মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা: জিএম কাদের

সোমবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।

মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা: জিএম কাদের

প্রথম নিউজ, অনলাইন : বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলছেন, আন্দোলন দমাতে দেদার গ্রেফতার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ মানুষের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা। প্রতিটি আহত, নিহত এবং সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে আমরা বিচার চাচ্ছি। সোমবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক ছয় ছাত্রনেতা মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ এবং নুসরাত তাবাসসুমকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসাবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সহিংসভাবে মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না। 

বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েকদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি এ ঘটনায় তাদের স্বজনদের মধ্যে মারাত্মক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। আবার ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা। সাধারণ ছাত্ররা মনে করছে, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের এবং তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না। 

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছে। হেলিকপ্টার এবং বহুতলবিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমান গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। যে কারণে বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মাঝেতে খেলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার ঘরের ভেতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে। একইভাবে অসংখ্য নিরীহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো এ ধরনের গুলিবর্ষণের উদ্দেশ্য কী ছিল? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কি সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী- তারা কি সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।