উপর ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতুটি স্থানীয়দের কাজে আসছে না। বর্তমানে বাঁশের মই বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছে প্রায় ১০-১২ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।

এদিকে, উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের নির্মিত সেতুটির সংযোগ সড়কের কাজ কবে শেষ হবে এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বাড়ইয়া, ঝিকিরা, কালিগঞ্জসহ এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের। ফলে পথচারীদের চলাচলের জন্য নির্মাণাধীন সেতুটির দুই পাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মইয়ের মতো তৈরি করে পথচারীরা পারাপার হচ্ছেন। বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে কোন পরিবহণ যাতায়াতের সুযোগই নেই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি ২০১৯ সালে নির্মাণ করা হয়। তবে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এখনও সেতুটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ অঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক বাড়ইয়া খেয়াঘাট এলাকায় সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছিল এলাকাবাসী। অবশেষে সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের ৪ বছর পার হলেও দুই পাশের সংযোগ সড়ক তৈরি না হওয়ায় সেতু পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকাবাসীর। বর্তমানে সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না। ফলে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুর দুই পাশের মই বেয়ে পার হতে হচ্ছে তাদের। অবিলম্বে সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি করছেন স্থানীয়রা।
উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদ বলেন, উল্লাপাড়া-কালিগঞ্জ সড়কের বাড়ইয়া গ্রামের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন সংযোগ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে যথাসময়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় আবেদন করা হয়েছে। সেখান থেকে ভূমি জরিপের কাজও শেষ হয়েছে। কিন্তু ওই ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য এখনও নির্ধারণ কাজ সম্পন্ন হয়নি। তাই সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই সেতুর বাকি কাজ শেষ করা হবে।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল হোসেন বলেন, একটা ব্রিজ নির্মাণে বহুবিদ  কাজ জড়িত থাকে। ইতোমধ্যেই ব্রিজটি পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় ভূমি মালিকদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। আশা করছি দ্রুত অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে সেতু দিয়ে জন ও যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা জানান, বর্তমানে প্রশিক্ষণে আছি। সেতুটির বিষয়ে তিনি ভালোভাবে অবহিত নন। প্রশিক্ষণ শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেবেন।