মাগুরায় ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ

মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ ও সদস্যসচিব আকতার হোসেনকে ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।

মাগুরায় ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ
মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ ও সদস্যসচিব আকতার হোসেন

প্রথম নিউজ, মাগুরা: মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহমেদ ও সদস্যসচিব আকতার হোসেনকে ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ওই দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মাগুরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে জেলার শীর্ষস্থানীয় দুই নেতাকে গ্রেপ্তার ও নেতা–কর্মীদের হয়রানির কারণে গতকাল কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাগুরায় বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ভেস্তে গেছে।

জেলা বিএনপির গ্রেপ্তার দুই নেতার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার পাকা কাঞ্চনপুরের নিজ বাড়ি থেকে আলী আহমেদকে এবং এর আধা ঘণ্টা পর শহরের স্টেডিয়ামপাড়ার নিজ বাসা থেকে আকতার হোসেনকে আটক করে সদর থানার পুলিশ।

জেলা বিএনপির নেতারা বলেন, গত ২৭ আগস্ট শহরের ভায়না মোড়ে বিএনপির দলীয় কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা চালান। এতে বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় বিএনপির নেতা–কর্মীদের একাধিক মোটরসাইকেল, দলীয় কার্যালয় ও আশপাশের কয়েকটি দোকানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করেন হামলাকারী ব্যক্তিরা। এ ঘটনার পরদিন ২৮ আগস্ট মাগুরা আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা (২৩) উল্টো বিএনপির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় বিএনপির ৩৬ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখসহ ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ওই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে আলী আহমেদ ও আকতার হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহেদ হাসান টগর  বলেন, ‘যে মামলায় দলের শীর্ষ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেটা পুরো একটা মিথ্যা ঘটনা। আমাদের সমাবেশে হামলা হয়েছে, আমাদের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে, আমাদের নেতা–কর্মীদের মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। যারা হামলা করেছে, তারাই আবার মামলা দিয়েছে। গত কয়েক মাসে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি এলেই এই মিথ্যা মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে পুলিশ। শীর্ষ ২ নেতাসহ এই মামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৫ জন বিএনপি নেতাকে কারাবরণ করতে হয়েছে।

এদিকে শীর্ষ দুই নেতাকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল মাগুরায় বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়নি। বেলা তিনটায় শহরের ইসলামপুরপাড়ায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ বিক্ষোভ হওয়ার কথা ছিল। তবে ওই সময় বিএনপি কার্যালয়ে দলের নেতা–কর্মীদের দেখা যায়নি। এ সময় কার্যালয়ের বাইরে পুলিশের একটি দলকে সতর্ক অবস্থায় দেখা যায়। একই সময়ে ভায়না জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের পাশেও পুলিশ মোতায়েন ছিল। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফারুকুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ আমাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি করতে দেয়নি। মিথ্যা মামলায় গভীর রাতে দলের শীর্ষ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। কয়েক দিন ধরেই পুলিশ আমাদের নেতা–কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করছে। পুলিশের এই নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। তবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি আমরা যেকোনো সময় পালন করব।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ কামরুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের প্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গেও এর কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিয়েছে, এ অভিযোগও সত্য নয়।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom