হলমার্ক কেলেঙ্কারি সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডির বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন
প্রায় ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হলমার্ক কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

প্রথম নিউজ, ঢাকা : প্রায় ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হলমার্ক কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা ও সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলাটি অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই দুদক উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করবেন।
সংস্থাটির (জনসংযোগ) কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবীরের দাখিল করা সম্পদ বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নিজ নামে ৫৪ লাখ ৫১ হাজার ৬৯২ টাকার স্থাবর সম্পদ ও নগদ স্থিতিসহ ৬০ লাখ ২৬ হাজার ৭৭০ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ১ কোটি ১৭ লাখ ৭৮ হাজার ৪৬২ টাকার সম্পদের হিসাব পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন : হলমার্ক কেলেঙ্কারির ‘হোতা’ হুমায়ুন অবৈধ সম্পদেও ফাঁসছেন
সম্পদ বিবরণীতে গৃহ নির্মাণ ঋণ হিসাবে ৭ লাখ ২১ হাজার ৮৭৪ টাকা দায় দেনা আছে। আর হুমায়ুন কবীরের ২ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩৭ টাকার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ মোট অর্জিত সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ১২৫ টাকা।
দুদকের অনুসন্ধানে হুমায়ুন কবীরের গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৩ কোটি ৭ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫৬ টাকা। এক্ষেত্রে তার গ্রহণযোগ্য আয়ের চেয়ে ৪৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬৯ টাকা বেশি পাওয়া যায়। যা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সোনালী ব্যাংকের শেরাটন শাখা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে হলমার্ক গ্রুপ ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মে পর্যন্ত জালিয়াতির মাধ্যমে ২ হাজার ৯৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর অনুসন্ধানে নামে রাষ্ট্রীয় সংস্থা দুদক।
অনুসন্ধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৪ সালে ফান্ডেড মোট ১ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৩ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৩ টাকা আত্মসাতের দায়ে ৩৮ মামলার চার্জশিট দেয় দুদক। তবে নন-ফান্ডেড প্রায় ১ হাজার ৭১০ কোটি টাকার দুর্নীতি অনুসন্ধান এখন পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি।
২০১২ সালের ৪ অক্টোবর ফান্ডেড (সোনালী ব্যাংক থেকে সরাসরি ঋণ) ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২৭ জনকে আসামি করে ১১ মামলা এবং ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ফান্ডেড প্রায় ৩৭২ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আরও ২৭ মামলা দায়ের করে দুদক। পরে ফান্ডেড মোট ১ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৩ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৪ সালের বিভিন্ন সময়ে ৩৮ মামলার চার্জশিট দেয় সংস্থাটি। মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
যেখানে হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ এবং হলমার্ক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন শীর্ষ কর্তাদের আসামি করা হয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: