রংপুর-ঢাকা রুটে মধ্যরাতেও ভোগান্তি, ক্ষোভ যাত্রীদের

নগরীর সাতমাথা থেকে মডার্ন মোড় ও দর্শনা মোড় থেকে দুই দিকে গাড়ির চাপে দীর্ঘ জট লেগে আছে সড়কে।

রংপুর-ঢাকা রুটে মধ্যরাতেও ভোগান্তি, ক্ষোভ যাত্রীদের

প্রথম নিউজ,রংপুর: রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া থেকে ঢাকার আশুলিয়া যাবেন শাপলা রানী। পাঁচ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে বসে আছেন বাসের অপেক্ষায়। সঙ্গে শাশুড়ি নীলা রানীও রয়েছেন। সারিবদ্ধভাবে অসংখ্য বাস দাঁড়িয়ে থাকলেও ভাড়া সাধ্যের মধ্যে না থাকায় শাপলার স্বামী তাপস রায় এদিক সেদিক ঘুরে ঘুরে দরদাম করছেন।

শুক্রবার (৬ মে) রাত ৮টা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড়ে বসে থাকলেও ১ হাজার ২০০ টাকা ভাড়া চাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আশুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন শাপলা। রংপুর অঞ্চলের প্রবেশ দ্বার মডার্ন মোড়ে শক্রবার (৬ মে) রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেখা যায় শত শত অপেক্ষমাণ যাত্রী। নগরীর সাতমাথা থেকে মডার্ন মোড় ও দর্শনা মোড় থেকে দুই দিকে গাড়ির চাপে দীর্ঘ জট লেগে আছে সড়কে। এ কারণে ধীরে ধীরে চলছে গাড়িগুলো। মধ্যরাতেও ভোগান্তির শেষ নেই যাত্রীদের।

শাপলা রানী বলেন, ঈদের ছুটিতে জনপ্রতি ৮০০ টাকা ভাড়া দিয়ে স্বামীসহ বাড়িতে এসেছিলাম। এখন কর্মস্থলে ফিরতে গিয়ে জনপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা করে চাওয়া হচ্ছে। অপেক্ষা করছি, দাম কম পেলেই রওনা দেবো। যশোর থেকে আসা আয়োজন ট্যুর অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চালক মো. জিয়াউর বলেন, ঈদের আগে রিজার্ভ করে রংপুরে এসেছি। এখন মডার্ন মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছি। তার গাড়িতে ঢাকা যেতে ভাড়া পড়বে ৯০০ টাকা।

যাত্রীদের নিজের গাড়িতে তুলতে হাঁকডাক করছিলেন সহকারীরা। স্থানীয় মোটরশ্রমিক বেলাল হোসেন বলেন, কোনো উপায় নেই। রাস্তায় জায়গায় জায়গায় চাঁদা দিতে হয়। জিনিসপত্রের দাম বেশি। ঈদে যাত্রী বেশি, তাই ভাড়াও বেশি। এ অবস্থায় ভাড়া বেশি নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। অনেক যাত্রী কম ভাড়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ বাড়ি ফিরেও যাচ্ছেন। রাত গভীর হলে যাত্রীর চাপ কিছুটা কমবে। তবে শনিবার সকাল থেকে আবারও চাপ বাড়বে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহনের সহকারী সোহরাব রোস্তম বলেন, আধঘণ্টার বেশি সময় ধরে যানজটে আটকে আছি। কখন গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হবে তা বলা যাচ্ছে না।

সাগর পরিবহনের সুপারভাইজার উজ্জল জানান, আগে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা হলেই রংপুর থেকে ঢাকা যেতাম। এখন ঈদের বাজারে যাত্রীর চাপ বেশি, তাই ভাড়া ৮০০ টাকা করে নিচ্ছি। মাহমুদউল্লাহ নামে এক যাত্রী বলেন, দেশটা তো মগের মুল্লুক। যে যা চায় তা করতে পারে। ঢাকার ভাড়া ১ হাজার ২০০ টাকা হয় কী করে? এসব গাড়ি তো একটাও এসি না। নরমাল গাড়ির ভাড়া কি এতো? প্রশাসন কি দেখে না?

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ভাড়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসন এবং ভোক্তা অধিকার দেখে। আমরা আইনশৃঙ্খলা দেখি। আমরা তৎপর আছি। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং যানজট নিরসনে কাজ করছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom