বড় একটা আন্দোলন হয়েছে, অভ্যুত্থান হয়নি: সেলিমা রহমান

রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং এখন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। 

বড় একটা আন্দোলন হয়েছে, অভ্যুত্থান হয়নি: সেলিমা রহমান

প্রথম নিউজ, অনলাইন: একদফা দাবিতে বিরোধীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করেছি। তাদের যতটুকু সামর্থ্য ছিলো তারা সেভাবে এসেছে। কিন্তু আমরা সমগ্র জনগণকে, যেটাকে আমরা গণঅভ্যুত্থান বলতে পারি-সেটা কিন্তু আমরা করতে পারিনি। সেজন্য এটাকে আমরা অভ্যুত্থান বলবো না। কিন্তু বড় একটা আন্দোলন হয়েছে। রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং এখন’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। 

আন্দোলন প্রসঙ্গে সেলিমা রহমান বলেন, আমরা সেটা করতে পারি নাই পরিবেশ ও নানা কারণে। এখানে দুটি সংকট ছিলো, একটা হলো সংবিধান। আরেকটি হলো আইনের সংকট। এই দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্যে আমরা কিন্তু এই সংকটগুলো পার করতে পারি নাই। এই সংকট আমাদের মধ্যে ছিলো। তিনি বলেন, আমরা যে যেখানেই থাকি না কেনো আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই ঐক্য কিন্তু ভাঙতে পারে নাই। অনেক চেষ্টা করেও করতে পারে নাই। ঐক্য হচ্ছে বড় জিনিস। যখন বিভক্তি আসবে তখন সেই আন্দোলন ব্যর্থ হবে। এখনো আমাদের আন্দোলন চলমান। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আর কোথাও কোথাও আমাদের ভুল ছিলো। কারণ আমরা তো বলতে পারি না যে, একেবারে সবই আমরা ঠিক করেছি। 

সেলিমা রহমান আরও বলেন, আরেকটি ছিলো, আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির সংকট। আমাদের কিন্তু এটা বড় একটা ভ্রান্ত ধারণা, যাই বলেন। আমি বলবো না যে, এটা রাজনীতিবিদদের মধ্যে ছিলো। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভিতরে এটা ছিলো। আন্তর্জাতিক রাজনীতির যে আসল খেলা, সেটা আমাদের সাধারণ মানুষ বুঝে নাই। সেখানে তাদেরকে আমরা বোঝাতে পারি নাই। এটা আমাদের ব্যর্থতা। 

তিনি আরও বলেন, আমরা জানতাম আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে গেছে। কারণ রুখে দাঁড়াবার সেই অস্ত্র আমাদের হাতে ছিলো না। আমরা আন্দোলনে কি করবো, কি সিদ্ধান্ত নিবো। কারণ যখন আপনার উপরে আক্রমণ হবে তখন তো আপনাকে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এরমধ্যে আমরা যে লক্ষ্যে কাজ করছি, জনগণের অধিকার, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। তখন কিন্তু আমরা সেই কাজটা পারতাম না। এখানে আমরা কিছুটা ব্যর্থ হয়েছি। আমরা বলবো না যে, আমরা জিতেছি। 

বিএনপির  এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা এতো বড় একটা আন্দোলন করলাম, সত্য কথা বলতে যে, আমরা নিজেরাও প্রত্যাশা করিনি। বিশেষ করে আমরা যখন দেখলাম যে, আমরা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছি- যেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পর্যন্ত ভোট দিতে যায় নাই। অর্থাৎ ৯৫ শতাংশ লোক আমাদেরকে সমর্থন দিয়েছে। পরবর্তীতে এটার যথার্থ ফল ও রূপ জনগণের সামনে উপস্থিত করতে পারি নাই।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চালনায় সেমিনারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।