শিক্ষাখাতে ভয়াবহ দুর্নীতি হচ্ছে: সংসদে এমপিদের বক্তব্য

গতকাল সংসদ অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ খাতে ব্যয় বরাদ্দের উপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন।

শিক্ষাখাতে ভয়াবহ দুর্নীতি হচ্ছে: সংসদে এমপিদের বক্তব্য

প্রথম নিউজ, অনলাইন: শিক্ষাখাতে ভয়াবহ দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। তারা দুর্নীতি বন্ধ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানিয়েছেন, শিক্ষার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গতকাল সংসদ অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ খাতে ব্যয় বরাদ্দের উপর আনা ছাঁটাই প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ বলেন, শিক্ষক নিয়োগের পরও সমস্যার সামাধান হচ্ছে না। শিক্ষকরা  গ্রামে যেতে চায় না। এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীদের নিজের এলাকায় পদায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। স্বতন্ত্র সদস্য মো. আবুল কালাম বলেন, শিক্ষায় দুর্নীতি হচ্ছে, সর্বক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্নীতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। কাগজে কলমে দুর্নীতি, টাকা ছাড়া কিছু করা যায় না। 

সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির হাত থেকে শিক্ষাকে রক্ষা করতে হবে। জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে আগামী এক বছরে ৫ লক্ষ শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থান করতে হবে। জাতীয় পর্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। হয়েছে ভবনের পরিবর্তন, শিক্ষার মানের পরিবর্তন হয়নি। ভবন করা হলো, কিন্তু শিক্ষক নাই, বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত নাই। শিক্ষার উন্নয়নের থেকে দুর্নীতির দিকেই নজর বেশি সংশ্লিষ্টদের। 

আরেক স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহিদী বলেন, শিক্ষায় প্রশাসনিক ব্যয় কমিয়ে গবেষণার দিকে নজর দেয়া দরকার। আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে গবেষণার বেহাল দশা। বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষকদের গবেষণায় শিক্ষক প্রতি ব্যয় মাত্র এক লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যদি গবেষণার সুযোগ দিতে না পারি অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। গবেষণার বরাদ্দ বাড়াতে হবে। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানান, গত ৬ মাসে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে প্রায় ৯৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৭৩২টি ভবন সরাসরি বিদ্যালয়ের জন্য তৈরি করতে পেরেছি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে।

এই অধিদপ্তরের বাইরেও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণ হচ্ছে। গবেষণা খাতে বরাদ্দ প্রসঙ্গে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, গবেষণা খাতে প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর থেকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রতিষ্ঠা করা এবং গবেষণা খাতে সর্বপ্রথম সরকারি বরাদ্দ দেয়া শুরু করেছিলেন। যার সুফল সরাসরি আমরা পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, গবেষণায় ১ লাখ টাকা দেয়া হয় এটা সত্য নয়। আমাদের নানা খাত থেকে গবেষণায় বরাদ্দ দেয়া হয়। অনেক সময় দেখি গবেষণায় বরাদ্দকৃত অর্থও যথাযথভাবে খরচের ক্ষেত্রে সেই অর্থ রয়ে যায়।