Ad0111

মানসিক চাপে ভুগছে ৬১.৫ শতাংশ শহুরে কিশোর-কিশোরী

বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল গবেষণা নিবন্ধটি অনুমোদন দিয়েছে।

মানসিক চাপে ভুগছে ৬১.৫ শতাংশ শহুরে কিশোর-কিশোরী
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশের শহর এলাকার ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ কিশোর-কিশোরী মাঝারি থেকে চরম মাত্রার মানসিক চাপে ভুগছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষকরা বলছেন, গত দুই বছরের মহামারি পরিস্থিতি তাদের স্বাস্থ্যকে আরও উদ্বেগজনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

গত ১৭ ডিসেম্বর স্প্রিংজার নেচার প্রকাশনার বায়োমেড সেন্ট্রাল (বিএমসি) সিরিজের জার্নাল অব হেলথ, পপুলেশন অ্যান্ড নিউট্রিশনে গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল গবেষণা নিবন্ধটি অনুমোদন দিয়েছে।

গবেষণার ফলাফলে উঠে আসে, দেশের শহরে থাকা কিশোর-কিশোরীদের ২৮ দশমিক ২ শতাংশ স্থূলতায় আছে, ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ ঘর ও বাইরে এবং মাত্র ২ দশমিক ৭ শতাংশ সক্রিয় জীবনযাপন করছে।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, কিশোর-কিশোরীদের মানসিক চাপ খাদ্যাভ্যাস, শরীরের উচ্চতা ও ওজনের আনুপাতিক হারের (বিএমআই) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। পাশাপাশি শারীরিক ক্রিয়াকর্ম স্থূলতা ও উচ্চ মানসিক চাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কিশোরদের তুলনায় কিশোরীরা অনেক বেশি মানসিক চাপে ভুগছেন।

উচ্চমাত্রার মানসিক চাপে থাকা কিশোর-কিশোরীদের ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ স্থূলতায় এবং ধূমপানকারীদের ৮ দশমিক ৩ শতাংশও এ তালিকায় আছে। যেখানে গবেষণায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বিশ্বের কিশোর-কিশোরীদের ২০ শতাংশ মানসিক চাপে ভুগছে।

এছাড়া উল্লেখ করা হয়েছে, কিশোরদের ৫৩ দশমিক ৮ শতাংশ স্থূলতায় এবং ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ মাঝারি থেকে চরম মাত্রার মানসিক চাপে ভুগছে। ঘর ও বাইরে জীবনযাপনকারীরা প্রায় আড়াইগুণ, খাদ্যাভ্যাস সমস্যায় আছে দেড় গুণেরও বেশি এবং বিনোদনকেন্দ্রিক মানসিক চাপ থাকা কিশোর-কিশোরীরা ১ দশমিক ১৩ গুণ বেশি স্থূলতার ঝুঁকিতে।

২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসে দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ৫০০’র অধিক শিক্ষার্থী আছে এমন ৩২টি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৪ হাজার ৬০৯ জন কিশোর-কিশোরীর আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়। উত্তরদাতাদের বয়সসীমা ছিল ১৩ থেকে ১৯ বছর। এক্ষেত্রে ক্রোনিক রোগ যেমন- অ্যাজমা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্ত কিশোর-কিশোরীদের থেকে তথ্য নেওয়া হয়নি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সহায়তায় বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশন এ গবেষণাটি পরিচালনা করে। গবেষণাটির প্রধান গবেষক ছিলেন বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. এস কে রায়। তার সঙ্গে ছিলেন আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআরবি) অধ্যাপক ড. নুরুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রুমানা রইছ, বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের খুরশিদ জাহান, আম্বিনা ফেরদৌস, সামিনা ইসরাত ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম।

এ বিষয়ে ডা. এস কে রায় বলেন, কাজটা খুব প্রয়োজনীয় ছিল। এই ফিল্ডে ভালো কোনো তথ্য ছিল না। এ গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী সরকার কিশোর-কিশোরীদের মানসিক চাপ কমাতে নীতিনির্ধারণ করবে। এ বিষয়টা নিয়ে আরও বেশি চিন্তা করা দরকার।

গবেষক ড. রুমানা রইছ বলেন, গবেষণাটি বিশ্লেষণের মুখ্য চ্যালেঞ্জ ছিল তিনটি আন্তর্জাতিক প্রশ্নসহ আরও দুই শতাধিক মানদণ্ডের সমন্বয়ে মুখ্য ফলাফল উপস্থাপন করা। করোনার আগে কৈশোরকালীন শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা সংকটাময় ছিল। কোভিড-১৯ মহামারির সময় যা আরও গুরুতর হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কৈশোরকালীন এ গুরুতর অবস্থা নীতিনির্ধারক, স্টেকহোল্ডার এবং পরিবারগুলোকে বুঝতে হবে এবং পরিবারের সচেতনতামূলক পদক্ষেপ, জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারণী প্রণয়ন ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির সচেতনতামূলক প্রচারের মাধ্যমে এ গুরুতর সংকট প্রতিরোধ করা সম্ভব।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news