বাড়তি দামেই মাছ-মাংস-ডিম, সবজিও চড়া

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা আর এজিবি কলোনি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম এখনো বাড়তি।

বাড়তি দামেই মাছ-মাংস-ডিম, সবজিও চড়া

প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশে জ্বালানি তেল আর ডলারের দাম বাড়ার পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি হয়েছে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের। সেগুলোর দাম এখন আর কমার কোনো লক্ষণ নেই। যে কারণে বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের অস্বস্তি কাটছে না।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা আর এজিবি কলোনি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চালের দাম এখনো বাড়তি। কমেনি ডিম, মাছ, ব্রয়লার মুরগির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে গরুর মাংসের দাম ২০ টাকা বেড়েছে। মুদি বাজারে বেড়েছে গুঁড়া দুধের দাম। চড়া সবজির বাজারও।

মোটা চাল (স্বর্না ও চায়না ইরি) বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। মাঝারি মানের চালের (বিআর ২৮) দাম কেজিপ্রতি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। সরু চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের বিক্রি বেশি। ভালো মানের মিনিকেট ৭৫ টাকা আর নাজিরশাইল কিনতে হলে গুনতে হবে প্রতি কেজিতে ৮৫ টাকা।

চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর থেকে সব ধরনের চালে কেজিপ্রতি অন্তত ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে এ সপ্তাহে নতুন করে দাম বাড়েনি। চালের সঙ্গে চড়া আদা-ময়দার দামও। বিশেষত চীন থেকে আমদানি করা আদা ও রসুন কিনতে হচ্ছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে। প্রতি কেজি আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা আর রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে।

শান্তিনগর বাজারে আসা কলেজ শিক্ষক ফরিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্যে মানুষ নাজেহাল। কোনো পণ্যের দাম কমছে না, শুধু বাড়ছে আর বাড়ছেই। মধ্যবিত্তদের জন্য এখন আতঙ্কের জায়গা বাজার। যারা গোনা টাকা দিয়ে সংসার চালান তারা আর হিসাব-নিকাশ মেলাতে পারছেন না।

বিশ্ববাজারে গমের দাম কমলে দেশের বাজারে আটার দাম এখনো বাড়তি। খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৩ থেকে ৫৫ টাকায়। প্যাকেটজাত আটার দুই কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকায়। খোলা ময়দা কেজিপ্রতি রাখা হচ্ছে ৬০ টাকার কাছাকাছি। বাজারে এখনো মোটা ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়। সরু দানা ডালের দাম কেজিপ্রতি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববাজারে দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পাম তেল ও চিনির দাম কমিয়ে নির্ধারণ করলেও বাজারে সেগুলো এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরকার খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করেছে কেজিপ্রতি ৮৪ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে গতকালও খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ৮৭ টাকা কেজি দরে। যা খুচরায় এখনো ৯০ টাকা। প্যাকেটজাত চিনি কেজিপ্রতি ৯৫ টাকা দর বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। বাজারে নতুন দামের প্যাকেটজাত চিনি এখনো আসেনি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এদিন সকালে ঢাকার বাজারে সবজির দামও বেশ চড়া দেখা গেছে। পেঁপে ছাড়া কোনো সবজির কেজি ৫০ টাকার কমে মিলছে না। মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন, করলা, কাকরোল, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। নতুন শিম ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা। কচুর মুখি, কচুর লতি, ঝিঙে, ধুন্ধল ও পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা আর প্রতিটি বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। শীতের আগাম সবজির মধ্যে বাজারে ওঠা মুলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।

খুচরা বাজারে এখনো প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে গুঁড়া দুধের দাম। বিক্রেতারা জানান, চলতি বছর এর আগে তিন দফা দাম বেড়েছিল এ নিত্যপণ্যটির। এখন আবারও বাড়ানো হয়েছে। এ দফায় দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলো ব্র্যান্ড অনুযায়ী প্রতি কেজি দুধের দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা বাড়িয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানিভেদে দুধের দাম ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন প্রতি কেজি ডানো ৮৫০ টাকা, ডিপ্লোমা ৮৪০ টাকা, ফ্রেশ ৭১০ টাকা ও মার্কস ৭৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom