সরকারকে সতর্ক হতে বললেন জাপার কাজী ফিরোজ

রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে চলমান বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ওপর তৃতীয় দিনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।

সরকারকে সতর্ক হতে বললেন জাপার কাজী ফিরোজ
সংসদে জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকারকে সতর্ক হতে বলেছেন জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। সামনে বিপদ আসছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে চলমান বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৪৭ বিধিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবের ওপর তৃতীয় দিনের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আপনাদের অনেক অর্জন এই সংসদে। কিন্তু আপনাদের দুর্বলতাও আছে। আজ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে একট কমিশন গঠন করেত পারেননি। করা জড়িত ছিল- জাতি যদি তা জনতে না পারে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ছিল একটা বিরাট ষড়যন্ত্র। কয়েকজন ডালিম, নুর, হুদা, ফারুক-রশিদ গিয়ে করলো এটা শুধু নয়। এর পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল, সেই ষড়যন্ত্র আপনারা বের করলেন না। চরম বামপন্থী, দক্ষিণপন্থী তাদের নাম এখন উচ্চারণ করা যাবে না। কারণ তাদের নাম এখন নৌকায় উঠে গেছে, নৌকায় উঠে বসে আছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাত্র ৯ মাস বাকি আছে। এরপরই পার করে দেবে আপনাদের ৫ বছরের জন্য নিশ্চিন্ত, নৌকায় উঠে বসে গেছে সব। এই তো অবস্থা আপনাদের আওয়ামী লীগের।

তিনি বলেন, এই সংসদের নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু, আজ নেতৃত্ব দিচ্ছে তার কন্যা শেখ হাসিনা। এটা আমাদের জন্য গর্বের। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মতো এতো ক্ষমতাধর প্রধানমন্ত্রী আর কোনো দিন কোনো দেশে হয়েছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। তিনি তার পিতার সমস্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন এটা তার অঙ্গীকার। বঙ্গবন্ধু কিন্তু একদিনে হননি। উনি ঢাকার শহরে বসে নেতৃত্ব দেননি। সারা বাংলাদেশ ঘুরে ঘুরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এই জাপা নেতা বলেন, কিন্তু আজকে আমরা ঘরের বাইরে যাই না, একটা কাঁচের ঘরে বসে থাকি। যারা আসে, আমাদের লোকরা সব চেয়ে বড় কোরবানির গরুর মতো গলায় মালা দিয়ে নিয়ে আসে। এই যে টাকার বস্তা দিলাম নমিনেশন দিলে পাস করবে আলহামদুলিল্লাহ, তাকে নমিনেশন দেন। ত্যাগি কর্মীদের আপনারা দিচ্ছেন না, এটা হলো আরেকটা বড় দুর্বলতা আপনাদের। ৭৫ সালে আমরা প্রতিরোধ করতে পারিনি, আমাদের কাছে সব ছিল, রেকর্ডে বলে গেলাম, কিন্তু কোনো ডাক আমরা পাইনি। মাঝে মাঝে প্রত্যেকটা সিটে বলা হয় এবার আর লাঙল দেব না, নৌকা। এই ২৬টা সিট চান কেন, আপনাদের তিনশ সাড়ে তিনশ সিটিই দিয়ে দিয়েছি। আপনারা আমাদের এতো ভয় পান কেন? ভয়ের কোনো কারণ নেই দরকার হয় সব সিট আমরা ছেড়ে দেব, তবু আপনারা শান্তভাবে দেশ চালান।

সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেখলাম আমাদের পাশ থেকে বললো যে  সংবিধানে একটা বড় সংশোধনী আনতে হবে। কী সংশোধনী, বিসমিল্লাহ রাখা যাবে না। রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম রাখা যাবে না, এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আরে একটা সেটেল্ড ম্যাটার, মাত্র ৯ মাস বাকি আর নির্বাচনের। এই মুহূর্তে আরেকটা নতুন ইস্যু সৃষ্টি করে আপনাদের উদ্দেশ্যটা কী? আপনারা তো সহি সালামতে নৌকায় উঠে বসে আছেন। নৌকার কাণ্ডারী হচ্ছেন শেখ হাসিনা। তাকেই নৌকা পার করতে হবে, নৌকা বহন করতে হবে। কিন্তু আপনারা তো নিশ্চিত হয়ে বসে আছেন, পার হয়ে চলে যাবেন আরও ৫ বছরের জন্য। আমি ছাত্রলীগ-যুবলীগ করেছি, কিন্তু নমিনেশন পাইনি। আমার দোষ ঘর ছেড়েছি, ঘর কী আমি ছাড়ছি? ঘর থেকে আপনারা বের করে দেবেন আর আমি গাছ তলায় বসে থাকব?  এই তো আমাদের নিয়তি। ইতিহাস বলেন, ইতিহাস আমিও বলতে পারি। এভাবে দেশ চলবে না। এখনও সতর্ক হন, সামনে কিন্তু বিপদ আসতেছে। আজকে একটা বড় দল তারা নির্বাচনে আসবে না বলে দিয়েছে।