লেবাননে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে বাড়ছে আত্মহত্যা

জাতিসংঘের হিসাবে সেখানকার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগের বেশি দারিদ্র্যে নিপতিত হয়েছে। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহ আত্মহত্যা করেছেন কমপক্ষে চারজন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ।

লেবাননে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে বাড়ছে আত্মহত্যা
লেবাননে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে বাড়ছে আত্মহত্যা

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক : লেবাননে সন্তনের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না অভিভাবকরা। জাতিসংঘের হিসাবে সেখানকার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগের বেশি দারিদ্র্যে নিপতিত হয়েছে। এ অবস্থায় গত এক সপ্তাহ আত্মহত্যা করেছেন কমপক্ষে চারজন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। বলা হয়েছে, দেশটিতে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা যে পর্যায়ে আছে, তাতে মানুষ টিকে থাকতে পারছে না। ইন্টারনাল সিকিউরিটি ফোর্সেসের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়াব অডি এক ব্যাংক থেকে অর্থ তুলতে পারেননি। এর ফলে ওই ব্যাংকের ভিতর তিনি হার্টএটাকে মারা গেছেন। আসলে দেশটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। বৈরুত ভিত্তিক গবেষণা কনসালট্যান্সি ফার্ম ইনফরমেশন ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, ২০২২ সালে সরকারি হিসাবে সেখানে আত্মহত্যা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। 

২০১৩ থেকে ২০২২ সালে গড়ে আত্মহত্যা করেছেন ১৪৩ জন। এর মধ্যে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ১৭২ জন আত্মহত্যা করেন। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যেসব মানুষ আত্মহত্যা করেছেন তারা বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং জীবন ধারণের পরিবেশের কারণে তা করেছেন। 

এর মধ্যে গত রোববার মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তিনি ওয়ারদানিয়ে শহরে নিজের বাড়িতে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি সিডন প্যালেস অব জাস্টিসে কাজ করতেন। দেশটির অর্থনীতি বিষয়ক প্রসিকিউটর জজ আলি ইব্রাহিমের ভাতিজা তিনি। এর আগের দিন দক্ষিণ লেবাননের জারারিয়া শহরে আত্মহত্যা করেন হুসেইন আল আবেদ মরুয়ে (৪০)। তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় বাড়ির পাশের ঝাড় থেকে। তিনি নোটে বলে গেছেন, অর্থনৈতিক এবং আর্থিক একটানা সংকটে পড়ে এ কাজ করেছেন। 

জারজুয়া এলাকার বাসিন্দা মুসা আল শামি আত্মহত্যা করেছেন। এক বন্ধুর কাছে তিনি রেকর্ডেড বার্তা রেখে গেছেন। সেই রেকর্ড অনলাইনে শেয়ার হয়েছে। এতে তিনি তার সন্তানদের দেখাশোনা করার অনুরোধ করেছেন।  তিনি বলেছেন, অর্থনৈতিক চাপ আর বহন করতে পারছেন না। তিনি অত্যন্ত কঠিন সময়ে আছেন। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না। 

মাউন্ট লেবাননে এক যুবক তার স্ত্রীকে এবং চার বছর বয়সী এক শিশুকে গলাটিপে হত্যা করেছে। এরপর তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কারণ, তিনি ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। বেসরকারি সংগঠন এমব্রেস লেবানন আত্মহত্যাকে সংজ্ঞায়িত করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মানসিক, সামাজিক, জৈবিক, সাংস্কৃতিক, পরিবেশগত বিভিন্ন ফ্যাক্টরের কারণে মানুষ আত্মহত্যা করছে। ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপগুলোর মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। কারণ, তারা বেশি বৈষম্যে ভোগেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: