বর্তমান সরকার দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে: জামায়াত
শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল) সংসদীয় আসনের থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবু তাহের মো. মা’ছুম বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রক্ষাকবচ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাতিল করা হয়েছে। হরণ করা হয়েছে জনগণের ভোটাধিকার। সেজন্যই দেশ এখন মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। আওয়ামী সরকার আগামীতে আবারো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চায়। কিন্তু সচেতন জনগণ তাদের সে স্বপ্ন কখনোই বাস্তবায়িত হতে দেবে না। সরকারকে হঠকারিতা পরিহার করে অবিলম্বে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান তিনি। শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল) সংসদীয় আসনের থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসা। আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান, মো. শহীদুল্লাহ ও শাহ্ আলম তুহিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি আসাদুজ্জামান ও উত্তরের সভাপতি সালাহ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন অঞ্চল টিম সদস্য আলাউদ্দিন মোল্লা, মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, আব্দুল মতিন খান, রেজাউল করিম ও ডা. আহসান হাবীব প্রমুখ।
এ সময় সরকার বিরোধী চলমান গণআন্দোলন আরও জোরদার করতে নেতা-কর্মীদের ময়দানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল। মাওলানা মা’ছুম বলেন, ঢাকা মহানগরীর মিরপুর-কাফরুল সংসদীয় আসনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এ আসনে ডা. ফিকুর রহমান খুবই জনপ্রিয় ব্যক্তি। আমীরে জামায়াত সব সময় এই সংসদীয় আসনের জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। যেকোনো ক্রান্তিকাল ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে তিনি তাদের সহযোগিতার জন্য মুক্ত হস্তে এগিয়ে এসেছেন। তিনি এই আসনের উন্নয়ন পরিকল্পনাও জনগণের কাছে উপস্থাপন করেছেন। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, আমীরে জামায়াত নির্বাচনে প্রার্থী হলেও তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সরকার রাতের অন্ধকারে তার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে। জুলুমবাজ সরকার তাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার জন্য সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতন পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ সকল শীর্ষনেতাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে- অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপে সরকার এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মার্কিন ভিসানীতি কার্যকরের পর তারা এখন আবোল-তাবোল বকতে শুরু করেছে। তারা আবারও পাতানো ও ষড়যন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। কিন্তু সচেতন জনতা তাদের সে ষড়যন্ত্র কোনভাবেই সফল ও সার্থক হতে দেবে না বরং ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে রুখে দেবে। আব্দুুর রহমান মূসা বলেন, ভোট জনগণের মৌলিক অধিকার। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাই দেশ ও জাতির প্রত্যাশা। জামায়াতে ইসলামী আন্দোলনের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করেই গণমানুষের সেই কাঙ্ক্ষিত দাবি পূরণে বদ্ধপরিকর। সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফখরুদ্দীন মানিক বলেন, নৈশ ভোটের সরকারকে জনগণ আর কোনোভাবেই ভোট চুরির সুযোগ দেবে না এবং কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায় করেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বে।