শিগগিরই প্রশাসনে বড় পদোন্নতি

শিগগিরই প্রশাসনে বড় পদোন্নতি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বর্তমান সরকার শিগগিরই প্রশাসনে ফের বড় পদোন্নতি দিতে যাচ্ছে। এই দফায় উপ-সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হবে। চলতি মাসের শেষের দিকে অথবা আগামী মাসে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের আমলনামা যাচাইবাছাই করেছে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি)। কমিটি ইতিমধ্যে কয়েকটি বৈঠকও করেছে। এটি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়াও এরই মধ্যে ২১ জন ডিসি প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তাদেরও মাঠ থেকে তুলে আনা হবে। তাদের স্থানে দেয়া হবে নতুন ডিসি।

সূত্র মতে, সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হবে এ দফায়। এক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ৩০তম বিসিএস প্রাধান্য পাচ্ছে। এ ছাড়া এ দফায় যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি পাবে নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে বিসিএস ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তারা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশিদের সভাপতিত্বে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে এসএসবি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, পদোন্নতি কার্যক্রম নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবেই হচ্ছে। দু’টি ব্যাচ একটি অতিরিক্ত সচিব হবে অন্যটি হবে উপ-সচিব। উপ-সচিব পদোন্নতিই আগে হবে। গত ১৫ই জুলাইও পদোন্নতির জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশিদের সভাপতিত্বে বৈঠক করে এসএসবি। বৈঠকে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের কর্মজীবনের সব নথি, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতিসহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। আরও দু’-একটি বৈঠকের পর পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসেই উপ-সচিব পদে পদোন্নতি হতে পারে। সূত্র জানায়, উপ-সচিব পদে পদোন্নতির বিসিএস ৩০তম ব্যাচের ২৭৭ জন এবং বিলুপ্ত ইকোনমিক ক্যাডারের ২৫ জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ফলে প্রশাসন ক্যাডারের ৩ শতাধিকের বেশি কর্মকর্তা পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। এ ছাড়াও অন্যান্য ক্যাডারের ২২৩ কর্মকর্তা উপ-সচিব পুলে যোগ দিতে বিভিন্ন সময়ে আবেদন করেছেন। পদোন্নতি বিধিমালা অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পাঁচ বছর চাকরিসহ কমপক্ষে ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।

৩০তম ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তা আলাপকালে জানান, চাকরির এক যুগ পার হলেও এখনো উপ-সচিব পদোন্নতি জোটেনি তাদের ভাগ্যে। তবে তারা আশা করছেন বর্তমান সরকারের সময়ে তারা একটা পদোন্নতি পাবেন। এদিকে যুগ্ম সচিব হিসেবে দুই বছর চাকরি করলেই অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জিত হলেও এখনো পিছিয়ে আছে প্রশাসনের ২০তম ব্যাচ। এই ব্যাচের কর্মকর্তারা ২০২১ সালে যুগ্ম সচিব হন। এদিকে, কয়েক মাস ধরে চলছে ডিসি নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়া। সর্বশেষ ২৮ ব্যাচের তালিকা (ফিট লিস্ট) তৈরির কাজ শুরু হলেও কবে শেষ হবে কেউই বলতে পারছেন না। তবে আগামী মাসে হতে পারে বলে সূত্রগুলো  বলছে। জানা গেছে, বর্তমানে ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা সারা দেশে ডিসির দায়িত্ব পালন করছেন। এরই মধ্যে ২১ জন ডিসি প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তাদের জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়নি। নতুন ডিসি নিয়োগের আগেই জেলায় কর্মরত ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মাঠ থেকে তুলে আনা হবে। সেখানে ২৫, ২৭ এবং ২৮ ব্যাচ থেকে ডিসি নিয়োগ দেবে সরকার। এ ছাড়া ২৫ ও ২৭ ব্যাচের যেসব কর্মকর্তা মাঠে সঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না তাদের তুলে আনা হবে। বাকি কয়েকজনের জেলাও রদবদল হতে পারে। সূত্র জানান, নির্বাচন তফসিলের আগে যারা ডিসি হিসেবে কাজ করছেন তাদের মধ্যে যারা মাঠ থেকে উঠে আসবেন সেখানে নতুনদের নিয়োগ দেয়া হবে। নতুন ও পুরনো ডিসিরা মিলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। 

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়া ২১ জন ডিসিকে প্রত্যাহার করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। যোগ্য কর্মকর্তা বাছাইয়ের কাজটি শেষ হলেই তাদের পরিবর্তন করা হতে পারে। বাছাইয়ের কাজটি শেষ হতে পারে এই মাসের মধ্যেই।

যেসব জেলায় পরিবর্তন হতে পারে: ২১ জেলায় বর্তমানে যারা ডিসির দায়িত্বে আছেন, তারা গত মার্চে উপ-সচিব থেকে পদোন্নতি পেয়ে যুগ্ম সচিব হয়েছেন। তবে ডিসির পদটি উপ-সচিব পদমর্যাদার। ফলে এই জেলাগুলোতে বদলির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এই জেলাগুলো হলো- ঝালকাঠি, নোয়াখালী, চাঁদপুর, বগুড়া, ঢাকা, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, ঝিনাইদহ, পঞ্চগড়, মাগুরা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মাদারীপুর, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা ও কিশোরগঞ্জ।