‘স্ত্রীকে খুন করেছি, সঙ্গে চলেন লাশ দেখাব’: থানায় গিয়ে স্বামী
থানার বারান্দায় দাঁড়ানো কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবলকে বলেন, ‘তার নাম রনি বিশ্বাস (৪২)। বাড়িতে তিনি স্ত্রী রত্না খাতুনকে (৩৫) খুন করে এসেছেন।’ কথা শুনে হতবাক ওই পুলিশ সদস্য।
প্রথম নিউজ, কুষ্টিয়া: ঘড়ির কাটায় রাত ঠিক সাড়ে ৮টা। খালি গায়ে লুঙ্গি পরিহিত এক ব্যক্তি উদভ্রান্তের মতো ছুটে আসেন কুষ্টিয়া মডেল থানায়। থানার বারান্দায় দাঁড়ানো কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবলকে বলেন, ‘তার নাম রনি বিশ্বাস (৪২)। বাড়িতে তিনি স্ত্রী রত্না খাতুনকে (৩৫) খুন করে এসেছেন।’ কথা শুনে হতবাক ওই পুলিশ সদস্য।
প্রথমে ওই ব্যক্তিকে মানসিক বিকারগ্রস্ত ভেবে বিষয়টি আমলে নেননি। পরে ওই ব্যক্তিই বলেন, ‘আমার সঙ্গে চলেন, লাশ দেখাব।’ এ কথা শুনে কিছুটা নড়েচড়ে বসে পুলিশ। টহল পুলিশের গাড়িতে ওই ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় গিয়ে পাওয়া যায় মরদেহ।
কুষ্টিয়া শহরের কোটপাড়া এলাকায় রাজু আহম্মেদ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাতেই রত্না খাতুন নামে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। নিহত রত্না জেলার মিরপুর উপজেলার চারমাইল এলাকার নাজিম উদ্দীনের মেয়ে। তার স্বামী রনি হোসেন (৪২) কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন ইজিবাইক চালক।
কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিশিকান্ত সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক ব্যক্তি থানায় প্রবেশ করেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যকে (সেন্ট্রি) জানান, তিনি বাসায় স্ত্রীকে হত্যা করে এসেছেন। প্রথমে পুলিশ সদস্য বিষয়টি বিশ্বাস করেনি। ওই ব্যক্তি নিজের নাম রনি হোসেন ও বটতৈল এলাকায় বাড়ি পরিচয় দিয়ে আবারও স্ত্রীকে হত্যা করার কথা জানান।
নিশিকান্ত সরকার বলেন, আমিও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এভাবে কেউ হত্যা করে নিজে থেকে থানায় ছুটে আসে নাকি? রনি এ সময় সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন। এক পর্যায়ে টহল পুলিশের গাড়িতে করে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে শহরের কলেজ মোড় এলাকায় রাজু আহম্মেদ সড়কের একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবনের তৃতীয় তলার ডান পাশের ফ্ল্যাটে যাওয়া হয়। সেখানে বাসার শৌচাগারের ভেতরে রত্না খাতুনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাত দিয়ে গলাটিপে হত্যার পর মরদেহ শৌচাগারে রেখেছিলেন বলে দাবি করেন রনি।
পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার আরও বলেন, হত্যার প্রাথমিক কারণ হিসেবে রনি বিশ্বাস দাবি করেছেন পারিবারিক কলহের কারণে তিনি তার স্ত্রী রত্নাকে একাই গলাটিপে হত্যা করেছেন। তারা শহরতলীর বটতৈল এলাকায় থাকেন। বুধবার সন্ধ্যায় শহরের কলেজ মোড় এলাকায় রনির মায়ের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসেন। সেখানে কৌশলে তাকে গলাটিপে হত্যা করেন।
পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রনি বিশ্বাসের মা লিলি বেগমকেও (৫৫) থানায় নিয়ে এসেছে। রনি ও তার মাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews