সেতু হয় না, সাঁকোই ভরসা ২০ হাজার মানুষের

নবাবগঞ্জ উপজেলায় নয়নশ্রী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকোই যাতায়াত করার একমাত্র পথ এলাকাবাসীর।

সেতু হয় না, সাঁকোই ভরসা ২০ হাজার মানুষের
ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো

প্রথম নিউজ,ঢাকা: ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় নয়নশ্রী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকোই যাতায়াত করার একমাত্র পথ এলাকাবাসীর।

জানা যায়, জনপ্রতিনিধিদের বার বার পাকা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে যাতায়াতে দুর্ভোগে পোহাচ্ছে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। প্রায় তিন যুগ ধরে এ সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে আসছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর এ দুর্ভোগ নিয়ে প্রতি বছরই কোনো না কোনো সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরা হলেও দৃষ্টি পড়ছেনা প্রশাসনের।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নয়নশ্রী ইউনিয়নের তুইতাল বগচর এলাকায় নির্মিত ইছামতি নদীর ওপর আনুমানিক প্রায় ৫০-৬০ মিটার দূরত্ব বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে আশপাশের ১৫টি গ্রামের মানুষ। সাঁকো ভেঙে পড়ে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়ার আশংকাও রয়েছে। তবুও প্রতিনিয়ত আতঙ্ক নিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ।

এই সাঁকো দিয়ে শিকারীপাড়া ইউনিয়নের নারায়ণপুর, সুজাপুর, শেরপুর এবং নয়নশ্রী ইউনিয়নের নতুন ও পুরান তুইতাল, বকচর, বরইচড়া, আফজালনগর, চর শৈল্যা, তাশুল্লা, বাংলাবাজার, বিলপল্লী এবং বারুয়াখালী ইউনিয়নের কাউনিয়াকান্দি গ্রামের লোকজন এ পথ দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া সাঁকোটি পার হয়ে তুইতাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বকচর উচ্চবিদ্যালয়, তুইতাল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, তুইতাল বাজার, মসজিদ, তুইতাল গির্জা, ব্যাংক ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লোকজন প্রতিনিয়ত চলাচল করেন।

স্থানীয়রা জানায়, নির্বাচনের আগে একাধিক জনপ্রতিনিধিরা এ এলাকার জনসাধারণের চলাচলের জন্য একটি পাকা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ এর বাস্তবায়ন করেনি। এছাড়া এলাকার মানুষের যাতায়ত ব্যবস্থা নিয়ে একাধিকবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোনো কাজ হয়নি। বকচর গ্রামের আব্দুল ওহাব বলেন, এই সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য যেন এটা একটা মরণফাঁদ।

কাউনিয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেতু নির্মিত হলেই এলাকাবাসীর জন্য যাতায়াত ব্যবস্থাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন সুযোগের সৃষ্টি হবে।

বকচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সজিব দাস বলেন, এলাকার শত শত শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করে। এখানে সেতু না হওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টির দিনে বাঁশের সাঁকো ভিজে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এতে অনেকই পড়ে গিয়ে আহত হয়। ভয়ে বেশকিছু ছাত্রী নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে না। এমনকি ছাত্রীরা বাঁশের সাঁকো পারাপারের ভয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছে।

তুইতাল গ্রামের মোস্তফা কামাল বলেন, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের কাছে আসেন ভোট চাইতে। অনেকেই প্রতিশ্রুতি দেন আমাদের যাতায়াতের পথে সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার। কিন্তু নির্বাচনের পর কেউ আর গ্রামবাসীর খোঁজ নেন না। নয়নশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ চৌধুরী বলেন, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সাঁকোটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। আশা করছি, শিগগিরই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে কাজ শুরু হবে।

নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, আমি নতুন এসেছি। স্থানীয় এমপি সালমান এফ রহমানসহ উপর মহলে কথা বললে দ্রুত পাকা সেতু তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom