ভারতে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে দোকানে জনতার হামলা

ভারতে এক নারীকে অপহরণের অভিযোগে দোকানে জনতার হামলা

প্রথম নিউজ, অনলাইন:উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে ইন্দিরাপুরম থানা এলাকার একটি দোকানে ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। সোমবার (২৭ মে) রাতের দিকে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের মতে, ২৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তির দোকানে হামলা চালানো হয়, তিনি (২৫ মে) এক তরুণীকে অপহরণ ও বেআইনিভাবে আটক রাখার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলার অভিযুক্ত।

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও ২২ বছর বয়সী ওই তরুণী দুজনেই ভিন্ন সম্প্রদায়ের হলেও তারা একে অপরকে আগে থেকেই চিনতেন।
তরুণীর পরিবারের অভিযোগে ২৫ মে রাত ১২টা ২২ মিনিটে এক এফআইআর দায়ের করা হয়। ঘটনার পরদিন ২৬ মে রাতে একই এলাকায় উত্তেজিত জনতা জড়ো হয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করে। এরপর তারা ওই ব্যক্তির দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

ইন্দিরাপুরম সার্কেলের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসিপি) অভিষেক শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়েছি এবং দোকানে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
তদন্ত চলছে।’

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি একটি দোকান ভাড়া দিয়েছিলেন, যেখানে ওই তরুণী একটি বিউটি পার্লার চালাতেন। অভিযুক্তের নিজস্ব দোকানও কাছেই ছিল। তরুণীর বাবার অভিযোগ, ২৪ মে সন্ধ্যা ৬টার দিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার স্ত্রীর গলায় থাকা চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং তার মেয়েকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা মামলার ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই গাজিয়াবাদ থেকে ওই তরুণী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তরুণীকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং অভিযুক্তকে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ অনুযায়ী গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। যদিও তাকে তরুণীর বাবার এফআইআরে উল্লেখিত ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে ওই তরুণী দাবি করেন, তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৯ বছর ধরে চেনেন এবং তারা তিন বছর আগে বিয়ে করেছেন।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, এই ভিডিওগুলো মামলার প্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হবে না।

এসিপি অভিষেক শ্রীবাস্তব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ওই তরুণীর ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কোনো আনুষ্ঠানিক জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। ভিডিওর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তার আদালতে দেওয়া বিবৃতি। তিনি যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে তখনই এফআইআরে উল্লিখিত ধারাগুলো প্রয়োগ করা হবে।’

পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকা বর্তমানে শান্ত রয়েছে, তবে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কায় পুলিশ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে।