৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে রিয়াজ বাহিনীর সদস্যরা

এছাড়া নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার, বালু‌ভরাটে চাঁদাবাজি, ভুলতা এলাকায় বাসে ডাকাতি, বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে রিয়াজ বাহিনীর সদস্যরা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায়  মামলা পরিচালনার জন্য অর্থ সংকটে ভুগছিল রিয়াজুল ইসলাম ওরফে শুটার রিয়াজ। এই টাকা সংগ্রহের জন্য এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সে। দাবি অনুযায়ী, পুরো টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ওই ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে শুটার রিয়াজ বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার, বালু‌ভরাটে চাঁদাবাজি, ভুলতা এলাকায় বাসে ডাকাতি, বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

রিয়াজ বাহিনীর পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, বুধবার (৬ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এবং সোনারগাঁ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছে বাহিনীর প্রধান রিয়াজুল ইসলাম ওরফে শুটার রিয়াজ (২২), মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে কালা ভাগিনা (২৩), মারুফ হোসেন মুন্না (২৩), মোহাম্মদ সেলিম (২৩) ও মোহাম্মদ মাহবুব মিয়া (২৩)। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ম্যাগাজিন, ১২ রাউন্ড গুলি, পাঁচটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, একটি মোটরসাইকেল ও ৬০০ পিস ইয়াবা।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তার ও বালু ভরাটে চাঁদা না দিলে কাজকর্ম বন্ধ করে দিতো রিয়াজ বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া, বাড়ি বা বিল্ডিং করার সময় চাঁদা না দিলে গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করতো। ভুলতা এলাকায় বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। এসব অপকর্মের কারণে এর আগেও তারা গ্রেফতার হয়। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ চক্রের ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুটার রিয়াজ অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ে তারই বড় ভাই আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকতের হাত ধরে। তখন সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে শওকত নিহত হয়। এছাড়া তার আরেক ভাই রয়েছে মোহাম্মদ আলী। সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে। পারিবারিকভাবেই সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে পরিচিত তারা। রিয়াজের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। বিভিন্ন অপকর্মের জন্যই সে ভাড়ায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে আসছিল। অস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে রিয়াজের বিরুদ্ধে। হত্যাচেষ্টা, মাদকসহ ১৫টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার অন্যতম সহযোগী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ৬টি মামলা রয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের কারণে রিয়াজের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে সে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চলতি বছরের ২৯ মার্চ রূপগঞ্জ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় একজন নিহত হন এবং ২০ জন আহত হন। রিয়াজের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে চলতি বছরের ১৫ মার্চ রূপগঞ্জ এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে শফিক ও শামীম মল্লিক নামে দুই ব্যক্তিকে অতর্কিত এলোপাতাড়ি গুলি করে তারা। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর রূপগঞ্জ এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে বিদ্যুতের বাড়িতে এসে বিদ্যুৎকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এছাড়া ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর রূপগঞ্জ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত হন। এসব ঘটনায় মামলা চলমান রয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom