শৈলকুপা থানায় হামলা আসামি ছয় শতাধিক
রোববার রাতে শৈলকুপা থানার ডিউটি অফিসার এসআই লাল্টু রহমান বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
প্রথম নিউজ, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ হামলার ঘটনায় ৬ শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। রোববার রাতে শৈলকুপা থানার ডিউটি অফিসার এসআই লাল্টু রহমান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। মামলায় ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা আরও ৫শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ সোমবার ভোর পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তার এড়াতে পুরুষশূন্য ৩ গ্রাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শৈলকুপা থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, হামলায় অংশ নেয়া দুর্বৃত্তরা অধিকাংশ ধাওড়া ও শৈলকুপা শহরের পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়াও মনোহরপুর ইউনিয়নের বিজুলিয়া ও শৈলকুপা পৌরসভার বাসিন্দারাও এই হামলায় অংশ নেয় বলে ভিডিও ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে। সোমবার দিনব্যাপী ধাওড়া গ্রামসহ শৈলকুপার বিভিন্ন স্থানে সোর্সের মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান যেনে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে পুলিশি সাঁড়াশি অভিযানের কারণে ধাওড়াসহ আশপাশের তিনটি গ্রামের পুরুষ সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। সোমবার সারা দিন ধাওড়া বাজারের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ দেখা গেছে। রাস্তায় মানুষের চলাচল খুবই কম। গ্রামগুলোর মধ্যে এক সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। গ্রামগুলোতে নারী ও শিশু ছাড়া কোনো পুরুষের দেখা মিলছে না।
কেটে ফেলা হলো গুলিবিদ্ধ ফিরোজের হাত
এদিকে শৈলকুপা থানায় হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ফিরোজ শিকদারের ডান হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ফিরোজ শিকদার ধাওড়া গ্রামের কাশেম শিকদারের ছেলে। আহত ফিরোজ শিকদার বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ কোনোভাবেই ফিরোজের হাতটিকে টিকিয়ে রাখতে পারেনি বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরে ধাওড়া গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে ও শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক শিকদারকে পুলিশ একটি মারামরি মামলার গ্রেপ্তার করে। তাকে গ্রেপ্তারের পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শ’ শ’ মানুষ আসামি মোস্তাককে ছাড়াতে শৈলকুপা থানা ঘেরাও করে হামলা করে। এ সময় হামলাকারীরা থানা লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ইট ছুড়তে থাকে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বাধ্য হয়ে শটগানের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ১০ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩৫ জন হামলাকারী আহত হন। এর আগে গত শুক্রবার বিকালে স্থানীয় এমপি নায়েব আলী জোয়ারদার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর উপস্থিতিতে শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আযম থানার ওসি সফিকুল ইসলাম চৌধুরীকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে তাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে থানা থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেন। তার এই হুমকির দুইদিন পর থানায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।