বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় গত বছরে বাস্তুচ্যুত ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষ
দক্ষিণ এশিয়ায় গত বছরে মোট যে পরিমাণ মানুষ আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তার মধ্যে বন্যায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন শতকরা ৯০ ভাগ।
প্রথম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২২ সালে ঘূর্ণিঝড় ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এক কোটি ২৫ লাখ মানুষ। বন্যায় এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। জেনেভাভিত্তিক ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার (আইডিএমসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় গত বছরে মোট যে পরিমাণ মানুষ আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তার মধ্যে বন্যায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন শতকরা ৯০ ভাগ।
গত বছর কর্মকর্তারা মৌসুমী বৃষ্টিপাত সম্পর্কে ধারণা দেয়ার আগেই বন্যা দেখা দেয় বাংলাদেশ ও ভারতে। আইডিএমসি বলেছে, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তানে যে বিপর্যয়ের কথা বলা হয়েছে তা শুধু মধ্যম থেকে বড় মাত্রার ইভেন্টগুলোর জন্য। এর অর্থ এর ভিতর অল্প মাত্রার বিপর্যয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ২০২১ সালে কম তীব্র ছিল বর্ষা মৌসুম। ধ্বংসাত্মক ঝড়ও ছিল কম। এ সময়ে ৯৯ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বর্ষা মৌসুমের চেয়ে এই সংখ্যা তিন চতুর্থাংশ বেশি।
মে মাসে বঙ্গোপসাগরে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এতে ১৮ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। যদিও এই সংখ্যা এর আগের বছরের তুলনায় কম, তবু ধারণা করা হচ্ছে প্রতি দুই বা তিন বছরে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে তীব্র শক্তিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়। এ অবস্থায় বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। কারণ, প্রতি বছর এসব বিপর্যয় একই এলাকায় আঘাত হানে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস খুলনা ও বরিশাল বিভাগে আঘাত হানে। সেই একই এলাকায় ২০২০ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে বাস্তুচ্যুত হন ২৫ লাখ মানুষ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আম্ফানের আঘাতে শুধু খুলনায় বাস্তুচ্যুত হন কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ। এসব তথ্য প্রকাশ করেছে আইডিএমসি।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, আগের বছরের তুলনায় ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ। এই সংখ্যা তিন কোটি ২৬ লাখ।